এম, এ কাশেম, চট্টগ্রাম থেকে : ৪২ দিন পর চট্টগ্রামের প্রায় সব বিএনপি নেতারা প্রকাশ্যে আসলেন মানববন্ধন কর্মসূচির মাধ্যমে। আর্ন্তজাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গতকাল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নেন তারা। অবশ্য ‘কৌশলগত’ কারণে এ মানববন্ধন বিএনপি সমর্থিত পেশাজীবীদের সংগঠন ‘সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ’ চট্টগ্রাম শাখার ব্যানারে আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি দাবি করেন, ‘দেশে কোনো ইলেকশন নয়, বানরের পিঠা ভাগাভাগির সিলেকশন’ হচ্ছে।
এর আগে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় পণ্ড হওয়া বিএনপির সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। পরদিন থেকে কয়েক ধাপে হরতাল–অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করলেও গ্রেপ্তার এড়াতে ‘আত্মগোপনে’ ছিলেন নেতাকর্মীরা। অবশ্য কর্মসূচি চলাকালে বিভিন্ন জায়গায় ঝটিকা মিছিল করে। এ অবস্থায় কেন্দ্র ঘোষিত গতকালের মানববন্ধনে উপস্থিতি নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যেই কিছুটা সংশয় ছিল। শেষ পর্যন্ত নগর এবং উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা অংশ নেন মানববন্ধনে। ওই হিসেবে ৪২ দিন পর প্রকাশ্যে এসেছেন বিএনপির চট্টগ্রামের নেতারা। মানববন্ধন চলাকালে জামালখান এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন ছিলো।
মানববন্ধনে ডা. শাহাদাত হোসেন সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে দাবি করে বলেন, ‘সরকার রাষ্ট্রশক্তি ব্যবহার করে এমনভাবে টিকে থাকতে চায় যাতে তাদের অপরাধের বিরুদ্ধে কেউ টু শব্দও করতে না পারে। দেশের জনগণ, সব বিরোধী দলের বিরোধিতা এবং আন্তর্জাতিক মহলের আহ্বান উপেক্ষা করে সরকার একতরফা প্রহসনের নির্বাচন করার আত্মঘাতী খেলায় মেতে উঠেছে। তারা জনগণের কাছে নয়, গণভবনের দিকে ছুটছেন। এইটা কোনো ইলেকশন নয়, বানরের পিঠা ভাগাভাগির সিলেকশন। এই প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করতে হবে।’
তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে সারা দেশে বিএনপির ২০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের কেউ বাসায় থাকতে পারছেন না। নামতে পারছেন না রাস্তায়। মানুষের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে সরকার। বিএনপি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ভাত ও ভোটের অধিকারের কথা বলছে, এটাই অপরাধ।
শাহাদাত বলেন, বিশ্ব মানবাধিকার দিবস শুধু একদিন নয়, সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনকারীদের জন্য এখন প্রতিদিনই মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ব্যক্তিরা তাদের কথা বলতে পারে না।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে ও মো. কামরুল ইসলামের পরিচালনায় মানববন্ধনে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, সিএমইউজে সভাপতি মো. শাহনওয়াজ, চট্টগ্রাম জেলা ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. তমিজ উদ্দিন আহমেদ মানিক, এ্যাবের সভাপতি প্রকৌশলী জানে আলম সেলিম। মানববন্ধনে চট্টগ্রামে ‘গুম’র শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন বলে বিএনপি থেকে জানানো হয়েছে।
এ এম নাজিম উদ্দীন বলেন, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আইনের নামে সরকার যা করছে, তা বেআইনি সন্ত্রাস ছাড়া আর কিছু নয়। মানুষ একতরফা নির্বাচন বর্জন করবে।
আবু সুফিয়ান বলেন, মামলা দিয়ে রাজনীতিবিদদের দমন করা যায় না। এতে তাঁদের জনপ্রিয়তা বাড়ে। বিএনপি ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আন্দোলন করছে।
বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ হালিম, নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ, এড. আবদুস সাত্তার, এস এম সাইফুল আলম, নাজিমুর রহমান, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আবদুল মান্নান, উত্তর জেলার নুরুল আমিন, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, কাজী সালাউদ্দিন, নগরের সদস্য এরশাদ উল্লাহ, হারুন জামান, মাহবুব আলম, এড মুফিজুল হক ভূঁইয়া, এস এম আবুল ফয়েজ, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, মন্জুর আলম মন্জু, আনোয়ার হোসেন লিপু, মন্জুর আলম চৌধুরী মন্জু, এড. ফোরকান, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, মুজিবুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান, এড. ফৌজুল আমিন, মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী জাহেদ, হুমায়ুন কবির আনসার, নুরুল কবির, মঈনুল আলম ছোটন, এডভোকেট কাশেম চৌধুরী, এড. আবু তাহের, জসিম উদ্দিন শিকদার, আবু আহমেদ হাসনাত, অধ্যাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, শাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, জাকের হোসেন, মোহাম্মদ শাহেদ, শেখ নুরুল্লাাহ বাহার, ফাতেমা বাদশা, বেগম মনি, ডা. আব্বাস উদ্দীন, ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালী, ডা. এস এম সারোয়ার আলম, মন্জুর রহমান চৌধুরী, মামুনুল ইসলাম হুমায়ূন, হাজী মো. সালাউদ্দীন, মো. সেকান্দর, আবদুল্লাহ আল হারুন, মো. শাহাবুদ্দীন, হাজী বাদশা মিয়া, মাঈনুউদ্দীন চৌধুরী মাঈনু, রোকন উদ্দিন মাহমুদ, জাহাঙ্গীর আলম, গিয়াস উদ্দিন।