উজ্জ্বল রায় (নড়াইল জেলা) প্রতিনিধিঃ-মধুমতির নদীর ওপর নির্মিত নড়াইল এবং গোপালগঞ্জ জেলার মেলবন্ধন সেতুটির পাশে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু কাটা হচ্ছে। এতে সেতুটি ঝুকিপূর্ণ হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
জানাগেছে,নড়াইল এবং গোপালগঞ্জ জেলার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করতে নড়াইলের পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের চাপাইল এবং গোপালগঞ্জ জেলার মানিকদহ এলাকায় মধুমতি নদীর ওপর প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ২০১৬ সালের ৩০ এপ্রিল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতু উদ্বোধন করেন।
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থা আইন ২০১০ অনুযায়ী সেতু,কালভার্ট সড়ক,মহাসড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার পাশে ড্রেজার মেশিন বা অন্য কোনো যন্ত্র বসিয়ে বালু উত্তোলন করা যাবে না। অথচ একটি প্রভাবশালী মহল সরকারি নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে সেতু সংলগ্ন ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু কাটছেন। প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, ৫৮৮ দশমিক ৬৫ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৯ দশমিক ৬ মিটার চ্ওড়া সেতুটির নির্মাণ কাজ ২০১৫ সালে শেষ হয়। যার প্রক্কলিত মূল্য ধরা হয় প্রায় ১০০ কোটি টাকা।
সরেজমিন দেখা গেছে সেতুর বলগেটের (পিলার) সাথে চারটি ড্রেজার মেশিন এবং বালুবহনকারি কার্গো বাধা রয়েছে। অদূরেই চারটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু কাটা হচ্ছে এবং বালুবহনকারি কার্গোর মধ্যে ফেলা হচ্ছে।
চাপাইল গ্রামের জাকির ভুইয়া,বায়জিদ মোল্লাসহ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,এলাকার ইউনুস চৌধুরী বালুমহাল ইজারা বন্দোবস্ত নিয়ে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু কাটছেন। সন্ধ্যার পর ড্রেজার মেশিনসহ কার্গোগুলো সেতুর পিলারের সঙ্গে বেধে রাখা হয়। যন্ত্রগুলো যখন পিলারের কাছে আনা হয় তখন পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে পিলারের ক্ষতি হচ্ছে। আবার অনেক ড্রেজার মেশিন দিয়ে রাতের বেলায় বালু কাটা হয়ে থাকে। ভোর হতে না হতেই বালু ভর্তি কার্গোগুলো গন্তব্যস্থলে চলে যায়।
প্রকৌশলী শৈলেন্দ্র নাথ সাহা বলেন,সেতুর আশপাশে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু কাটা হলে সেতুর আশপাশে ধস নামতে পারে। তখন পিলারগুলো নড়বড়ে হয়ে যায়। এতে সেতুর ধারণ ক্ষমতা কমতে থাকে। এক পর্যায়ে সেতু হেলে পড়তে পারে। প্রশাসনকে জরুরিভিত্তিতে এর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ইউনুস চৌধুরীরর সঙ্গে মুঠোফোনে (০১৭১৬৮৬৩৩৮৬) একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্দ পা্ওয়া যায়।
গোপালগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল হক বলেন,আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম সেতু সংলগ্ন থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু কাটা হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসককে অবগত করা হবে।
নড়াইলের কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.নাজমুল হুদা জানান,নড়াইল জেলার সীমান্ত চাপাইল বালুমহালে ইজারা বন্দোবস্ত থাকলেও সেতুর কারণে তা বাতিল করা হয়েছে। তবে চরসিংগাতি বালুমহাল ইজারা বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। চরসিংগাতি বালুমহালের ইজারাদার তার সীমানা অতিক্রম করে চাপাইল বালুমহাল থেকে বালু উত্তোলন করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নড়াইলের জেলা প্রশাসক আনজুমানআরা বলেন,সেতুর কাছ থেকে বালু উত্তোলন করা হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।