আজ সোমবার | ২২শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |৬ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | বিকাল ৪:২১
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ-ঝিনাইদহের শৈলকুপায় চলছে জমজমাট মাদকের ব্যবসা। ফেনসিডিল, গাঁজা, মদ, বিয়ার, হেরোইন, ইয়াবা সহ নানা ধরনের মাদকের ব্যবসা চলছে এখানে। বিশেষ করে ইয়াবার পাইকারী ব্যবসায়ীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে শৈলকুপা। ফলে হাত বাড়ালেই মিলছে মরণ নেশা ইয়াবা । আর উঠতি বয়সের যুবকরাই ঘাতক ইয়াবার প্রধান ক্রেতা। হাটে-ঘাটে, মাঠে-ময়দানে সর্বত্র চলছে ইয়াবার বেঁচাকেনা। ঝিনাইদহ ভারত সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় কিছু রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, জনপ্রতিনিধি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অসৎ সদস্যের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সহায়তায় এসব মাদক ব্যবসা চলছে। মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীরা তাদের অর্থের যোগান দিতে ক্রমশই ছিনতায়, চাঁদাবাজি, খুন-গুম সহ নানা অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ছে। এতে করে পারিবারিক ও সামাজিক নিরাপত্তার ঝুঁকিতে পড়ছে। মাদক ব্যবসা দিনের পর দিন বিস্তৃতি ঘটায় এর ভয়াববহ প্রভাব পড়ছে ব্যক্তি, সমাজ ও পরিবারে। সূত্রমতে, ঝিনাইদহের শৈলকুপায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের তালিকাভ’ক্ত মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে ১৯জন। তাদের বেশীর ভাগই রয়েছে প্রকাশ্যে, করছে ব্যবসা। অনেকে জামিনে বেরিয়ে ফের জড়িত হচ্ছে মাদকের সাথে। ইয়াবার চালান হররোজ আসছে শৈলকুপা উপজেলাতে। অবশ্য থানা পুলিশ দাবি কছে তারা মাদকের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান চালাচ্ছে। মাদকের সাথে জড়িতদের কোন ছাড় নেই বলেও দাবি পুলিশের। শৈলকুপায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের তালিকাভ’ক্ত মাদক ব্যবসায়ী হিসাবে নাম রয়েছে – বসন্তপুর গ্রামের দুলালের ছেলে আবু সাইদ ওরফে টাকি, বসন্তপুর গ্রামের আনসার শেখের ছেলে সাবান( বিডিয়ার), শেখপাড়া গ্রামের তোয়াক্কেল জোয়াদ্দারের ছেলে বকুল জোয়াদ্দার, শেখপাড়ার নাজিম জোয়াদ্দারের ছেলে রাজু জোয়াদ্দার, শেখপাড়ার গুলি জোয়াদ্দারের ছেলে সানোয়ার হোসেন, নিশ্চিন্তপুরের আব্দুরের ছেলে রইচ উদ্দিন, ফাদিলপুরের শরমান আলীর ছেলে কাউসার, মালিপাড়ার ইমরানের ছেলে রাফায়েত, হিতামপুরের সাহেব আলী, মালিপাড়ার ছাকাম উদ্দিনের ছেলে সাহেব আলী, মালিপাড়ার মৃত আমির আলীর ছেলে বুলবুল, মালিপাড়ার সাত্তারের ছেলে ডাল্টন, হাসনাভিটার সাহেব আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর, জামসেদ পুরের শামসুলের ছেলে পিকুল, হরিদেবপুরের দুলালের ছেলে বিল্লাল, কাজীপাড়ার সুশীল ওরফে গাঁজা সুশীল, মালিপাড়ার মাজেদুল হক চুকা, কবিরপুরের শরিফুলের ছেলে ইমন, হিতামপুরের মুরাদ শেখের ছেলে তিথি । শৈলকুপা উপজেলার চতুরদিকে রাজবাড়ি, কুষ্টিয়া ও মাগুরা এই ৩ জেলার সীমান্ত রয়েছে। সীমান্ত হওয়াতে মাদক ব্যবসায়ীরা সহজেই নানা রুট ব্যবহার করে মাদক সহ ইয়াবা ব্যবসা করে আসছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার