আজ বৃহস্পতিবার | ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ৩:১০
ডেস্কঃ- উপজেলা চত্বরে লাগানো ফুল গাছের পাতা খাওয়ায় ছাগলকে আটকে রেখে তার মালিকের অনুপস্থিতিতে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এমনই অভিযোগ উঠেছে বগুড়া আদমদীঘি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সীমা শারমিনের বিরুদ্ধে।
শুধু তাই নয়, ছাগলের মালিক এই জরিমানা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ছাগলটিকে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করে জরিমানার টাকা আদায়ের অভিযোগ করেছেন ঐ ছাগলের মালিক।
ছাগলের মালিক সাহারা বেগম (৪৯) উপজেলা পরিষদের পাশেই থাকেন। তার স্বামী ঢাকায় সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করেন। দুই ছেলেও থাকেন বাইরে।
সাহারা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গত ১৭ মে থেকে ছাগলটি খুঁজে পাচ্ছিলাম না। পরে জানতে পারি ছাগলটি উপজেলায় আটকে রাখা হয়েছে। সেদিনই আমি ছাগল আনতে গেলে ইউএনও আমার সঙ্গে দেখা করেননি। তিন দিন পরে ইউএনওর কাজের মেয়ে আমাকে খবর দেয় যে আমার দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। দুই হাজার টাকা দিয়ে আমি যেন ছাগল নিয়ে আসি।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুই হাজার টাকা দেওয়ার সামর্থ্য আমার নেই। আমি এর পরে বহুবার উপজেলায় গেছি কিন্তু আনসার সদস্যরা আমাকে বলেছেন যে স্যার (ইউএনও সীমা শারমিন) ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুই হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। টাকা দিয়ে ছাগল নিয়ে যেতে হবে। এরপরেও আমি গেছি, কিন্তু আমাকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস থেকে।’
‘আমার আর্থিক অবস্থা ভালো না। ছাগল ফেরত পাওয়ার আশায় আমি উপজেলা চেয়ারম্যানের গেলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন যে ছাগল ফেরত নিয়ে দিবেন,’ যোগ করেন সাহারা বেগম।
আদমদীঘি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম রাজু খান বলেন, ‘ওই ছাগলের মালিক অভিযোগ করেছেন যে তার ছাগল গত কয়েকদিন ধরে আটকে রেখেছে।’
সাহারা বেগম বলেন, ‘পরে আমি জানতে পারি যে স্থানীয় একজনের কাছে ছাগলটি পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। আমি গরিব মানুষ। ছাগল ফিরে না পেলে কিছুই করার সাধ্য নাই। আমি শুধু আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাগলটি সরকারি খড়ে দিলে ৫০ বা ১০০ টাকা দিয়ে ফেরত আনতে পারতাম। কিন্তু জরিমানা করেছে দুই হাজার টাকা। এত টাকা কোথায় থেকে দেব?’
জরিমানা করার সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন কি না জানতে চাইলে সাহারা বেগম বলেন, ‘আমার সামনে কোনো জরিমানা করা হয়নি।’
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক সাহারা বেগমের এক প্রতিবেশী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সাহারা বেগমের ছাগলটি এর আগেও উপজেলা পরিষদের গাছ খেয়েছে কয়েকবার। উপজেলা পরিষদ থেকে তাকে বেশ কয়েকবার সর্তক করা হয়েছে। সম্প্রতি তার ছাগলটি আটকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। জরিমানার টাকা পরিশোধ করে ছাগলটি আনতে খবরও দেওয়া হয়েছিল সাহারা বেগমকে। কিন্তু তিনি এতো টাকা দিয়ে ছাগল নিতে পারবেন না বলে জানান। এরপরে কী হয়েছে তা জানি না।’
এ বিষয়ে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কল ধরেননি। একাধিকবার খুদে বার্তা দিয়ে কল ধরার অনুরোধ করলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি। আজ বৃহস্পতিবার সকালে একটি খুদে বার্তায় ইউএনও জানান, তিনি একটি মিটিংয়ে আছেন, পরে কথা বলবেন। তবে, এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত তিনি কথা বলেননি।
এ বিষয়ে বগুড়া জেলা প্রশাসক জিয়াউল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘যেকোনো বিষয় গণ উপদ্রব সৃষ্টি করলে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়ার বিধান আছে। আমি যতটুকু শুনেছি, ছাগল মালিকের উপস্থিতেই এই জরিমানা করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।’
মালিকের অনুপস্থিতিতে ছাগল বিক্রি করে জরিমানা আদায় করা যায় কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ছাগলটি বিক্রি করা হয়েছে কি না সেটা আমার জানা নেই। তবে কেউ জরিমানার টাকা দিতে না পারলে জব্দকৃত মালামাল বিক্রি করে সেই টাকা আদায়ের বিধান আছে।’
সূত্রঃ ডেইলি স্টার
Dhaka, Bangladesh বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:38 AM |
Zuhr | 11:59 AM |
Asr | 2:59 PM |
Magrib | 5:19 PM |
Isha | 6:40 PM |