আজ শনিবার | ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | বিকাল ৩:৪৬
বাংলাদেশের এখন উপদেশ নেয়ার সময় না, উপদেশ দেয়ার সময় বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ড. একে আব্দুল মোমেন।
আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম (ইআরডিএফবি) এই সভার আয়োজন করে।
ড. মোমেন বলেন, ‘আমরা এশিয়া মহাদেশে কোনো ছায়াযুদ্ধ চাই না। কারণ ছায়াযুদ্ধ হলে উন্নয়নশীল দেশ তো ক্ষতিগ্রস্ত হবেই, আর যেখানে যুদ্ধটা হবে সেটাও ধ্বংস হবে, আশপাশের যারা উন্নত দেশ; আমাদের আশপাশে উন্নত দেশ জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, উন্নয়নশীল হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া তাদেরও কিন্তু অর্থনীতিটা খারাপ হবে।’ ‘সুতরাং বাংলাদেশের সেই দর্শন আমরা শান্তি ও স্থিতিশীলতা চাই। এই অঞ্চলে আমরা কোনো ছায়াযুদ্ধ চাই না।’
বাংলাদেশ ও ভারতের ভালো সম্পর্কের ফলে উভয় দেশের কী অর্জন হয়েছে তা নিয়ে গবেষণার আহ্বান জানিয়ে মোমেন বলেন, অনেকে বলবেন, আমাদের কিচ্ছু অর্জন নেই। আমাদের দেশ থেকে কয়েক লাখ লোক ভারতে সহজে যাচ্ছে চিকিৎসার জন্য। সহজে যাচ্ছে বাজার-টাজার করার জন্য; এটাই তো বড় অর্জন! যদি সম্পর্ক খারাপ থাকতো, তাহলে কিন্তু খবর ছিল।
বাংলাদেশ যোগাযোগ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে মন্তব্য করে মোমেন বলেন, এই যোগাযোগের ফলে আমাদের অর্জন অনেক। আমি প্রায়ই শুনি কোনো কোনো লোক বলেন যে, ভারতের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক হয়েছে, সোনালি অধ্যায় হয়েছে, আমাদের অর্জন কী? আমি মনে করি, রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম এই মর্মে কাজ করতে পারে। আমাদের এই সুসম্পর্ক হওয়ায় আমরা সীমান্ত সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে পেরেছি; কঠিন জিনিস! বিভিন্ন দেশে এটা নিয়ে ঝগড়া-ঝাটি, আমরা একটা বুলেট খরচ করিনি। না করে আমরা আমাদের সীমানা নির্ধারণ করেছি, সেটা আওয়ামী লীগের নীতির কারণে। দ্বিতীয়ত, পানি বণ্টনের ভাগাভাগি আমরা করেছি।আমরা আমাদের সমুদ্রসীমা নির্ধারণ করেছি। এগুলো তো বড় অর্জন!
তিনি বলেন, ভারতেরও অনেক অর্জন। তাদের পূর্ব সীমান্ত নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। তাদের লাখ লাখ কোটি টাকা খরচ করতে হয় না। সুসম্পর্ক থাকার ফলে তাদের দেশের উন্নয়নটা টেকসই হচ্ছে। আমাদের দেশের উন্নয়নকে টেকসই করে রাখতে গেলে আমাদের অবশ্যই বৈশ্বিক সম্পর্ক বন্ধুপরায়ণ হবে। বন্ধু যদি না থাকে, বন্ধুপরায়ণ না হয়, তাহলে আমাদের এই উন্নয়নটা টেকসই হবে কিনা সন্দেহ আছে। এই জন্য আমি বলি যে, আমাদের দরকার অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের ভবিষ্যৎ কী ধরনের হওয়া উচিত, আমেরিকার বৈদেশিক নীতি কী ধরনের হওয়া উচিত সেগুলোতে আমরা উপদেশ দেবো। আমাদের এখন উপদেশ নেয়ার সময় না, উপদেশ দেয়ার সময়। আমেরিকা যদি তাদের বৈদেশিক নীতি পরিবর্তন করে, যদি দুনিয়ার মানুষের মঙ্গলের কথা চিন্তা করে, তাহলে তারা বিশ্বের নেতা হবে। আর তাদের যদি সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি থাকে, তাহলে তারা কিন্তু বিশ্বের কুলাঙ্গার হবে। তাদের এটা ভাবার সময় এসেছে। আমরা এটা তাদের আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাই এবং সেই জন্য গবেষণা দরকার।
আওয়ামী লীগের ৭৫ বছরের যাত্রা ‘বিস্ময়কর’ মন্তব্য করে তিনি বলেন,আওয়ামী লীগ বাঙালিদের একটি আত্মপরিচয় দিয়ে গেছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছি। দেশের স্বাধীনতা আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় অর্জন। এ অর্জনের পেছনে যার অবদান, তিনি হলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু শুধু দেশ স্বাধীন করেনি, এদেশকে একটি শক্ত ভিতের উপর প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যা যা দরকার, সব করেছেন। স্বাধীনতার অল্প সময়ে বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতি ও বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদও লাভ করেছেন। ৯ মাসের মাথায় শাসনতন্ত্র তৈরি করেছেন। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা খুবই ভাগ্যবান বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশ শাসন করছে।
আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, মুসলিম লীগ যখন এ অঞ্চলের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছে, তখন আওয়ামী লীগ হয়ে উঠেছে মানুষের কণ্ঠস্বর। অনেক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ আজকে ঋদ্ধ একটি দল। আজকে নানাভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে। হ্যাঁ চ্যালেঞ্জ আছে, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। ইতোমধ্যে তিনি টেরোরিজমের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা ঘোষণা করেছেন। আশা করি, তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধেও শূন্য সহিষ্ণুতা ঘোষণা করবেন।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক কামরুল আলম খান বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব খুব শিক্ষিত ছিলেন না। তবে তার দূরদৃষ্টি বঙ্গবন্ধুকে অনেক সহযোগিতা করেছে। তিনি বুঝতে পারতেন আওয়ামী লীগের কোন নেতা কী ভূমিকা পালন করছে। তাকে নিয়ে গবেষণার অনেক ক্ষেত্র রয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আমাদের ইতিহাস বলে, আমরা জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। আমরা শান্তিপ্রিয় জাতি। আমরা যুদ্ধ চাই না। বাঙালি মনুষত্ব ও মানবিকতার জাতি। এটাই আওয়ামী লীগের দর্শন। সভায় বক্তব্য দেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া। চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল খান প্রমুখ।সূত্র:মানবজমিন
Dhaka, Bangladesh শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 4:31 AM |
Sunrise | 5:47 AM |
Zuhr | 11:51 AM |
Asr | 3:17 PM |
Magrib | 5:56 PM |
Isha | 7:11 PM |