আজ বৃহস্পতিবার | ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ৮:২৩
মোস্তফা ইমরান রাজু, মালয়েশিয়া প্রতিনিধি :‘শতবর্ষে জাতির পিতা, সুবর্ণে স্বাধীনতা, অভিবাসনে আনবো মর্যাদা ও নৈতিকতা’ স্লোগানকে সামনে রেখে যথাযোগ্য মর্যাদায় মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক অভিবাসি দিবস পালন করেছে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন। করোনায় সরকারি বিধিনিষেধের কারণে ব্যপকভাবে প্রবাসীদের অংশগ্রহণ সম্ভব না হওয়ায় দূতাবাসের ফেসবুক পেজে তা সরাসরি সম্প্রচার করে প্রবাসীদের অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়।
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ারের সভাপতিত্বে শ্রম শাখার প্রথম সচিব ফরিদ আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ করেন শ্রম কাউন্সিলর মো. জহিরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন শ্রম কাউন্সিলর-২ মোঃহেদায়েতুল ইসলাম মণ্ডল, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন পাসপোর্ট ও ভিসা শাখার প্রথম সচিব মিয়া মোহাম্মদ কিয়ামুদ্দিন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন প্রথম সচিব ফরিদ আহমদ, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন দ্বিতীয় সচিব (রাজনৈতিক) বেগম রেহেনা পারভীন। অনুষ্ঠানে দু’জন প্রবাসী কর্মী তাঁদের অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশার কথা শেয়ার করেন।
হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার তার বক্তব্যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার জীবনাদর্শ নিয়ে আলোচনা করেন। এসময় সাম্প্রতিক সময়ে দূতাবাসের কনস্যুলার সেবার গতিবৃদ্ধি এবং পদ্ধতি পরিবর্তনের উল্লেখ করে বলেন, করোনাকালের এ মহামারীর সময়েও হাইকমিশনের সেবা বন্ধ করা হয় নি এমন কি সেবা দিতে গিয়ে কর্মকর্তা কর্মচারী ও তাঁদের পরিবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, অনেককে আই সি ইউতে থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। একই কারণে একজন মৃত্যুবরণ করেছেন তবুও সেবা বন্ধ করা হয় নি। বিশেষ করে করোনাকালে সরাসরি পাসপোর্ট করা জীবনের জন্য ঝুকিপূর্ণ হলে অনলাইন এবং ডাকযোগে সেবা শুরু করা হয়। ক্রমশঃ আওতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন এ করোনা কালেও ২ লক্ষ ৩০ হাজার পাসপোর্ট মাত্র একমাসে বিতরণ করা সম্ভব হয়েছে যা সারা বিশ্বে থাকা যে কোন বাংলাদেশ দূতাবাসের থেকে অনেক বেশি। তিনি বলেন, প্রযুক্তি হলো সেবা সহজে দেবার ও পাবার অন্যতম হাতিয়ার সেটাকে কাজে লাগিয়ে আগামীতে দূতাবসের সকল সেবাকে আরো সহজ করা হবে।
তবে সেবার ক্ষেত্রে শুধু সেবা দাতার দিকে দেখলে হবে না সেবা গ্রহীতাদেরকেও সার্বিক বিষয় বিবেচনার জন্য অনুরোধ করেন।
তিনি পাসপোর্টের সময় বেশি লাগার কারণ হিসেবে বলেন, পাসপোর্টের মূল কাজ ঢাকায় সম্পন্ন হয় যেটাতে দূতাবাসের কোন হাত নেই তথাপি একজন প্রবাসীর পক্ষ হয়েই দূতাবাস দ্রুত পাসপোর্ট পাবার জন্য চেষ্টা করে। তিনি বৈধকরণ প্রক্রিয়ার সুযোগ নেওয়ার অনুরোধ করে বলেন, এ বৈধকরণের মেয়াদ কমপক্ষে ছয় মাস বৃদ্ধির জন্য মালয়েশিয়া সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি দূতাবসের সেবা গ্রহোণের ক্ষেত্রে দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগীদের নিকট না যাবার জন্য অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রবাসীরা মেধা, দক্ষতা ও শ্রম দিয়ে মালয়েশিয়া থেকে যে পরিমান অর্থ আয় করে তার থেকে দ্বিগুণ পরিমান অর্থ মালয়েশিয়া বাংলাদেশ থেকে আয় করে পণ্য রপ্তানীর মাধ্যমে। একারণে বাংলাদেশের মানুষ ও কর্মীদের মর্যাদা সমুন্নত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে এখন দৃষ্টিভঙ্গি বদলাবার সময় এসেছে।
