আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ৯:৪৫
মুনসী মো: সাজেদুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এগিয়ে রয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। বিভিন্ন তথ্য জরিপে বলা যায়, বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর সেই প্রেসিডেন্টটি হতে যাচ্ছেন জো বাইডেন। তবে ভোটের মাঠের সেই ফলাফল প্রত্যাখান করেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাইডেনের বিজয় ঠেকাতে নতুন ‘ট্রাম্পকার্ড’ চাল দিতে চান তিনি। কোনো সঠিক তথ্য ছাড়াই বিরোধী পক্ষের প্রতি নির্বাচনী কারচুপির তুলেছেন ট্রাম্প। কয়েক রাজ্যের চূড়ান্ত ভোটগণনার আগেই নিজেকে আবারও প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন তিনি। নিজের পরাজয় হয়তো বুঝতে পেরে হুমকিও দিচ্ছেন- আদালতে যাবেন তিনি। তবে হাল ছাড়েননি জো বাইডেনও। ধৈষ্য ধরতে বললেন দলীয় সমথকদের, বিজয় আমাদেরই হবে তবে, ‘খেলা এখনো অনেক বাকি’।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে নানা প্রশ্ন এখন সবার মাঝে। ৩ নভেম্বর মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত বিজয়ী হননি কোনো প্রার্থীই। সর্বশেষ পরিস্থিতিতে জো বাইডেনের বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে। এমন অবস্থায় মিলিয়ন মিলিয়ন ভোট গণনা বাকি থাকতেই নিজেকে বিজয়ী দাবি করে নির্বাচন বন্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। ফলে ‘যুক্তরাষ্ট্রে সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টি করতে পারেন ট্রাম্প’-এমন প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যানেগ্রেট ক্রাম্প-কারেনবাউয়ার।
ট্রাম্পের আগাম বিজয় ঘোষণায় ব্যাপক সমালোচনা উঠেছে মিডিয়ায়, তাঁর নিজ দলের ভেতর এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে।
মিডিয়ায় তার এমন ঘোষণাকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। রাশিয়ান টিভিতে এই নির্বাচনকে ‘উন্মাদনা’ বলে আখ্যা দেয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই নির্বাচনের ফলে কি সেখানে রাজনৈতিক সংস্কৃতিরও পরিবর্তন ঘটছে- এমনও আলোচনাও চলছে সর্বত্র। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে, রাজ্যে শুরু হয়েছে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ। তাতে ধস্তাধস্তি হয়েছে। আগেভাগেই ব্যবসায়ী নেতারা সতর্কতা জারি করেছেন। দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। সব মিলে এক অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে গোটা আমেরিকায়। বেড়েছে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে এমন উদ্বেগ এর আগে কখনও দেখা যায়নি। আছে সহিংসতার আতঙ্কও। যুক্তরাষ্ট্রের এমন অবস্থাকে বিস্ফোরণমূলক বলে আখ্যায়িত করেছেন জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ট্রাম্প সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি করতে পারেন। রুশ গণমাধ্যম এ নির্বাচনকে ‘পাগলামি’ বলে আখ্যায়িত করেছে।
মঙ্গলবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ও রাজ্যে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে কয়েকজনকে। কিন্তু চূড়ান্ত ফল নিশ্চিত হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রে স্মরণকালে এমনটা হয়নি। নানা জটিলতায় এবার নির্বাচনের ফল বিলম্বিত হচ্ছে। ফলে রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা উভয় শিবিরে। বিশ্ব তাকিয়ে আমেরিকার দিকে। এরই মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তর গণতন্ত্রের এ দেশে নির্বাচনের ফল নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। যদি সত্যি তাই হয়, তাহলে এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল আদালত থেকে নির্ধারিত হতে পারে! কিন্তু কেন? এমন জিজ্ঞাসা সারাবিশ্বে।
ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংকটে সংকটে যে দেশটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নাড়া খেয়েছে, সেই যুক্তরাষ্ট্র বুধবার সকালেই আইনগত শোডাউনের দিকে ধাবিত হতে যাচ্ছে। ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী জো বাইডেনের জয়ের পথ খোলা থাকা সত্ত্বেও ‘অপরিপক্ব’ভাবে নিজের বিজয় ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প।
৬টি রাজ্যে ভোট গণনা বাকি থাকতেই বিজয় ঘোষণা করেছেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তার এ ঘোষণাকে ‘ফলসলি’ বলে মন্তব্য করেছে আন্তর্জাতিক মিডিয়া। তাতে ৬টি রাজ্যে ভোট গণনা বাকি থাকতে তার বিজয় ঘোষণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন নিজে। বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ধারালো ছুরির প্রান্তসীমায় অবস্থান করছে। ট্রাম্পের ওই ঘোষণাকে বিরোধী ডেমোক্রেটরা ‘গর্হিত, নজিরবিহীন এবং ত্রুটিপূর্ণ’ বলে অভিহিত করেছে। এই ৬টি রাজ্যের ভোটের ওপর নির্ভর করছে হোয়াইট হাউসের চাবি কার হাতে যাবে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সেখানে গণতান্ত্রিক যে প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয় তেমনটা বিশ্বের খুব কম দেশেই হয়।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জো বাইডেন ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটে ২৬৪টিতে জয় পেয়েছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ২১৪টি ভোট। বিজয়ী হতে হলে একজন প্রার্থীকে কমপক্ষে ২৭০টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেতে হয়। সেই হিসাবে বাইডেনকে পেতে হবে আরো ৬টি ভোট। ট্রাম্পকে পেতে হবে ৫৬ ভোট।
এই অবস্থায় ফল ঘোষণার বাকি আছে ৬টি রাজ্যে। এগুলো হলো উইসকনসিন, মিশিগান, পেনসিলভ্যানিয়া, ত মেইনে, নর্থ ক্যারোলাইনা ও জর্জিয়া। এসব রাজ্যে ভোট বন্ধের জন্য সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। লাখ লাখ ভোট গণনা বাকি থাকতেই তিনি বিজয় ঘোষণা করেছেন। ‘ফলস্লি’ তিনি এমন ঘোষণা দিয়েছেন বলে সংবাদ শিরোনাম করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এখন ফল আদালতেই নাকি ভোটের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হবে তাও অনিশ্চিত।
উইসকনসিনে জো বাইডেন এগিয়ে আছেন সামান্য ভোটের ব্যবধানে। সেখানে বাইডেন পেয়েছেন শতকরা ৪৯.৪ ভাগ ভোট। ট্রাম্প পেয়েছেন শতকরা ৪৯.১ ভাগ ভোট। এ রাজ্যে মোট ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট ১০টি। নর্থ ক্যারোলাইনায় জো বাইডেন ভোট পেয়েছেন শতকরা ৪৮.৭ ভাগ। ট্রাম্প পেয়েছেন ৫০.১ ভাগ। এখানে আছে ১৫টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট। জর্জিয়াতে বাইডেন পেয়েছেন ৪৮.৩ ভাগ ভোট। ট্রাম্প পেয়েছেন ৫০.৫ ভাগ। এখানে ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট আছে ১৬টি। তবে মেইনে বিজয়ী হয়েছেন বাইডেন। সেখানে আছে ৪টি কলেজিয়েট ভোট। গুরুত্বপূর্ণ মিশিগানে চমক সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন বাইডেন। প্রথমদিকে তিনি এ রাজ্যে পিছিয়ে থাকলেও পরে এগিয়ে গেছেন। তিনি পেয়েছেন শতকরা ৪৯.৪ ভাগ ভোট। ট্রাম্প পেয়েছেন ৪৯.১ ভাগ। ধারণা করা হচ্ছে এই ব্যবধান আরো বাড়বে। কারণ, মেইলে দেয়া ভোট বিলম্বে গণনা শুরু হয়েছে এবং এসব ভোটের বেশির ভাগই ডেমোক্রেটদের। ফলে শুধু মিশিগান নয়, অন্য রাজ্যগুলোতেও বাজিমাত করতে পারেন জো বাইডেন।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |