এম, এ কাশেম, চট্টগ্রাম থেকে : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন,দেশের মানুষ এখন জেগে উঠেছে তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত যে আন্দোলনের জোয়ার উঠেছে, সেই জোয়ারে আওয়ামী লীগ ‘ভেসে যাবে।চট্টগ্রাম থেকে বিটিশ বিরোধী আন্দোলন,স্বাধীনতার ঘোষনা ও যুদ্ভ শুরু হয়েছিল ভোট চোরদের বিরুদ্ধে এক দফার আন্দোলন শুরু হবে। ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের সব কিছুকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা দেশে ত্রাস সৃষ্টি করেছে। আওয়ামী লীগ কখনও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, তারা গণতন্ত্র নষ্ট করে দিয়েছে। তিনি বলেন, ঘরে ঘরে চাকরি, ১০ টাকার চাল, কৃষকের ধানের দাম নিয়ে সরকার কোনও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি বলে উল্লেখ করেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘যারা অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, শিক্ষা, বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে, তাদের রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে দেখতে চাই না।
’ তিনি বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে দেবো না। ১৪-তে বিনা ভোটে এমপি, ১৮-তে আগের রাতেই ভোট সারা। পুরো রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে তারা ক্ষমতায় আছে। দেশের ভোট ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এ সরকারের অধীনে কখনই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। তাই এই সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে। তিনি বলেন,কথা বললেও মামলা, না বললেও মামলা। সব নেতাকর্মীদের নামেই মামলা দিয়েছে এই সরকার। মারামারি করে তারা, আর মামলা দেয় আমাদের নামে।তারা নির্বাচনের আগে একটু সহানুভূতি দেখাচ্ছেন। কিন্তু ন্যাড়া বারবার বেলতলায় যায় না। গেলে তার মাথা ফাটবে। সুতরাং আমরা এ অবস্থায় আর বেলতলায় যাব না। ওরা আমাদের বেলতলায় নিয়ে যেতে চায়।
রবিবার(১৬ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রামে শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষনে এ কথা বলেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু,মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, এডভোকেট সামশুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বক্তব্য রাখেন গোলাম আকবর খোন্দকার, এসএম ফজলুল হক,চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবে রহমান শামীম,চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা শাহাদাত হোসেন,এ এম নাজিমউদ্দীন, নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাসেম বক্কর, মামাচিং,জালাল উদ্দিন মজুমদার,হারুনর রশিদ,আবু সুফিয়ান,ব্যারিস্টার মীর হেলাল,হুম্মম কাদের চৌধুরী,এনামুল হক এনাম প্রমুখ।
ফখরুল বলেন, দেশটাকে আওয়ামী লীগ তলাবিহীন ঝুড়ি বানিয়েছিল। ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে দেশে দুর্ভিক্ষ লেগেছিল।শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার আগে বলেছিল, তারা ১০টাকা কেজি দরে চল খাওয়াবে। সেই চলের দাম এখন ৯০ টাকা হয়েছে। তারা বলেছিল, ঘরে ঘরে চাকরি দেবে; এখন চাকরি পেতে হলে আওয়ামী লীগের লোকজন ২০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়।
বর্তমান সরকারের আমলে নিত্যপয়োজনীয় সব পণ্যের দাম বেড়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির দাম বাড়িয়েছে; তারা উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করে, লুট করে বিদেশে টাকা পাচার করে। তারা কানাডা, লন্ডনে, বেগম পাড়ায় বাড়ি করে, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম বানায়। আর আমার দেশের মানুষ না খেয়ে থাকে। বর্তমান সরকারের গুম-খুনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আর কতদিন সহ্য করবো এদের অত্যাচার। আর কি সহ্য করা যায়?’ তখন নেতাকর্মীরা বলেন, ‘না’।তখন তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের সাথে নিয়ে এই সরকারের বিরুদ্ধে লড়বো। এই অবৈধ সরকারের হেডকোয়ার্টার্স দখল করবো।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের সাথে দেশের জনগণ আছে। শেয়ালের কাছে বারবার কুমিরের বাচ্চা রাখা যাবে না। এবার এ দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। কোনোভাবেই আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।আমরা আর বেল তলায় যেতে চাইনা। ঐক্যবদ্ধ হতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আর কোনও সময় নেই, তাদের সময় শেষ। আমি পরিষ্কারভাবে বলেছি। আবারও বলছি, ভালো ছেলের মতো, সুবোধ বালক-বালিকার মতো পদত্যাগ করেন, সংসদ ভেঙে দেন। যদি ভালোয় ভালোয় শোনেন, পদত্যাগ করেন তাহলে তো ভালো। তা না হলে ফয়সালা হবে রাজপথে।
’ তিনি অভিযোগ করে বলেন, খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আট বছর কারাগারে রাখা হয়েছে। তিনি গণতন্ত্রের জন্য আপসহীন সংগ্রাম করেছেন। রাষ্ট্র মেরামতের জন্য আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। আমাদের নেতা তারেক রহমান এই ৩১ দফা দিয়ে আমাদের একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন।
কর্ণফুলী টানেল প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, আপনাদের এখানে একটা টানেল হচ্ছে। কয়েকদিন পর সেদিন উদ্বোধন করা হবে। আমরাও খুব খুশি। কারণ পৃথিবীর খুব কম দেশে টানেল হয়েছে। টানেল হওয়াতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমাদের আপত্তি অন্য জায়গায়। আজকে জনগণ ১০ টাকায় চাল খেতে পারছেন না। অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য কোনো হাসপাতাল নির্মাণ হয় না। সরকার আমাদের দেখান গত ১৫ বছরে জনগণের জন্য কয়টা হাসপাতাল নির্মাণ হয়েছে। একটাও দেখাতে পারবেন না। সাধারণ মানুষের লেখাপড়ার জন্য স্কুল-কলেজ তৈরি করেননি। এ অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। এ জন্যই আমরা রাস্তা নেমেছি।
প্রধান বক্তা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন,সরকারের ভোটচুরির প্রকল্পে যারা থাকবে, তাদের সাবধান করে দিচ্ছি। এই ভোটচুরির প্রকল্পে অংশগ্রহণ করবেন না। কেউ রেহাই পাবেন না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে আজকে জেগেছে দেশ বাসী। এখানে সমস্ত দেশের মানুষের সম্পৃক্ত রয়েছে, সকলের অংশগ্রহণ রয়েছে, তাদের (সরকার) ভয়টাই সেখানে। আজকে যাদের ব্যবহার করে ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে, তাদের দ্বিতীয়বার ভাবতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বর্তমানে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রতি মানুষের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। যারা নির্বাচন কমিশন গঠনের সাথে যুক্ত হচ্ছে তারাও সরকারের