বারইপাড়া গ্রামের মতিয়ার ইয়াবার একজন হোল সেলার। সে শৈলকুপাতে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে ইয়াবা সরবরাহ করে আসছে দীর্ঘদিন। রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার কেয়াগ্রামের হাসান ইয়াবা ব্যবসার গডফাদার হিসাবে পরিচিত। শৈলকুপার বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী তার কাছ থেকে নিয়মিত মাদক সরবরাহ করে আসছে। শৈলকুপায় স্কুলের পিয়ন, ভুমি অফিসের পিয়ন, জুয়েলারী ব্যবসায়ী, ভ্যান চালক, শ্রমিক, চা দোকানী, রাজনৈতিক নেতা সহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার আড়ালে ইয়াবার ব্যবসা চলছে হরদম। শৈলকুপার ফাদিলপুর, কবিরপুর, ক্ষুদের মোড়, ফাজিলপুর, মালিপাড়া, বানুগঞ্জ বাজার, নাগিরহাট বাজার, হাটফাজিলপুর বাজার, শেখপাড়া বাজার, হাকিমপুর, পাঠানপাড়া সহ বিভিন্ন স্পটে এখন চলছে ইয়াবার রমরমা ব্যবসা। বেশ কয়েকটি স্থানে মিলছে মদ-গাঁজা, ফেনসিডিল। পুলিশ শেখপাড়ার পাইকার মাদক ব্যবসায়ী বকুল জোয়াদ্দার, খুলুমবাড়িয়ার তালুক সহ শীর্ষ কয়েক ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ী কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় । তবে গ্রেফতারের পরপরই বা কিছুদিন পরে জামিনে বেরিয়ে এসে এরা আবার মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। খুলুমবাড়িয়ার তালুক জামিনে বেরিয়ে ফের ব্যবসা করছে। টিকটকের আড়ালে ইয়াবা ব্যবসা করে আসছিল আঁচড় মাল্টিমিডিয়ার পরিচালক জাহিদ হাসান। শৈলকুপার ফাতেমা মার্কেটের দ্বিতীয় তলাতে চলছিল ইয়াবার ব্যবসা। ডিবি পুলিশ জাহিদ সহ ২ জনকে আটক করে। খুলুমবাড়িয়ার তালুক ইয়াবার একজন হোল সেলার, এক দশকের বেশী সময় ধরে সে শৈলকুপা জুড়ে ইয়াবা সরবরাহ করে আসছে। জানা গেছে তালুক আগে ফেনসিডিল সহ অন্যান্য মাদক ব্যবসা করত। পুলিশের হাতে ধরাও পড়েছে কয়েকবার তবে জামিনে বেরিয়ে এসেই আবার এই মাদক ব্যবসা চালাতে থাকে। বর্তমানে বহন সহজ ও ব্যাপক চাহিদা থাকায় মরণ নেশা ইয়াবার কারবার গড়ে তুলেছে। গত বছরের ১০ জুলাই এই তালুক কে সহযোগী সহ গুসাইডাঙ্গা গ্রামের একটি কেনেলের পাশ থেকে থানা পুলিশ আটক করতে সক্ষম হয়। তাদের কাছ থেকে ৭০পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। এছাড়া সাড়ে৪ হাজার নগদ টাকা পাওয়া যায় । পুলিশ তাদের দু’জনকে রিমান্ডে নিলে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে চাঞ্চল্যকর ও বিষ্ফোরক সব তথ্য দেয়। ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে উঠে এসেছে শৈলকুপার সাবেক মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী আশরাফের নাম। ঐদিন আশরাফ তার মোটরসাইকেল দিয়েছিল ইয়াবা আনতে। তথ্যমতে শৈলকুপার কলাহাটার পাশে জুয়েলারী ব্যবসার পাশাপাশি ইয়াবা ব্যবসা করে আসছে জয় কর্মকার আর তার সহযোগী হিসাবে ইয়াবা সেবন করে আসছে কাপড়ের ব্যবসায়ী সুজন কুন্ডু সহ কমপক্ষে ১০জন। শৈলকুপার ফাতেমা মার্কেটে সুজন কুন্ডু একবার কয়েক মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের সাথে ইয়াবা সেবনের সময় ব্যবসায়ীদের হাতে ধরা পড়েছিল। এরপর সেখান থেকে তাকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। এরপর কবিরপুরে ৩রাস্তার