আজ বুধবার | ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ৮:০৮
বিডি দিনকাল ডেস্ক : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিদেশি বন্ধু সেজে পার্সেল প্রতারণা করে কোটিপতি হয়েছেন বিপ্লব লস্কর। প্রতারণায় টাকায় কিনেছেন বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি, ফ্ল্যাট, প্লট।
শতাধিক ব্যাংক হিসাব রয়েছে কোটি কোটি টাকা। আত্মগোপনে থেকে শ’ শ’ নারী পুরুষের সঙ্গে প্রতারণা করলেও রেহাই মিলেনি। দেশের বিভিন্ন থানায় শতাধিক মামলা ও ভুক্তভোগীদের করা অভিযোগের ভিত্তিতে বিপ্লব লস্করসহ এই চক্রের মূলহোতাসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় বিদেশি অস্ত্র ও গুলিসহ প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ এটিএম কার্ড, চেক বই, পকেট রাউটার, সাড়ে তিন লাখ জাল টাকা, প্রতারণার মাধ্যমে আয় করা প্রায় সাড়ে ১১ লাখ এবং বিপুল পরিমাণ সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বাংলাদেশি মূলহোতা বিপ্লব লস্কর (৩৪) ও তার সহযোগী সুমন হোসেন ওরফে ইমরান (৩১), মোহসিন হোসেন ওরফে শাওন (৩০), ইমরান হাসান ওরফে ইকবাল (৩০), নাজমুল হক রনি (৩০), মোসা. নুসরাত জাহান (২৪) এবং নাইজেরিয়ান নাগরিক চীডি (৪০), ইম্মানুয়েল(২৬), জন (৩১), আঙ্গোলিনার নাগরিক উইলসন ডা কনসিকাউ (৩৫), ক্যামেরুনের নাগরিক নিগুজেনি পাপিনি (৩২)কে গ্রেপ্তার করা হয়।
গতকাল তাদেরকে রাজধানীর মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের ওয়েব বেজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, দেশি-বিদেশী প্রতারক সদস্যরা বিভিন্ন পন্থায় সাধারণ মানুষের ফেসবুক আইডি, হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর, ই-মেইল সংগ্রহ করে ফেসবুকে ইউএস আর্মি, ইউএস নেভিসহ বিভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করে টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলত। সম্পর্কের একটি পর্যায়ে দামি উপহার স্বর্ণ, মূল্যবান পাথর, হীরা, বিশাল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা, ডলার/ইউরো ইত্যাদি পাঠানোর কথা বলে ফাঁদে ফেলে। এরপর সেগুলো ব্যক্তির নাম ঠিকানা উল্লেখ করে ভুয়া পার্সেলের ছবি পাঠায়। প্রতারিত ব্যক্তিরা সরল বিশ্বাসে পার্সেল গ্রহণের অপেক্ষায় থাকে।
প্রতারক চক্রের কলিং বিভাগে কর্মরত বাংলাদেশী প্রতারকরা বিভিন্ন অপারেটরের নম্বর ব্যবহার করে নিজেকে কাস্টমস অফিসার পরিচয় দিয়ে জানায়, কিং এক্সপ্রেস সার্ভিস থেকে একটি পার্সেল এসেছে।
পার্সেলটি ছাড়াতে কাস্টমস হাউজ ফি বাবদ মোটা অংকের টাকা পরিশোধ করতে হবে। পার্সেল পাওয়ার আশায় কাস্টমস কর্মকর্তার দাবি করা টাকা পাঠিয়ে দেয় ভুক্তভোগীরা। এরপর কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী ব্যক্তি আবারও ফোন করে জানায়, বিদেশি বন্ধুর পাঠানো পার্সেলে বিপুল পরিমাণ অবৈধ ডলার রয়েছে। যা ছাড়াতে আরো বেশি টাকা প্রয়োজন। এই টাকা দিতে বার্থ হলে প্রতারিত ব্যক্তির নামে মানি লন্ডারিং আইন অন্যান্য আইনে মামলা হবে বলে মিথ্যা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।
ডিবি প্রধান বলেন, প্রতারিত ব্যক্তি মামলার ভয়ে প্রতারকের দেওয়া বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টে দাবিকৃত টাকা পাঠালে পুনরায় ফোন করে পুলিশ এবং সাংবাদিক জেনে যাওয়ায় তাদের ম্যানেজের কথা বলে আরো বড় অংকের টাকা দাবি করে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে। প্রতারকরা তাদের দাবিকৃত টাকা ব্যাংক একাউন্টে জমা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতারণার শিকার হওয়া ব্যক্তিকে সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্লক করে দিত।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ আরও বলেন, বিদেশী প্রতারক চক্রটি বাংলাদেশীদের সহায়তায় এভাবে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিলো। চক্রটি প্রতারণায় ব্যবহৃত ব্যাংক একাউন্টগুলো বিভিন্ন ব্যক্তির পাসপোর্ট জাল করে বিভিন্ন ব্যাংকে শত শত একাউন্ট ও ক্রেডিট কার্ড নিয়েছে। এ সকল ব্যাংকের চেক ও এটিএম কার্ড ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত টাকা তুলে নিত। আর এই টাকা তোলা এবং টাকা ভাগাভাগির কাজটি করত বিপ্লব লস্কর। সে বিদেশি নাম্বার ব্যবহার করে খোলা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি তদারকি করত। লস্করের সহযোগী হিসেবে কাজ করত সুমন হোসেন ওরফে ইমরান (৩১), মোহসিন হোসেন ওরফে শাওন (৩০) এবং ইমরান হাসান ইকবাল (৩৩)কে নির্দেশনা দিত।
ডিবি প্রধান বলেন, গ্রেপ্তারকৃত বিপ্লবের বিরুদ্ধে সিআইডি মোহাম্মদপুর, খিলক্ষেত ও কাফরুল থানায় মানি লন্ডারিংয়ের মামলা করেছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাসহ শতাধিক মামলা রয়েছে। এ মামলায় সে একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছে।
Dhaka, Bangladesh বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:38 AM |
Zuhr | 11:59 AM |
Asr | 2:59 PM |
Magrib | 5:19 PM |
Isha | 6:40 PM |