আজ সোমবার | ২২শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |৬ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | বিকাল ৩:৩৬
বিডি দিনকাল ডেস্ক: ‘শুধমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মিথ্যাচার করেছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
যুক্তরাষ্ট্রের ভয়েস অব আমেরিকায় সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে শনিবার বিকালে এক ‘শ্রমিক-কর্মচারি কনভেনশনে’ ক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব এই প্রতিক্রিা ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘‘ আজকে ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে শেখ হাসিনার কিছু কথা বলেছেন। একথা তিনি সম্পূর্ণ মিথ্যাচার করে্ছেন।”
‘‘ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো দূর্ণীতির মামলা নেই। যে টাকা তারা বলে ২ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা সেই টাকা এখন ৮ কোটির ওপরে চলে গেছে… ব্যাংকে জমা আছে। শুধু মাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বেগম খালেদা জিয়া যাতে রাজনীতি করতে না পারেন তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে।’’
এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিতসাধীন খালেদা জিয়ার সংকটজনক অবস্থার জন্য সরকারকে দায়ী করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ এই সরকার তাকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক করে রেখে তাকে চিকিতসার সুযোগ না দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’’
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা, ৪৫ লক্ষ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতারের ঘটনা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ এই সরকার একটা ভয়াবহ দানবের সরকার, লুটেরা সরকার, বর্গীদের মতো সরকার। এরা সম্পদ বিদেশে পাচার করে বাগি-ঘর বানাচ্ছে। আর আমার দেশে মানুষ অসহায় ও অভুক্ত থাকছে।’’
‘‘ তারা এরকম একটা ভয়াবহ রাষ্ট্র তৈরি করেছে। এটাকে রাষ্ট্র বলা যায় না, এদেশ আওয়ামী লীগের নির্যাতনকারী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।”
তিনি বলেন, ‘‘ আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, এই রাষ্ট্র পরিবর্তন করতে হবে, এর কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। আমরা সমস্ত রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একদফার আন্দোলন করছি … গণতন্ত্রহরণকারী, মানুষ হত্যাকারী এই শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং জনগনের হাতে ক্ষমতা তু্লে দিতে হবে।”
শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ এই শ্রমিক শ্রেনীই অতীতে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে। আমি বিশ্বাস করি এবারো শ্রমিকরা অগ্রনী ভুমিকা পালন করবে।’’
‘‘ ইনশাল্লাহ আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত।এই সরকারকে পদত্যাগ করতে সক্ষম হবো, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে সক্ষম হবে।”
মতিঝিলে আইডিয়াল স্কুল ও কলেজের সামনে সড়কে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ও সম্মিলিক শ্রমিক পরিষদের যৌথ উদ্যোগে ‘দ্রব্যমূল্যৈ, মজুরী কমিশন, জাতীয় বেতন স্কেল, ন্যুন্যতম মজরুী, শ্রমি পরিস্থিতি ও সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এই কনভেনশন হয়। কনভেনশনে ২০ টি সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
এটি দ্বিতীয় শ্রমিক-কর্মচারিদের কনভেনশন। এর আগে স্বৈরাচার এরশাদের পতন আন্দোলনের সময়ে প্রথম কনভেনশন হয়েছিলো।
জেএসডির আসম আবদুর রব বলেন, ‘‘ অনেকে আল্টিমেটাম দিচ্ছে যে, আমাদেরকে রাস্তায় নামতে দেবেন না। আমরা কিন্তু এখনো আল্টিমেটাম দেয়নি।যখন দেবো তখন পরিস্থিতি কি হবে জানি না। তবে আপনারা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। জনগন ধরলে কেউ রক্ষা পাবেন না।’’
স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘ এই সরকার নড়বড় করতেছে। দেশে-বিদেশে কোথাও তারা জায়গা পাচ্ছে না। সকলে মিলে আমরা জোরছে একটা ধাক্কা দিলে এই সরকারের পতন হবে।”
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘‘ আপনারা ভালো আছে? জানি ভালো নাই।আপনারা যাতে ভালো থাকতে পারেন সেজন্য আজকের এই কনভেনশন।”
‘‘ আর দেশের জনগনের পেটে ভাত নাই। আর আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীর ছেলের বাড়ী ভার্সিনিয়াতে। ৩০ একর জমি নিয়ে গলফ মাঠ দিয়ে সেই বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। বুঝেন এই লুটেরা সরকারের নমুনা।”
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন. ‘‘ এই সরকার ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে মগের মুল্লুকে পরিণত করেছে। এটা আর মেনে নেয়া হবে না। রাজপথের আন্দোলন জোরদার করে এদের পতন ঘটাতে হবে।”
জাতীয় গণফ্রন্টের সভাপতি টিপু বিশ্বাস বলেন, ‘‘ এই রাষ্ট্র স্বাধীন হলেও এটি একটি শোষনের যন্ত্র। এই রাষ্ট্রের শোষকরা শ্রমিকদের শোষন করে। সেজন্য এই রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে ভেঙে চুরমার করে নতুন এই রাষ্ট্রের কাঠামো তৈরি করতে হবে। এটাই হোক আজকে আমাদের শপথ।”
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘‘ লুটেরা নয়, শ্রমিক-কর্মচারি-মেহনতি মানুষের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে শ্রমিক ভাইয়েরা ঐক্যবদ্ধ হোন। এই কনভেনশনের উদ্দেশ্যে হচ্ছে সমগ্র শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ করে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে এই ফ্যাসিবাদ সরকারের পতন ঘটানো। আসুন সেই লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাই।”
শ্রমিক-কর্মচারি কনভেনশন আয়োজন কমিটির সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে ও শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার ও মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় কনভেনশনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, ভাসানী অনুসারি পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের ফয়জুল হাকিম লালা, জাতীয় শ্রমিক জোটের মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের আশরাফ আলী আকন্দ, শ্রমিক ফেডারেশনের শাহ মো. আবু জাফর, বিএনপির মজিবুর রহমান সারোয়ার, আবদুস সালাম আজাদ, হুমায়ুন কবির খান, ফিরোজ-উজ জামান মোল্লা, আমিনুল হক, যুব দলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, সুমন ভুঁইয়া, শাহ আলম রাজা, সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের এএম ফয়েজ হোসেন বক্তব্য রাখেন।
এই সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন , কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু , তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জেড খান মো: রিয়াজ উদ্দিন নসু প্রমুখ ।
এছাড়া শ্রমিক ফেডারেশন, সরকারি কর্মচারি সমন্বয় পরিষদ, চতুর্থ শ্রেনী সরকারি কর্মচারি সমিতি, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক জোট, শ্রমিক অধিকার পরিষদ, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতি, বহুমখী শ্রমজীবী ও হকার সমিতি, শ্রমিক আন্দোলন, শ্রমিক কল্যাণ মজলিস, জাতীয় শ্রমিক পার্টি, রাষ্ট্র সংস্কার শ্রমিক আন্দোলন, ঢাকা জেলা সিএনজি অটোরিক্স ও মিশুক চালক ইউনিয়ন, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলন, প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিষদ, শ্রমজীবী পরিষদ, ভাসানী শ্রমিক পরিষদ, প্রভৃতি শ্রমিক সংগঠনের নেতারা সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:22 AM |
Sunrise | 6:42 AM |
Zuhr | 12:04 PM |
Asr | 3:06 PM |
Magrib | 5:27 PM |
Isha | 6:47 PM |