পাশে কাপড় ব্যবসার আড়ালে মাদকের সাথে যুক্ত রয়েছে। গ্রেফতারকৃত ইয়াবা ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন সুত্র ও অনুসন্ধানে জানা গেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। শৈলকুপার খুলুমবাড়িয়া ও পাঠানপাড়াতে অবস্থানকারী মানিক ইয়াবার একজন হোল সেলার। সে চাকুরীচ্যুত একজন বিডিয়ার সদস্য, পিলখানা বিডিয়ার বিদ্রোহে এই মানিক চাকুরীচ্যুত হয়। বর্তমানে কখনো পাঠানপাড়া আবার কখনো খুলুমবাড়ি অবস্থান করে ইয়াবার পাইকারী ব্যবসা করে আসছে। তৃণমুলে ছড়িয়ে দিচ্ছে ইয়াবা ব্যবসা। সে একজন কৌশলী ইয়াবা বিক্রেতা বলে জানা গেছে। সরাসরি কারো হাতে ইয়াবা না দিয়ে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে ম্যাচের খোল, সিগারেটের খোল, পলিথিন টুকরা, গাছের পাশে, ঝোপঝাড়ের পাশে ইয়াবা রেখে আসে আর টাকা লেনদেন করে মোবাইল বিকাশে। তার শ্যালক পাঠানপাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান রাকুও সহযোগী ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসাবে মানিকের সাথে কাজ করছে বলে মাদকসেবীরা জানিয়েছে। শৈলকুপার আরেক মাদক স¤্রাট ইয়াবা ট্যাবলেটের হোল সেলার শাহবাড়িয়া গাংকুলা গ্রামের আকবর মন্ডলের ছেলে সাইদুর রহমান ওরফে সাউদ। তার ইয়াবা ব্যবসা ৩টি জেলা জুড়ে। রাজবাড়ির পাংশা, কুষ্টিয়ার খোকশা,বনগ্রাম,শান্দিহাড়া এবং ঝিনাইদহের শৈলকুপা জুড়ে। দশ,বিশ হাজার পিস করে ইয়াবা ট্যাবলেট তার বাড়িতে আনা হয়। এরপর তা বিভিন্ন হাত ঘুরে চলে যায় নানা স্পটে। সাম্প্রতি সাইদুর রহমান ওরফে সাইদ যখন ঘরে বসে প্রায় ১০ হাজার পিসের চালানের ইয়াবা গননা করছিল তখনকার গননার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয়দের মধ্যে । তীব্র ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় সবার মাঝে। সাইদুর সহ ঐ এলাকার মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে একটি কমিটিও গঠন করেছিল যুবসমাজ। এরপর কিছুদিন গা ঢাকা দিয়েছিল সাইদুর ওরফে সাউদ। এরপর আবার শুরু করেছে। মুলত মাদক স¤্রাট সাইদুরের কারবারের বড় একটি অংশ হাতবদল হয় বানুগঞ্জ বাজারের কেনেলের উত্তর দিকে একটি পোল্ট্রি দোকানে বসে। এখানে প্রতিদনি সন্ধ্যার পরপরই জড়ো হয় পাংশা, খোকশা,বনগ্রাম, শান্দিহাড়া সহ কয়েক জেলার খুচরা ইয়াবা ব্যবসায়ী ও ইয়াবাসেবীরা। দীর্ঘদিন ধরে শৈলকুপা শহরের ফাতেমা মার্কেটের দ্বিতীয়তলা ইয়াবা ব্যবসায়ীদের হাট হিসাবে ব্যবহার হয়ে আসছিল। এখানে টিকটক ভিডিও এবং বিজ্ঞাপন, মিউজিক ভিডিও বানানোর আড়ালে ভয়াবহ মাদক ইয়াবার ব্যবসা জাহিদ হাসান। পৌর এলাকার কয়েকটি স্পট হতে এখানে প্রতিনিয়ত ইয়াবার হাতবদল হয়। খালধারপাড়া, মালিপাড়া, কবিরপুর, ক্ষুদের মোড়, স্বর্ণকার পট্টি, ওয়াপদাহ কলোনী, নতুন ব্রীজ মোড়, নতুন বাজার সহ বিভিন্ন স্থানের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীর কারবার এই ফাতেমা মার্কেটের দ্বিতীয় তলা আঁচড় মাল্টিমিডিয়াতে। এখান থেকে টিকটকের আড়ালে ইয়াবা ব্যবসায়ী আঁচড় মাল্টিমিডিয়ার পরিচালক জাহিদ হাসানসহ ২ জনকে আটক করা হয়েছে। ঝিনাইদহ ডিবি পুলিশের একটি দল শৈলকুপা শহরের ফাতেমা মার্কেটের ২য় তলায় আচড় মাল্টিমিডিয়া নামে একটি দোকানে অভিযান চালিয়ে তাদের কে আটক