আজ বৃহস্পতিবার | ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১০:৫৭
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ-ঝিনাইদহের শৈলকুপা থেকে সরিয়ে দেয়া হলো বিতর্কিত ওসি (তদন্ত) মহসীন হোসেনকে। সাধারণ মানুষকে হয়রানী, মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়াসহ একের পর এক বিতর্কিত কর্মকান্ডে চরমভাবে ক্ষুন্ন হতে থাকে ভাবমূর্তি। অবশেষ রিমান্ডে থাকা হত্যা মামলার আসামীর হাতে পুলিশের হ্যান্ড মাইক তুলে দেওয়ায় তাকে বদলী হতেই হলো। এর আগে তিনি ঝিনাইদহ সদর থানায় থাকা অবস্থায় ‘খোপ’ ধরা বাহিনী গঠন করেন। এ ঘটনায় অনেকের চাকরীও চলে যায়। পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, ফেব্রæয়ারী মাসের ১১ তারিখে পুলিশের এই কর্মকর্তাকে বদলী করা হয় বাগেরহাট জেলায়। সেখানে ডিএসবিতে সংযুক্ত করা হয়। শৈলকুপা থানা থেকে ১১ মার্চ বিদায় নেন এই কর্মকর্তা। বদলী আদেশের পরেও থানায় তার অবস্থানকালে ঘটে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের ঘটনা। গত ৮মার্চ শৈলকুপা থানার ওসি তদন্ত মহসীন হোসেন রিমান্ডের আসামীদের থানায় ভিআইপি কায়দায় বহন করে এনে জামায় আদরে রাখেন। থানায় প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে আসামীর হাতে তুলে দেন পুলিশের হ্যান্ডমাইক। স্যোশাল মিডিয়াতে এর লাইভ স¤প্রচারের পর তীব্র বিতর্কের মুখে থানা পুলিশ। দেশের শীর্ষ জাতীয় দৈনিক ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলিতে খবরটি প্রচার ও প্রকাশিত হয়। এ ঘটনার সমালোচনা, প্রতিক্রিয়া ও অনুসন্ধানের মাঝে তিনি চলে গেলেন বদলীকৃত নতুন কর্মস্থলে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন কর্মকর্তা হয়েও জনগনের সঙ্গে তিনি ভালো ব্যবহার করতেন না। ঝিনাইদহ সদর থানায় চাকরীর সময় তিনি ও সাবেক ওসি ইমদাদ জামায়াত বিএনপি দমনের নামে আ’লীগকেও ছাড়েননি। একের পর এক নাশকতার মামলা দিয়ে নীরিহ মানুষকে আর্থিক ভাবে চরম হয়রানী করতে থাকেন। হলিধানী ইউনিয়নে বিএনপি নেতা আব্দুল বারী স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মানসিক বিকারগ্রস্থ থাকলেও তাকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হাজতে ভরেন। তার অকাল মৃত্যুও হয়েছে এ কারণে। ওসি ইমদাদ ও মহসিনের মুল টার্গেট ছিল গ্রেফতার বানিজ্য। যদিও ওই সব নাশকতা মামলার বেশির ভাগ তথ্য প্রমানের অভাবে খারিজ হয়ে যাচ্ছে। ওসি ইমদাদের পর মহসিনকে বদলী করা হয় শৈলকুপায়। অপরাধ প্রবণ শৈলকুপায় এক মাসেরও কম সময়ে ৬জন খুন হয়। বাড়ি-ঘর ভাংচুর, লুটপাট আর ডাকাতি নৈরাজ্য চলতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে মাত্র দুই মাসের মাথায় থানা থেকে বদলী হন ওসি রফিকুল ইসলাম। থানার বিতর্কিত কর্মকর্তাদের মধ্যে অন্যতম ছিল ওসি (তদন্ত) মো: মহসীন হোসেন। দুই বছর দুই মাসের বেশী সময় তিনি শৈলকুপা থানাতে থাকলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোন উন্নতি ছিল না। তুচ্ছ ঘটনায় থানায় ডেকে হুমকি-ধামকি, অর্থ হাতিয়ে নেয়া, মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতার বানিজ্য, সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে হুমকির মুখে রাখা যেন তার স্বভাব হয়ে দাঁড়ায়। তার হাত থেকে রক্ষা পায়নি সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার দায়িত্বশীল মানুষও। ফাঁসিয়ে দেয়া হয় মিথ্যা মামলার জালে। ডেইলি বাংলাদেরেশর জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক রামিম হাসানকে বুট জুতা দিয়ে পিষ্ঠ করে। ডিবিসির সাংবাদিক মিল্টনকে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় ফাঁসিয়ে দেন। পরে ওই মামলা জেলা জজ আদালত এই মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে নি¤œ আদালতে পাঠিয়ে দেন। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, খুলনার অভিজাত এলাকায় বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন ওসি তদন্ত মহসীন হোসেন। খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেরের মোড়ে ফারুকিয়া জামে মসজিদ ক্রসরোডে ওসি তদন্ত মহসীন নির্মাণ করছেন এই আলীশান ভবন। তবে রহস্যজনক কারণে ভবনে এখনো হোল্ডিং নাম্বার যুক্ত করা হয়নি। এরই মধ্যে ভবনটির দুই তলা সম্পন্ন করা হয়েছে। শুধু সোনাডাঙ্গা নয় খুলনার ময়লাপোতাতেও রয়েছে এই পুলিশ কর্মকর্তার সুরম্য অট্টালিকা। এ সবি বষয়ে ওসি তদন্ত মহসীন হোসেন তার বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি গ্রেফতার বানিজ্য ও মানুষ হয়রানীর সঙ্গে জড়িত নয় বলে জানান। তবে আসামীর হাতে পুলিশের হ্যান্ডমাইক তুলে দেওয়ার ঘটনাটি তিনি পরিস্থিতির কারণ বলে উল্লেখ করেন।
Dhaka, Bangladesh বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:18 AM |
Sunrise | 6:39 AM |
Zuhr | 11:59 AM |
Asr | 2:59 PM |
Magrib | 5:20 PM |
Isha | 6:40 PM |