আজ বৃহস্পতিবার | ২৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৪ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |১২ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | দুপুর ১:০১
নজরুল ইসলাম মানিক, সাভার ও আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি ঃ সাভারের আশুলিয়ায় বন্ধ থাকা পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া, শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার ও নূন্যতম মজুরি বৃদ্ধি করে ২২ হাজার টাকার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে একাধিক তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এমন পরিস্থিতিতে আজ সকালে অল্প কিছু কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলেও দুপুরে এই সংখ্যা বেড়েছে। এখন পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য ১০টি কারখানা বন্ধ ও ৬টিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে শিল্প পুলিশ।
শনিবার বিকেল পর্যন্ত আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের অন্তত ১৬টি কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে বলে শিল্প পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। শিল্প পুলিশের দেয়া তথ্য অনুসারে, আজ আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে মোট ১৬টি কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় অর্থাৎ নো ওয়ার্ক, নো পে’র ভিত্তিতে ১০টি এবং কারখানা খোলা রাখার পর কাজ বন্ধ আছে কিংবা ছুটি আছে এমন কারখানার সংখ্যা ১৬টি । শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় বন্ধ কারখানা গুলোর মধ্যে রয়েছে- লুসাকা গ্রæপের বেক নীটওয়্যার লিমিটেড, বেক সোয়েটার লিমিটেড, মন্ডল নীটওয়্যার লিমিটেড, এনভয় গ্রæপের এনভয় ফ্যাশন লিমিটেড, এনভয় ডিজাইন লিমিটেড, আঞ্জুমান ডিজাইন লিমিটেড ও দ্য রোজ ড্রেসেস লিমিটেডসহ ১০টি কারখানা।
শিল্প পুলিশ ও শ্রমিকরা জানায়, শনিবার সকালে লুসাকা গ্রæপের শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করার পর মন্ডল নীটওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকরাও আশুলিয়ার টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের জিরাবো এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা আশেপাশের বিভিন্ন কারখানার সামনে গিয়ে শ্রমিকদের ডাকাডাকি করে ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে এই এলাকার অন্তত ৮-১০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। এদের মধ্যে মন্ডল গ্রæপের শ্রমিকরা কয়েকদিন যাবৎ বেতন বৃদ্ধি করে ২২ হাজার টাকা করার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলো। পরে তাদের সাথে আরও কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা যুক্ত হয়ে আন্দোলন করে।
আন্দোলনরত লুসাকা গ্রæপের বেক নীট লিমিটেডের একজন শ্রমিক বলেন, ‘গত ৯ সেপ্টেম্বর মালিকপক্ষ কারখানার ২৭ জন শ্রমিকের নামে ও অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করে। পরে ওই মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শ্রমিকরা আন্দোলন করলে গত বৃহস্পতিবার কারখানা খুলে দেওয়া হয়। এসময় মালিকপক্ষ জানায়, তারা আমাদের কাছে মামলা প্রত্যাহার করে কপি হাতে হাতে দিয়ে দিবে। কিন্তু পরবর্তীতে তা আর দেয়নি। এঘটনার পর আজ সকালে কারখানায় এসে দেখি, মালিকপক্ষ শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে। পরে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে আশেপাশের কয়েকটি কারখানার শ্রমিকদের বের করে নিয়ে এসে সড়কে অবস্থান নিয়ে মামলা প্রত্যাহারসহ বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। মন্ডল নীটওয়্যার লিমিটেডের আন্দোলনরত এক শ্রমিক বলেন, ‘বেতন বৃদ্ধিসহ কয়েকটি দাবিতে আমাদের শ্রমিকরা আন্দোলন করছিল। আজ কারখানায় এসে দেখি মালিকপক্ষ ১৩(১) ধারায় কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে। এছাড়াও গত বৃহস্পতিবার থেকে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা মালিকপক্ষের হয়ে আমাদের শ্রমিকদের মারধর করছে। আমাদের বিভিন্ন শ্রমিকদের ধরে ধরে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে আমরা আন্দোলন করছি।’ তবে কোন শ্রমিককে বা কাকে কাকে ধরে নিয়ে মারধর করা হয়েছে, এমন প্রশ্ন করলে সুনির্দিষ্টভাবে কোন তথ্য দিতে পারেননি এই শ্রমিক।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, ‘সকাল থেকে শিল্পাঞ্চলের অধিকাংশ কারখানা খোলা রয়েছে এবং শ্রমিকরাও শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগ দিয়েছেন। পরে লুসাকা গ্রæপের শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করলে তাদের কারণে আশেপাশের কয়েকটি কারখানা ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও মন্ডল গ্রæপের শ্রমিকরা নূন্যতম মজুরি ২২ হাজার টাকা করার দাবিতে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করলে পরে তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তায় বিভিন্ন পয়েন্টে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
Dhaka, Bangladesh বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 4:54 AM |
Sunrise | 6:12 AM |
Zuhr | 11:43 AM |
Asr | 2:51 PM |
Magrib | 5:13 PM |
Isha | 6:31 PM |