করে। আটককৃতরা হলো উপজেলার দেবতলা গ্রামের ইকতিয়ার মন্ডলের ছেলে আচড় মাল্টিমিডিয়ার পরিচালক জাহিদ হাসান ও সিংনগর গ্রামের জামিরুল ইসলামের ছেলে আব্দুস সালাম। আটকের সময় তাদের নিকট থেকে ৭৫ পিচ ইয়াবা জব্দ করে ডিবি পুলিশ। ডিবির এসআই আলিমুজ্জামান এর নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি চৌকস দল এ অভিযান পরিচালনা করে। আটককৃতদের মাধ্যমে শৈলকুপায় মাদক ও ইয়াবা কারবারী আরো বেশ কিছু নাম ও চক্রের সন্ধান মিলে। শৈলকুপায় ভয়ংকর মাদক ইয়াবা ব্যবসার আরেকটি বড় স্পট হাকিমপুর গ্রাম। গত বছর এই গ্রামের শরিফুল হুজুরের ছেলে আবু তালেব বিপুল পরিমান ইয়াবা সহ ডিবি পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। তার কাছে ১৭হাজার পিস ইয়াবা পাওয়া যায় । কিন্তু গ্রামে এই ইয়াবার খবর ছড়িয়ে পড়লে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় অনেকের মাঝে। কেউ কেউ প্রশ্ন তোলে এই হাজার হাজার পিস ইয়াবা মূলত কার ছিল । কেননা এই তালেব ধরা পড়েছিল আমিরুলের বাড়িতে। আমিরুল কি ছদ্মবেশে লোক দিয়ে এমন ব্যবসা চালিয়ে আসছে এমন প্রশ্ন ওঠে তখন। হাকিমপুর গ্রামের আলিমের ছেলে আরিফ ইয়াবা ব্যবসা করে আসছে বলে পুলিশের একটি সুত্র জানিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সে মাদক ব্যবসা করছে। তাকে ধরতে বিভিন্ন সময়ে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। হাকিমপুর গ্রামের বেশকিছু যুবক নিয়মিত ইয়াবা সেবন করে আসছে। শৈলকুপার শেখপাড়া বাজারে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আনাগোনা রয়েছে। এই বাজারের আশপাশের গ্রামগুলিতে ইয়াবা কেনা-বেঁচা হয়। শেখপাড়া সংলগ্ন চড়িয়ার বিল গ্রামের মনিরুল শেখের ছেলে পিয়াস শেখ একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী । সে দু’দুবার ইয়াবা সহ গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। মাদক ব্যবসায়ে জড়িয়ে পড়ে এলাকায় নানা অপরাধের সাথে যুক্ত হয়েছে পিয়াস। সে ডাকাতি মামলাতেও থানা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল। শৈলকুপা পৌরসভার মালিপাড়া মাদকের একটি বড় আস্তানা। একসময় কবিরপুরে অবস্থানকারী মাঝে মালিপাড়া আস্তানা গড়ে তোলা হয়দারের ছেলে মশিউর বড় মাপের একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী। ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা জেলাজুড়ে তার ব্যবসা। মশিউরের স্ত্রী,আত্মীয়স্বজনরাও এই ব্যবসা করছে । একবার ইয়াবার বড় চালান সহ গ্রেফতারও হয়েছিল পুলিশের হাতে। সেখান থেকে মিলছে নানা তথ্য । মালিপাড়ার কোরবানের স্ত্রী হলো হয়দারের মেয়ে। মশিউর ও তার স্বজনরা ৮/১০টি করে ভুয়া ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করছে। শৈলকুপার তখনকার এসআই আলমগীর চাঞ্চল্যকর এই মামলাটি তদন্ত করেছিল। এই মশিউর বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা জেলাতে বসবাস করছে তবে তার আস্তানা রয়েছে মালিপাড়া । স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক ও ইয়াবা ব্যবসায়ী মালিপাড়ার ছাত্তার শেখের ছেলে ডাল্টন শেখ। মালিপাড়ার ইউসুপ ভ্যান চালানোর ছদ্মবেশে দীর্ঘদিন ইয়াবা ব্যবসা করে আসছে। ভ্যানে করেই শৈলকুপা শহর ও প্রত্যন্ত পল্লীর বিভিন্ন