হাইকমিশনার নতুন করে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে বলেন, দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে, এটি স্বাক্ষরিত হলে পরবর্তীতে নিয়োগের কার্যক্রম শুরু হবে এবং কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং হাইকমিশন থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে, সে পর্যন্ত কোনো এজেন্ট, দালাল বা তৃতীয়পক্ষের কিছু করার সুযোগ নেই। ফলে মালয়েশিয়ায় আসতে ইচ্ছুক যুবকদেরকে কারও প্রলোভনে প্রতারিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এসময়, বাংলাদেশ সরকার ও দূতাবাসের পরামর্শ ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে আহ্বান জানান তিনি।
সভায় প্রবাসী শফিকুল ইসলাম ও আবির তাদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন এবং দূতাবাসের সেবার মান বাড়ানোর জন্য তারা অনুরোধ জানান।
শ্রম কাউন্সিলর মো. জহিরুল ইসলাম শ্রম পরিস্থিতি সম্পর্কে তার বক্তব্য তুলে ধরেন।
তিনি জানান, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের দেশটির সোশ্যাল সিকিউরিটি অর্গানাইজেশন (সকসো) কর্তৃক ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৬ হাজার ১৬৩ জন বাংলাদেশি কর্মীকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। ১৩ কোটি ১২ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছে। এপর্যন্ত অস্থায়ী অক্ষমতা বরণকারী ৩ হাজার ১৭৮ জনকে ৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা, স্থায়ী পঙ্গুত্ববরণকারী ৬৮ জনকে ৪ কোটি ২১ লাখ টাকা, ২১৯টি মৃতদেহ প্রেরণ বাবদ ২ কোটি ২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের মার্চ থেকে ৩১ অক্টোবর ২০২১ পর্যন্ত কর্মক্ষেত্রে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত ৮৫০ জনকে ৯৮ লাখ ৯৭ হাজার টাকার সমপরিমাণ অর্থ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া পাবনার দেলোয়ার মোল্লা দেশে থেকে দুর্ঘটনাজনিত সুবিধা পাচ্ছেন। তিনি এককালীন ৭ লাখ ৭ হাজার টাকা পেয়েছেন এবং আজীবন তিনি ৬৫০ রিঙ্গিত করে পাবেন। সিরাজগঞ্জের প্রামাণিক ৫০ লাখ টাকা ক্ষতি পূরণ পেয়েছেন।
গত এক বছরে ১ হাজার ৩০২ জন বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। এরমধ্যে স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছেন ৮০২ জন, কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫০০ জন। এরমধ্যে দূতাবাসের পক্ষ থেকে সরকারি খরচে মৃতদেহ দেশে প্রেরণ করা হয়েছে। গত এক বছরে হাইকমিশন থেকে ৮ হাজার ৩৯১টি সাধারণ ট্রাভেল পাস এবং ক্যাম্পে থাকা ১ হাজার ৭৮৬ জনকে ট্রাভেল পাস প্রদান করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
Dhaka, Bangladesh বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:18 AM |
Sunrise | 6:39 AM |
Zuhr | 11:59 AM |
Asr | 2:59 PM |
Magrib | 5:20 PM |
Isha | 6:40 PM |