আজ মঙ্গলবার | ১৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | ভোর ৫:১৪
বিডি দিনকাল ডেস্কঃ- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ৫ম কারাবন্দী দিবস উপলক্ষে আজ এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন- “আজ ৮ ফেব্রুয়ারী, বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক দিন। ২০১৮ সালের এই দিনে প্রতিহিংসাপরায়ণ আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ১/১১’র জরুরী অবস্থায় সরকারের বিরাজনীতিকরনের মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশী সাজা দিয়ে অন্যায়ভাবে আটক রেখেছে। শুধু ফরমায়েশী সাজা দিয়ে তাঁকে আটক রাখা হয় নাই, তাঁর প্রাপ্য জামিনের অধিকার কেড়ে নিয়ে ২৫ মাস অন্যায়ভাবে কারাগারে বন্দী রেখেছিল। বন্দী থাকা অবস্থায় সু-চিকিৎসার অভাবে তার অসুস্থতা আরও তীব্র হয় এবং তাঁর জীবন হুমকীর মুখে পড়ে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবীতে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে উঠে। এই আন্দোলনকেও দমন করতে সরকার নিষ্ঠুর নির্যাতন চালায়। দেশ-বিদেশে সর্বত্র বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবী সোচ্চার হয়। আইনগতভাবে বার বার তার জামিনের আবেদন করা হলেও সরকারের হস্তক্ষেপে জামিন দেওয়া হয়নি। আইনি লড়াই করতে বিদেশ থেকে আইনজীবী আসতে চাইলেও সরকারের আপত্তির কারণে তাকে আসতে দেয়া হয় নাই। পরবর্তীতে বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে শর্ত সাপেক্ষে সরকার তাঁর সাজা ৬ মাসের জন্য স্থগিত করে তাঁকে প্রকারান্তরে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। তাঁর উন্নত, উপযুক্ত সু-চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকরা তাঁকে বিদেশে উন্নত বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানোর সুপারিশ করলেও, সরকার তাঁকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেয় নাই। এসব ঘটনায় দিবালোকের মত সত্য প্রমানিত হয় যে, সরকারের অগণতান্ত্রিক, গণবিরোধী, আইন পরিপন্থি কার্যকলাপ, দুর্নীতি, লুটপাট, ভোটের নামে প্রহসন নির্বিঘেœ চালিয়ে যেতে ফ্যাসিবাদী সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্যই ফরমায়েশী সাজা দিয়ে, তাঁর সকল আইনগত অধিকার কেড়ে নিয়ে তাঁকে আটক করে রেখেছে। অপরাধ না করেও ফ্যাসিবাদী সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে হেয় প্রতিপন্ন ও জনমতকে বিভ্রান্ত করতে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে, প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। কিন্তু জনগণ জানেন ও বিশ^াস করেন তাদের প্রিয় নেত্রী কোন অপরাধ করেন নাই। শুধুমাত্র সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে বেগম খালেদা জিয়ার উপর নির্মম, নিষ্ঠুর জুলুম নেমে এসেছে।
বেগম খালেদা জিয়া জনগণের কল্যাণে, অধিকার আদায়ে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নিরন্তরভাবে লড়াই করে চলেছেন। এজন্য জনগণ তাঁকে ‘দেশনেত্রী’, ‘আপোষহীন নেত্রী’, ‘গণতন্ত্রের মাতা’, বলে অবিহিত করেন। বেগম খালেদা জিয়ার আপোষহীন নেতৃত্বের কারনেই ৯০ দশকে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। একটি সফল গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি, রূপকারও ছিলেন তিনি। স্বৈরাচারের পতনের পর তাঁর হাত ধরেই দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের নবযাত্রা শুরু হয়েছে। ৯০ পরবর্তী অবাধ-সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে জনগণের বিপুল রায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে তিনি স্বৈরাচারের ধ্বংস স্তুপের উপর আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের যাত্রা শুরু করেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বেই সে সময় বিশে^ বাংলাদেশ “ইমার্জিং টাইগার” অর্থাৎ উদীয়মান বাঘ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রনমূক্ত হয়েছিল। ২০০১ সালের নির্বাচনের পরেও তিনি ভূমিধ্বস বিজয় লাভ করে তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি প্রতিকূল পরিবেশ উপেক্ষা করে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের যাত্রা অব্যাহত রাখে। সে সময় অর্থনীতির ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছিল, কৃষি, শিল্প, ব্যবসা বাণিজ্যে এবং প্রবৃদ্ধির হাড় ৭ শতাংশেরও অধিক হয়েছিল। ব্যাপক কর্মসংস্থান, অবৈতনিক নারী শিক্ষা, শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচী, নারীর ক্ষমতায়ন, কারিগরি শিক্ষা, ক্ষুদ্র-কুটির শিল্পের ব্যাপক প্রসার, বৃক্ষরোপন, মৎস্য চাষ, রাস্তাঘাট, ব্রীজ, কালভার্ট এর ব্যাপক উন্নয়ন, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ঘটেছিল। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে তিনি কাজ শুরু করেছিলেন।
বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে বন্দী রাখা মানে গণতন্ত্রকে বন্দী রাখা। সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দী রেখে গণতন্ত্রকে বন্দী রেখেছে। বেগম খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্র আজ যেন সমার্থক। বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি হলে গণতন্ত্রের মুক্তি হবে। গণতন্ত্রের মুক্তি হলেই বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি মিলবে। জনগণ আজ গণতন্ত্র পূনরুদ্ধার সংগ্রামে অবতীর্ণ। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, গণতন্ত্র বিরোধী সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবী সন্নিবেশিত করে ১০ দফা দাবী উপস্থাপন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই ১০ দফা দাবী জনগণের ব্যাপক সমর্থন লাভ করেছে। সরকার এই দাবীকে অগ্রাহ্য করে একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন অব্যাহত রাখতে ষড়যন্ত্র করছে। হত্যা, গুম, খুন, মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার ও ব্যাপক দমন-নিপীড়ন চালিয়ে, মানবাধিকার হরণ করেও ফ্যাসিস্ট সরকার আন্দোলন দমন করতে পারছে না। সকল বাধা অতিক্রম করে আন্দোলন এগিয়ে চলছে দ্রুত গতিতে।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ওপর জেল-জুলুম, নির্মম-নির্যাতন হয়েছে, তার অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। আমি সমগ্র দেশবাসীর পক্ষ থেকে সরকারের এই নির্মম নির্যাতনের তীব্র ধিক্কার জানাই। সরকারের অন্যায় চাপ ও অগণতান্ত্রিক কাজের প্রতি মাথা নত করেন নাই, আপোষ করেন নাই বেগম খালেদা জিয়া। বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা, রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিকে জনবিচ্ছিন্ন সরকার ভয় পায়। এজন্যই তাঁর ওপর এত জুলুম নির্যাতন নেমে এসেছে। তিনি বাংলাদেশের মানুষের সাহসের বাতিঘর। স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্রের ঐক্যের প্রতীক, আশা ভরসার নির্ভরযোগ্য নেত্রী, তিনি মজলুম দেশনেত্রী। বেগম খালেদা জিয়া আমাদের প্রেরণার উৎস। চলমান গণ-আন্দোলন সফল করে তাঁর লালিত স্বপ্ন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সকল শ্রেণী পেশার মানুষের সম্মিলিত সংগ্রাম চলছে।
ইনশাল্লাহ এই সংগ্রাম সফলতার দিকে ধাবিত হচ্ছে, অগণতান্ত্রিক, গণবিরোধী সরকারের পতন ঘটিয়ে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার লালিত স্বপ্ন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে।
আমি অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবী করছি এবং তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবী জানাচ্ছি।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:20 AM |
Sunrise | 6:40 AM |
Zuhr | 12:01 PM |
Asr | 3:02 PM |
Magrib | 5:22 PM |
Isha | 6:43 PM |