আজ শনিবার | ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | বিকাল ৩:৩৩

শিরোনাম :

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ও সদর উপজেলায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষে তিনজন নিহত দেশের সব জায়গায় সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেয়া ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম ঢাবি ফজলুল হক মুসলিম হলে এক যুবককে হত্যার ঘটনায় ৫ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত মোহাম্মদপুরে সৈকত এর শোকাহত পরিবার এর বাসায় আমরা বিএনপি পরিবার সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম,ও সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি হেনরীসহ পাঁচজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানকে অপহরণ, গুম ও হত্যার উদ্দেশে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে আদালতে মামলার আবেদন কোনোরকম মব জাস্টিস, আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া,গণপিটুনি দেয়ার মতো ঘটনা কোনোভাবে গ্রহণ করা হবে না:ড. আসিফ নজরুল আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই,‘একজন অন্যায় করলে তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করেন:স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব যারা ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত অবশ্যই তাদর বিচারের আওতায় আনা হবে: উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম শ্যামল দত্ত,মোজাম্মেল হক বাবু,শাহরিয়ার কবিরের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত

সংবাদ সম্মেলন: ভারতের সঙ্গে ইতিপূর্বে স্বাক্ষরিত সকল চুক্তি অবিলম্বে জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি জানিয়েছে বিএনপি( ভিডিও সহ)

প্রকাশ: ৩০ জুন, ২০২৪ ৬:২৬ অপরাহ্ণ

ভারতের সঙ্গে ইতিপূর্বে স্বাক্ষরিত সকল চুক্তি অবিলম্বে জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। পাশাপাশি সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে ১০টি চুক্তি সমঝোতা স্মারক দেশবিরোধী আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে দলটি। গতকাল আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এবারের ভারত সফর ম্যান্ডেটবিহীন শেখ হাসিনা সরকারের ধারাবাহিক গোলামি চুক্তির সর্বশেষ সংস্করণ। এই চুক্তি দেশ তথা দেশের মানুষের কল্যাণে নয়, কেবলমাত্র আওয়ামী লীগের অবৈধ রাষ্ট্রক্ষমতার মেয়াদ বৃদ্ধির নজরানা মাত্র। আমরা পুনর্ব্যক্ত করতে চাই, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় স্বার্থ ও জাতীয় নিরাপত্তাবিরোধী এ সকল চুক্তি জনগণ কখনো মেনে নেবে না।

গতকাল বিকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে ‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর নিয়ে’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান অবৈধ সরকার অনেক আগেই স্বাধীনভাবে পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে কার্যত অক্ষম হয়ে পড়েছে। তারা রাষ্ট্রের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে কেবলমাত্র ক্ষমতার দখলদারিত্ব অব্যাহত রাখতে দেশি-বিদেশি সহযোগী গোষ্ঠী কিংবা প্রভুদের নিরন্তর আস্থা অর্জনে সচেষ্ট। ঢাকা ও দিল্লি নতুন যাত্রা শুরু করেছে, উভয় দেশ ‘রূপকল্প-২০৪১ ও বিকশিত ভারত-২০৪৭ অনুসরণ করে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ নিশ্চিত করার জন্য ভবিষ্যতের কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হয়েছে’-শেখ হাসিনার এ বক্তব্যের মাধ্যমেই তার ভারত সফরের প্রকৃত স্বরূপ উন্মোচিত হয়েছে। যা দেশবাসীও গভীরভাবে উপলব্ধি করেন বলে বিএনপি বিশ্বাস করে।

তিনি বলেন, কানেক্টিভিটির নামে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের এক অংশ থেকে আরেক অংশ পর্যন্ত রেল যোগাযোগের নামে করিডোর প্রদানের মাধ্যমে যা করা হয়েছে তাতে আমাদের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।

চুক্তি বাংলাদেশকে ভারতের গোলামে পরিণত করবে: ফখরুল বলেন, আপনাদের নিশ্চয়ই ১৯৭২ সালে ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ২৫ বছরের গোলামি চুক্তির কথা স্মরণ আছে। ৫২ বছর পর সেই ধারাবাহিকতায় গত ২২শে জুন ভারতের সঙ্গে সমঝোতার আড়ালে যে সকল চুক্তি করা হলো তা বাংলাদেশকে আজীবনের জন্য ভারতের গোলামে পরিণত করবে। এর ফলে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন হবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এসব চুক্তি-স্মারকের মাধ্যমে আমাদের দেশের প্রতিরক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিকে ভারতের জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার অংশে পরিণত করা হয়েছে। যা খুবই বিপজ্জনক এবং দেশের স্বাধীনতার প্রতি হুমকি। এটি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও জোটনিরপেক্ষ নীতির পরিপন্থি। বস্তুত, এ সকল সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে নিরাপত্তা কৌশলগত ‘বাফার স্টেট’ হিসেবে ভারতকে ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে চান। এর ফলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবে আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার জটিলতার মধ্যে জড়িয়ে পড়বে।

তিনি আরও বলেন, যে সাতটি সমঝোতা স্মারক নতুন করে সই করা হয়েছে, সেগুলোর প্রায় সবগুলোই বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলকেন্দ্রিক। প্রয়োজনের সময় বাংলাদেশ ভূখণ্ডকে ভারতের সামরিক ও বেসামরিক পণ্য পরিবহনের জন্য কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ‘চিকেন নেক’কে বাই-পাস করে ব্যবহার করার সুদূরপ্রসারী মহাপরিকল্পনা থেকেই এসব সমঝোতা চুক্তি করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে জলাঞ্জলি দিয়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে দীর্ঘমেয়াদে ভারতের গোলামি চুক্তির গভীর ফাঁদে ফেলার সেই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। জাতীয় স্বার্থবিরোধী এই চুক্তি জনগণ মেনে নেবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, শাসকগোষ্ঠী দাবি করে যে, গত দেড় দশকে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ‘অনন্য উচ্চতায়’ পৌঁছেছে। কিন্তু সম্পর্কের তথাকথিত ‘সোনালি অধ্যায়’-এর সময়কালে বাংলাদেশের জনগণের তরফে প্রাপ্তি শূন্যের কোঠায়। এ সময়ে দুই দেশের মধ্যকার লেনদেনের প্রধান অংশ জুড়ে রয়েছে কানেক্টিভিটির নামে একের পর এক ভারতকে ট্রানজিট ও করিডোর সুবিধা প্রদান। ট্রানজিট-করিডোর দেয়ার রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ও কৌশলগত ঝুঁকি সত্ত্বেও সবকিছুই একতরফাভাবে করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বার্থকে কোনো গুরুত্বই দেয়া হয়নি। একদিকে ভারত পেয়েছে অবাধ স্থল ও নৌ-ট্রানজিট যা ভারতের অবশিষ্ট অংশের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের সেভেন সিস্টার্সের যোগাযোগের সময় ও দৈর্ঘ্য কমিয়েছে সর্বনিম্ন প্রায় তিন চতুর্থাংশ। কলকাতা আগরতলার ১৭০০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫০ কিলোমিটারে। ভারত পেয়েছে বাংলাদেশের পায়রা, মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের অগ্রাধিকার সুবিধা।

তিনি বলেন, একতরফা আগ্রাসী বাণিজ্যে বাংলাদেশকে ভারতের অবাধ বিপণিকেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছে। দু’দেশের সামগ্রিক ২৬ বিলিয়ন বাৎসরিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের হিস্যা মাত্র দুই বিলিয়ন। এর মাঝেও রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকি। তীব্র বেকারত্বের বাংলাদেশে কাজ করছে লক্ষ লক্ষ ভারতীয় যুবক। ভারতের রেমিট্যান্স আহরণের প্রধান উৎসের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৪ নম্বরে। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী সংসদে জানিয়েছেন, গত ১০ মাসে ভারতীয়রা নিয়ে গেছে ৫০.৬০ মিলিয়ন ডলার। আমরা জানি, এর বাইরেও অবৈধ পন্থায় নিয়ে যাচ্ছে লক্ষ লক্ষ ডলার।

বাংলাদেশের প্রাপ্তি শূন্য: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে রেল করিডোর দেয়ার চুক্তি, তিস্তা প্রকল্পে ভারতের সহযোগিতা গ্রহণ, প্রতিরক্ষা ও সামরিক সহযোগিতা, ওষুধ সংক্রান্ত সমঝোতা, বাংলাদেশের জলসীমায় ভারতের অবাধ বিচরণ, ভারতের ইনস্পেস এবং বাংলাদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের যৌথ স্যাটেলাইট সমঝোতা, ডিজিটাল পার্টনারশিপ, গ্রিন পার্টনারশিপ, সমুদ্র সহযোগিতা ও সুনীল অর্থনীতি ইত্যাদি নানা নাম দিয়ে যে দশটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হলো তাতে বাংলাদেশের প্রাপ্তি শূন্য। বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণের চাইতে ভারতের কাছে শেখ হাসিনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দায়বদ্ধতা থেকে এসব সমঝোতা সই হয়েছে, তা জনগণের কাছে স্পষ্ট। এসকল চুক্তির সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণের ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতা নেই। সে কারণেই বহু পূর্বে ভারত ঘোষিত সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলারের ভারতীয় ঋণ চুক্তির (লাইন অব ক্রেডিট-এলওসি) বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার বিষয়ে এ সফর ছিল নীরব। ডলারকে পাশ কাটিয়ে ভারতীয় মুদ্রায় বাণিজ্য পরিচালনার বিষয়টি উঠে এসেছে আলোচনায়, অথচ বাংলাদেশের রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ের অন্যতম প্রধান মুদ্রাই হচ্ছে মার্কিন ডলার। এভাবে একতরফা আগ্রাসী বাণিজ্যে বাংলাদেশকে ভারতের বাজারে পরিণত করা হয়েছে। ট্যারিফ, নন-ট্যারিফ ব্যারিয়ার পরিহার করে বিপুল বাণিজ্যিক ঘাটতি কাটিয়ে ওঠার কিছুই এসব সমঝোতায় স্থান পায়নি।

‘ভারত যদি আমাদের তিস্তা প্রজেক্টটা করে দেয় তাহলে আমাদের সব সমস্যাই তো সমাধান হয়ে গেল’- প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে সাধারণ কূটনৈতিক দর কষাকষির ন্যূনতম ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিস্তার পানির অভাবে পর্যুদস্ত অসহায় মানুষের আর্তনাদকে শেখ হাসিনা ‘প্যাঁ প্যাঁ’ করা বলে আখ্যায়িত করেছেন যা সমগ্র জাতির সঙ্গে তামাশা ও হাস্য রসিকতার শামিল। আমরা সকলেই জানি, কেউ কেবলমাত্র বিরক্ত হলেই ‘প্যাঁ প্যাঁ’ না করতে বলে। একদিকে ভারত থেকে তিস্তার পানি আদায়ে ব্যর্থতা, অপরদিকে অসহায় মানুষের সঙ্গে এ নিয়ে তামাশা- এটি জাতির জন্য নিতান্তই দুঃখজনক। শেখ হাসিনা তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তিকে পুরোপুরি অবজ্ঞা করেছে। তিস্তা চুক্তি তাদের এজেন্ডাতেই স্থান পায়নি।

বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতীয় রেল ট্রানজিটের ফলে বাংলাদেশের জনগণ উপকৃত হবে- প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, এ ট্রেন বাংলাদেশের কোনো মানুষ ব্যবহার করতে পারবে না। একতরফাভাবে ভারতকে করিডোর সুবিধা দেয়ার জন্য এ চুক্তি করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশের কোনো লাভ হবে না।

