গ্রেফতারকৃতরা হলো মোঃ শাহাদাত হোসেন, মোঃ সাইফুল ইসলাম জীবন, মোঃ রুবেল আকন, মোঃ মাসুম, মোঃ মনির হোসেন, মোঃ রবিন ওরফে হৃদয় সরদার, মোঃ শাহিন হাওলাদার, মোঃ আরিফ হোসেন, মোঃ সোহাগ ফরাজী, মোঃ নাজিম ও মোঃ কামাল হোসেন।
২৯ জুলাই, ২০২১ তারিখ রাত হতে ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানীর নিউমার্কেট থানার এলিফ্যান্ট রোড ও তেজগাঁও থানার সাতরাস্তা মোড় এলাকা হতে তাদেরকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম। এসময় তাদের হেফাজত হতে উক্ত কাপড় বহনের কাজে ব্যবহৃত ৬টি কার্ভাড ভ্যান জব্দ করা হয়।
আজ শনিবার বেলা ১১:৩০ টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার, বিপিএম (বার)।
ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, বন্ড সুবিধায় আমদানিকৃত পণ্য দেশের কিছু কুচক্রি ব্যবসায়ী চোরাই পথে খোলাবাজারে বিক্রির বিষয় তথ্য পায় গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। এ তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম রাজধানীতে অভিযান করে এ চক্রের ১১ সদস্যকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত হতে বন্ড সুবিধায় আমদানী করা ৫০৮ রোল চোরাই পর্দার কাপড় (যার ওজন ১৮৭৫০ কেজি) উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ২৭ লাখ টাকা। এছাড়াও চোরাচালানের কাজে ব্যবহৃত ০৬ টি কাভার্ডভ্যান জব্ধ করা হয় ।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা বন্ড সুবিধায় চীন হতে শুল্কমুক্ত এসব কাপড় আমদানি করে চট্টগ্রাম পোর্ট হতে ময়মনসিংহ(ভালুকা) হয়ে রাজধানীর সাতরাস্তা স্ট্যান্ড ও এ্যালিফেন্ট রোড এলাকায় নিয়ে আসে। এসব কাপড় অতিরিক্ত লাভের উদ্দেশ্যে সুবিধামত সময়ে চোরাইপথে খোলা বাজারে বিক্রি করতো। এতে করে সরকার প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। এছাড়াও দেশের স্পিনিং, ওয়েবিং, ডাইং ও ফিনিসিং প্রতিষ্ঠান হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। তারা উৎপাদিত পন্যের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় প্রতিযোগিতার বাজারে ক্রমান্বয়ে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে। এতে প্রকৃত ব্যবসায়ী ও শিল্প প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার প্রতি অর্থ বছরে বন্ডের মাধ্যমে ৭৩ হাজার কোটি টাকার বেশী শুল্ক ফ্রি সুবিধা প্রদান করে থাকে। প্রচলিত আইন অনুযায়ী বন্ডের লাইন্সেস ব্যবহারের প্রধান শর্ত হলো বন্ডের পণ্য রপ্তানী ছাড়া দেশের অভ্যন্তরে কোন কাজে ব্যবহার করা যাবে না। যদি কেউ বন্ড সুবিধায় আমদানিকৃত পণ্য বিক্রি করতে চায় (সর্বোচ্চ ২০%) সেক্ষেত্রে বন্ড কমিশনারেট থেকে অনুমতি পত্র সংগ্রহ ও বাণিজ্যিক শুল্ক প্রদান করতে হবে।
এ সংক্রান্তে তাদের বিরুদ্ধে নিউ মার্কেট থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
এধরণের অপরাধ প্রতিরোধে কাস্টমসের পাশাপাশি ডিবি পুলিশও কাজ করছে বলে জানান ডিবির এ কর্মকর্তা।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের ডিসি রাজীব আল মাসুদ, বিপিএম এর দিকনির্দেশনায়, অতিঃ উপ পুলিশ কমিশনার হাসান আরাফাত, বিপিএম, পিপিএম এর তত্ত্বাবধানে সহকারী পুলিশ কমিশনার মধুসূদন দাস এর নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ী চুরি প্রতিরোধ টিম উক্ত অভিযানটি পরিচালনা করেন।