আজ রবিবার | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১১:১৩
বিডি দিনকাল ডেস্ক :- হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সোনা চুরির ঘটনায় আবারও ধরা পড়েছেন ঢাকা কাস্টম হাউসের এক জন কর্মকর্তা। তার নাম পিংকু রায়। সুকৌশলে মহিবুর রহমান নামে এক যাত্রীর সোনার বার হাতিয়ে নেন এই সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। যাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে শনাক্ত করেছে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ। কাস্টম কর্মকর্তা পিংকু রায়ের কাছ থেকে সেই সোনার বার উদ্ধার করে যাত্রীকে ফেরত দেওয়া হয়েছে।এর পর পরেই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে ।
প্রসঙ্গত, এর আগেও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শুল্ক বিভাগের গুদামে থাকা লকার থেকে একাধিকবার সোনা চুরি হয়। ওই ঘটনায়ও কাস্টম কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।এই সব ঘটনা কাস্টমস হাউজ অব ঢাকার ব্যাপক প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে পড়েছে ।
জানা গেছে, যাত্রী মহিবুর রহমান গত শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৬টা ২০ মিনিটের দিকে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে দুবাই থেকে ঢাকায় আসেন। মহিবুর রহমানের সঙ্গে ১১৬ গ্রাম ওজনের এক পিস সোনার বার ছিল। কাস্টমস জোনে এই সোনার বারের শুল্ক দিয়ে বের হয়ে আসেন তিনি। তবে মহিবুর রহমান গাড়িতে ওঠার জন্য ক্যানোপি-২ এ অপেক্ষা করার সময় খেয়াল করে দেখেন, তার পকেটে সোনার বারটি নেই। আবারও টার্মিনালে ফিরে যান তিনি। কাস্টমস জোনে গিয়ে খোঁজাখুঁজি করেও সোনার বারটি না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন।
পরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অফিসে গিয়ে অভিযোগ করেন মহিবুর রহমান। তার অভিযোগের ভিত্তিতে বিমানবন্দরের সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করা হয়। সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়, কাস্টমস জোনে মহিবুর রহমানের বারটি পড়ে যায়। কাস্টমসের স্ক্যানিং মেশিনের সামনে ফ্লোরে পড়ে থাকা সেই সোনার বারটি এক ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে পা দিয়ে লাথি মেরে এক পাশে সরিয়ে রাখেন। পরে সুযোগ বুঝে কৌশলে সোনার বারটি পকেটে নিয়ে দ্রুত বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে যান।
একটি সূত্র জানায় বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ওই ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হয়। ওই ব্যক্তি হলেন— ঢাকা কাস্টম হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (কাস্টমস কার্ড নম্বর-১০১২২১১০০০৬৭) পিংকু রায় (৪০) । তিনি কাস্টমসের ট্রানজিট ও মূল্যবান গুদামের দায়িত্বে আছেন। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা পিংকু রায়কে মোবাইল ফোন করে আর্মড পুলিশের অফিসে ঢেকে নেওয়া হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে পিংকু রায় সোনার বারটি নিজ হেফাজতে নেওয়ার কথা স্বীকার করেন এবং ফেরত দিতে রাজি হন। পুলিশের হস্তক্ষেপে সোনার বারটি ফেরত দেন রিংকু রায়।
এদিকে আজ কাস্টমস হাউজ অব ঢাকা অফিসে পিংকু রায়কে বিভিন্ন দফতরে ঘুরা ফেরা করতে দেখা যায় । তার পরিচিয় নিশ্চিত হওয়ার পর এক পর্যায় তাকে যায়যায়দিনের প্রতিনিধির পরিচয় দিয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি ঘটনার বিষয়ে সত্যতা শিকার করে বলেন , ওই দিন তার ডিউটি ছিল ।একটি প্যাকেট পরে থাকতে দেখে তিনি তা খুলে দেখেন ভিতরে গোল্ড বার রয়েছে একটি ।তিনি তা কাউকে না জানিয়ে বাসায় নিয়ে আসেন ।আর ওই দিনই তার শেষ কর্মস্থল ছিল । এই শাখা থেকে আগেই তাকে এয়ারপোর্ট গুদাম শাখা থেকে অন্য শাখায় বদলি করা হয় ।