তিনি বলেন, ভারতে চিকিৎসা প্রার্থীদের ভিসা সহজীকরণে ই-ভিসা, চিকিৎসাসেবায় আমাদের আরও বেশি পরনির্ভর করবে। প্রয়োজন ছিল আমাদের দেশেই চিকিৎসা সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তার কার্যকর চুক্তি। দেশের স্বাস্থ্য অবকাঠামো ও প্রশিক্ষিত জনবল তৈরির অতি প্রয়োজনীয় অগ্রাধিকারকে গুরুত্ব না দিয়ে ভারতীয় হাসপাতালে বাংলাদেশি রোগীর ভিড় বৃদ্ধির উদ্যোগ নিশ্চয়ই জনবান্ধব নয়। কোনো দেশের সরকারপ্রধান নিজ থেকে দেশের মানুষকে অন্য দেশে চিকিৎসা গ্রহণের জন্য উৎসাহিত করেন- এটি বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, পৃথিবীর অন্যতম দীর্ঘ স্থল-সীমান্ত ভারত-বাংলাদেশ। একটি দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা সে দেশের প্রতিরক্ষা নীতির প্রথম ও প্রধান অগ্রাধিকার। সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদন ও প্রশিক্ষণ সহায়তা বৃদ্ধির সহযোগিতার বিষয় ভবিষ্যতে আমাদের নিরাপত্তা সুসংহতকরণে বিরূপ প্রভাব ফেলবে মর্মে সামরিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। রাডার পরিচালনার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ যদি প্রতিবেশীর হাতে থাকে, তাহলে তা বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য যে মারাত্মক হুমকির কারণ হবে, তা বোঝার জন্য সামরিক বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই।

তিস্তা চুক্তি এজেন্ডাতে ছিল না: তিনি বলেন, আগেই বলেছি, এবারের সফরে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি এজেন্ডাতেই ছিল না। অথচ এটাই হওয়া উচিত ছিল সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। দীর্ঘদিন ধরে আমরা লক্ষ্য করছিলাম এই অনির্বাচিত সরকার তিস্তা প্রকল্প নিয়ে ভারত ও চীন উভয়ের সঙ্গেই লুকোচুরি খেলছিল। সাম্প্রতিক কালের ডামি নির্বাচনে সমর্থন আদায়ের দূরভিসন্ধি থেকে সরকার তিস্তা প্রকল্পকে টোপ হিসাবে ব্যবহার করেছে। অবৈধভাবে নির্বাচনী বৈতরণী পার হবার মাশুল হিসেবে বাংলাদেশ এখন একটি জটিল আন্তর্জাতিক ইস্যুতে নিজেদের জড়িয়ে ফেলতে যাচ্ছে বলে আমাদের আশঙ্কা, আমাদের নিরাপত্তার জন্য যেটা হতে পারে এক চরম হুমকি। আর এই সফরে তিস্তার পানি বণ্টন তথা তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরের কোনো কথা হয়নি, আছে ভারতীয় বিশেষজ্ঞ পাঠিয়ে তিস্তার পানি সংরক্ষণের বিষয়ে কী করা যায়। তিস্তায় পানিই না থাকলে পানি ব্যবস্থাপনার বিষয়টি অপ্রাসঙ্গিক নয় কি?

ফখরুল বলেন, আমরা মনে করি, ভারতের সঙ্গে অভিন্ন পানি সমস্যা নিরসনে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান অনুসৃত নীতিই হতে পারে সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের তরফে কার্যকরী পদক্ষেপ। বাংলাদেশের জন্য পানির ন্যায্য হিস্যা পাওয়া অত্যন্ত জরুরি। এ সফরে লোক দেখানো মৃতপ্রায় যৌথ নদী কমিশনের রুটিন সভা ডাকার কথা ছাড়া ফারাক্কার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এটা জনগণের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। মূলত পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা বেসিন (ৎরাবৎ ংুংঃবস) ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি সমস্যা সমাধান করতে হবে। অথচ এবারের আলোচনায় বেসিনভিত্তিক সমাধানের বিষয়টি কোনো স্থান পায়নি।

