শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুর পৌরসভার ধানুকা মৌজায় মন্দিরের নাম করে নিলাম খরিদ করা জমি জবরদখলের পায়তারা করছে বলে অভিযোগ করে বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩) সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী আঃ লতিফ ঢালী’র পরিবার। তাদের দাবী ঐ জমি মন্দিরের নামে কোন রেকর্ড বা কাগজপত্র নেই। অন্যায় ভাবে তারা এ জমি মন্দিরের বলে দাবী করে জমির মালিক পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, শরীয়তপুর পৌর এলাকার ৮০ নং ধানুকা মৌজার আরএস ৮৪০ নং খতিয়ানের ১০৭৬ নং দাগে দশমিক ৮৯ শতাংশ জমি (পুকুর) আরএস রেকর্ডে প্রমথ ভট্রাচার্য গংদের নামে রয়েছে। এ জমিটি গোসাইর দীঘি নামে পরিচিত থাকলেও গোসাইর দীঘি বলতে এসএ ও আরএস পর্চায় কোন নাম নেই। এস এ জরিপে আরএস রেকর্ডের ধারাবাহিকতায় খাজনা অংশে ২টাকা ৫০ পয়সা হিসেবে লিপিবদ্ধ হয় এবং এসএ পর্চায় ব্রাম্মর বা দেবোত্তর লিপিবদ্ধ হয়নি। এসএ রেকর্ডীয় মালিকগণ সরকারের খাজনা বা কর পরিশোধ না করায় তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান সরকারের ২১ টাকা ছয় আনা খাজনা বাকি পড়লে তৎকালীন ফরিদপুর জেলার সার্টিফিকেট আদালতে ১৯৫৭-৫৮ সালের ৩৩৫-ডি মোকদ্দমার উদ্ভব হয়। এ সময় ধানুকা এলাকার আঃ রশিদ ঢালীর পূত্র আঃ লতিফ ঢালীর নামে উকিল নিযুক্তির মাধ্যমে রামেস চন্দ্র মূখার্জি দ্বারা প্রকাশ্য নিলামে অংশ গ্রহণ করে ১৯৫৮ সালের ৩০ এপ্রিল উক্ত জমি নিলাম খরিদ করেন। ঐ সময় সরকারে বকেয়া খাজনা ২১ টাকা ছয় আনা পরিশোধ করে বয়নামা ও ডিসিআর গ্রহণ করে ১৯৫৯ সালের ১৯ জুন দখল বুঝে নেন।এর পর থেকে আঃ লতিফ ঢালী ঐ পুকুরে মাছ চাষ করে ভোগ দখল করে আসছে। জমিটি ১/১ খতিয়ান ভুক্ত (খ-শ্রেণী) ভিপি তালিকা অর্নÍভুক্ত থাকায় ২০১৪-১৫ সালে সরকারী সার্কুলার অনুযায়ী এক আবেদনের মাধ্যমে দশমিক ৮৯ শতাংশ (পুকুর) জমি ভিপি তালিকা থেকে অবমুক্ত করে আলাদা ভাবে জমা ভাগ করে নিজ নামে নামজারি করে নেয় আঃ লতিফ ঢালী। যার খতিয়ান নং ১০২৩ এবং দাগ নং ১১৭৭।তিনি ২০২৩ সাল পর্যন্ত খাজনা পরিশোধ করেছেন। সম্প্রতি তিনি পুকুটি বালু দিয়ে ভরাট করেছে। এমতবস্থায় দীর্ঘ প্রায় ৬৬-৬৭ বছর পরে স্থানীয় সমীর কুমার দে নামে এক লোক ধানুকা মনসাবাড়ি মন্দিরের নামে এ সম্পত্তি দাবী করে আঃ লতিফ ঢালীর নামীয় নামজারি বাতিল চেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর অভিযোগ দায়ের করে। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুদ্দিন গিয়াস ভুক্তভোগী আঃ লতিফ ঢালীর কাগজপত্র কোন তোয়াক্কা না করে অন্যায় ভাবে গত ১০ সেপ্টেম্বর আঃ লতিফ ঢালীর নামীয় নামজারি বাতিল করার আদেশ করে ঐ জমি বেচাকেনা বন্ধের নির্দেশ দেন। এর পরদিন ঐ জমিতে জেলা প্রশাসনের বরাত দিয়ে ৫/৬টি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়া হয়। উপায়ান্ত না পেয়ে আঃ লতিফ ঢালী ১১ সেপ্টেম্বর সহকারী জজ আদালতে (চিকন্দী) মামলা দায়ের করেন।বর্তমানে ভুক্তভোগী পরিবারটি আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন ও ন্যায় বিচারের আশায় বুধবার বেলা ১১টায় আঃ লতিফ ঢালীর নিজবাড়ি ধানুকায় এক সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন তার পরিবার। এসময় উপস্থিত ছিলেন, আঃ লতিফ ঢালীর স্ত্রী রোকেয়া বেগম, ছেলে কামাল ঢালী, কামালের স্ত্রী মাকসুদা আকতার, লতিফ ঢালীর মেয়ে ঝুমুর বেগম প্রমূখ।