পরবর্তী সময়ে অভিযুক্ত রিংকু রায়কে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কাস্টমসের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়। ঢাকা কাস্টম হাউসের কমিশনারের পক্ষে ডেপুটি কমিশনার (সি-শিফট) আলী রেজা হায়দার উপস্থিত হয়ে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রিংকু রায়কে আর্মড পুলিশের অফিস থেকে নিয়ে যান। একই সঙ্গে যাত্রী মহিবুর রহমানকে সোনার বারটি বুঝিয়ে দেয় আর্মড পুলিশ।
এ বিষয়ে আর্মড পুলিশের কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, যাত্রীদের যেকোনও অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে আমলে নেয় আর্মড পুলিশ। একইভাবে যাত্রী মহিবুর রহমানের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাটি উদ্ঘটান করা হয়েছে। অভিযুক্ত পিংকু রায় সরকারি কর্মকর্তা হওয়ায় বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে কাস্টমসে হস্তান্তর করা হয়েছে।
যাত্রী মহিবুর রহমান বলেন, ‘আমি নিজে ট্যাক্স দিয়েছি। আমি নিশ্চিত ছিলাম যা ঘটেছে বিমানবন্দরেই ঘটেছে। কিন্তু বিমানবন্দরের অনেকেই আমাকে বলেছেন, আমি বিমানবন্দরে সোনার বার হারাইনি, বাইরে কোথাও পড়ে গেছে। নানাভাবে আমাকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করা হয়। শেষ পর্যন্ত বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ আমাকে সর্বাত্মকভাবে সহায়তা করেছে। আর্মড পুলিশ সহায়তা না করলে সোনার বারটি ফেরত পাওয়া সম্ভব হতো না।
অন্যদিকে আজ এই বিষয়ে ঢাকা কাস্টম হাউসের কর্মকর্তা ডিসিপি ফারভেজ রেজা চৌধুরীর সাথে কথা হলে তিনি এই প্রতিনিধিকে বলেন , মাননীয় কাস্টমস অব কমিশনার এ কে এম নুরুল হুদা আজাদ ঘটনার বিষয়ে অবহিত হয়ে অভিযুক্ত পিংকু রায়কে সাময়িক সাসপেন্ড করেন । একেই সময় এক সদস্য বিশিষ্ট্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন ।ডিপুটি কমিশনার আল-আমিন এই দায়িত্বে রয়েছেন ।
তদন্ত কমিটির দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা যুগ্ম কমিশনার আল-আমিন এই প্রতিনিধিকে বলেন , মাত্র এর দায়িত্ব পেলাম । যত দ্রুত সম্ভব এই বিষয়ে তদন্ত করে উর্ধতন কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদন দিবো ।
ঢাকা কাস্টম হাউসের একটি সূত্র থেকে জানাজায় ঘটনা ২৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ছিল, এরপর শনিবার, মাঝে শুধু ২৫ ফেব্রুয়ারি গত রবিবার কর্মদিবস ছিল। ২৬ ফেব্রুয়ারিও সরকারি ছুটি। পরবর্তী কর্ম দিবস গতকাল ২৭ ফেব্রুয়ারি গতকাল মঙ্গলবার কাস্টম হাউস এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে ।’
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানাজায়, নানা অনিয়ম দুর্নীতির ব্যাপক অভিযোগ রিয়েছে কাস্টম হাউসএ । কয়েকটি শাখা রয়েছে যে খানে ফাইল বন্দি করে বাণিজ্য যেন নিত্য নৈমিত্তের বিষয় ।এই বিষয়ে উর্ধতন কর্মিকতারা নজর দিলেই ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করছে ।একেই সাথে কয়েকজন কর্মকর্তা সুনির্দিষ্ট ঘটনার সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশেও ব্যাপক অনীহা প্রকাশ করে ।
Dhaka, Bangladesh রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:16 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:57 AM |
Asr | 2:57 PM |
Magrib | 5:17 PM |
Isha | 6:38 PM |