মাদকসেবীর কাছে ইয়াবা বিক্রি করে আসছে। কিছুদিন আগে সে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল। জামিনে এসে আবার ইয়াবা ব্যবসা করছে। তবে পুলিশের হাতে ধরা পড়ায় তার নাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ায় মালিপাড়া ছেড়ে অবস্থান করছে শৈলকুপার কবিরপুর সিটি কলেজপাড়া, সেখানেই বাড়ি করেছে। বেশ কয়েক বছর ধরে ছদ্মবেশে ইয়াবা ব্যবসা করে আসছে শৈলকুপা উপজেলা ভুমি অফিসের প্রতিবাদ নামের এক পিয়ন। একবার নায়েব অফিসের ভেতরে সে মাদক সেবন অবস্থায় ধরা পড়ে। শহরের ক্ষুদের মোড় ও কবিরপুরে তার আস্তানা। সন্ধ্যার পরপরই উঠতি বয়সী যুবকদের ভিড় সেখানে । বেশ কয়েক ঘন্টা ধরে চলে ইয়াবা কেনা-বেচা। আর এই ইয়াবা নিয়ে আসছে প্রতিবাদ। শহরের সততা হার্ডওয়ারের মালিক দেবার ছেলে দেবু একজন ইয়াবা সেবনকারী, কয়েক লাখ টাকা খরচ করেছে এই ইয়াবার পেছনে, বর্তমানে সে প্রায় সর্বশান্ত হয়েছে ইয়াবার পেছনে টাকা ঢেলে। গোবিন্দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে বসবাসকারী বাশার নামের এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ব্যবসা করছে। কয়েকদফা সে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যদের হাতে গ্রেফতার হয়। শৈলকুপা পৌরসভার ফাজিলপুর এলাকার রং মিস্ত্রি শিপন বিভিন্ন এলাকা থেকে ইয়াবা কিনে এনে বিক্রি করে আসছে। মিস্ত্রি পেশার আড়ালে তার মাদক ব্যবসা চলছে। সাধুহাটি গ্রামের রুহুল একজন মাদক ব্যবসায়ী বলে তথ্য পাওয়া গেছে। সে সরাসরি ইয়াবা কিনে আনে কক্সবাজার থেকে এবং একজন কৌশলী ইয়াবা ব্যবসায়ী । শৈলকুপায় নিয়মিত সে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের হাতে নিয়মিত ইয়াবা তুলে দিচ্ছে বলে জানা গেছে। ইয়াবা ব্যবসা করে আসছে নওপাড়া গ্রামের সোহাগ। অনুসন্ধান ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রে আরো জানা গেছে, শৈলকুপায় ইয়াবা ব্যবসায়ের সাথে জড়িত রয়েছে পৌরসভার মালিপাড়ার এসএম রানা, পৌরসভার খালধারপাড়ার ইমরান, সুজন, অন্তর, বাচ্চু, গাড়াগঞ্জের দিপ, ব্রাহিমপুরের মিলন, ভাটই গ্রামের পলাশ, হাটফাজিলপুরের মুন্নাফ ও বকুল, কচুয়া গ্রামের শরীফ, সিদ্দি গ্রামের আমির, ফাদিলপুরের দোকানী সাজ্জাদ। ইমদাদ বেশ কয়েকবার পুলিশের হাতে ইয়াবা-ফেনসিডিল সহ ধরা পড়েছিল। জামিনে বেরিয়ে এসে আবার তারা এই ব্যবসা করছে। শৈলকুপার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ তাদের কাছ থেকে ইয়াবা সরবরাহ ও সেবন করে আসছে।এসব ছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মাদক ও ইয়াবা ব্যবসায়ীদের ১৯ জনের তালিকা রয়েছে শৈলকুপাতে। শীর্ষ এসব মাদক ব্যবসায়ীদের অধিকাংশই এখনো ধরা ছোয়ার বাইরে রয়েছে। ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম শৈলকুপায় মাদক ব্যবসা প্রসঙ্গে জানান, প্রতিদিনই মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। অনেকেই গাঁজা-ইয়াবা সহ আটক হচ্ছে। মাদকব্যবসায়ীদের কোন ধরনের ছাড় নেই। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের জিরো টলারেন্স অবস্থান ।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:22 AM |
Sunrise | 6:42 AM |
Zuhr | 12:04 PM |
Asr | 3:06 PM |
Magrib | 5:27 PM |
Isha | 6:47 PM |