তিনি বলেন, বর্তমান চুক্তি অনুযায়ী ভারতের ট্রেন বাংলাদেশের দর্শনা দিয়ে প্রবেশ করে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি সীমান্ত দিয়ে পুনরায় ভারতে প্রবেশ করবে। এর ফলে সময়, দূরত্ব, ব্যয় কমবে। পরীক্ষামূলকভাবে বাংলাদেশ দিয়ে ভারতের রেল চলবে। ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব কর্তৃক চুক্তি সই করার পরের মাসেই ট্রায়াল রান দেয়ার ঘোষণাতেই বোঝা যায় এসব ঢাকা-দিল্লির অনেক পূর্বপরিকল্পনা-মাফিকই হচ্ছে। বাংলাদেশের স্বার্থ সুনিশ্চিত না করে ভারতকে রেল করিডোর সুবিধা প্রদান বস্তুত ইতিপূর্বে রেল, স্থল, নৌ-করিডোর ও সামুদ্রিক বন্দর ব্যবহারের চেয়ে আরও বিপজ্জনক আত্মসমর্পণ।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ ও জহির উদ্দিন স্বপন উপস্থিত ছিলেন।

Please follow and like us:
error20
fb-share-icon
fb-share-icon20

এক্সক্লুসিভ প্রধান খবর রাজনীতি

আরও পড়ুন

গত ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ

  • আর্কাইভ

    লালবাগ বিভাগের সাবেক উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমানের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত

    সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি-দখলদারির বিরুদ্ধে ডেমরায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি

    স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর বিক্ষোভ মিছিল

    গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ

    খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ও সদর উপজেলায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষে তিনজন নিহত

    দেশের সব জায়গায় সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেয়া ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম

    কুষ্টিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে হত্যা চেষ্টার মামলায় ৩ পৌর কাউন্সিলর গ্রেফতার

    ঢাবি ফজলুল হক মুসলিম হলে এক যুবককে হত্যার ঘটনায় ৫ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ

    ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত মোহাম্মদপুরে সৈকত এর শোকাহত পরিবার এর বাসায় আমরা বিএনপি পরিবার

    সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম,ও সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি হেনরীসহ পাঁচজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

    বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানকে অপহরণ, গুম ও হত্যার উদ্দেশে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে আদালতে মামলার আবেদন

    কোনোরকম মব জাস্টিস, আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া,গণপিটুনি দেয়ার মতো ঘটনা কোনোভাবে গ্রহণ করা হবে না:ড. আসিফ নজরুল

    আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই,‘একজন অন্যায় করলে তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করেন:স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

    আন্দোলন সংগ্রামে থাকা নেতাকর্মীদের পিছনে রাখার সুযোগ নেই : আমিনুল হক

    কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব যারা ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত অবশ্যই তাদর বিচারের আওতায় আনা হবে: উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম

    পিআইবি মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সাংবাদিক ফারুক ওয়াসিফ

    শ্যামল দত্ত,মোজাম্মেল হক বাবু,শাহরিয়ার কবিরের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত

    ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় ৬ জনের মৃত্যু ,হাসপাতালে ভর্তি আরও ৮৬৫ জন

    ড. শাহদীন মালিক আউট , অধ্যাপক আলী রীয়াজ ইন

    ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত শিক্ষার্থী সৈকত’র শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা জানাতে মোহাম্মদপুরে যাবে”আমরা বিএনপি পরিবার “

    আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের চেষ্টা করবো, এতটুকু বলতে পারি:সংগীতশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্‌সি

    মোহাম্মদপুরের বছিলায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার গণআন্দোলনে শহীদদের স্মরণে দোয়া-আহতদের ক্রেস্ট-কাওয়ালী জলশা অনুষ্ঠিত

    মেট্রোরেলের কাজীপাড়া স্টেশন সংস্কারে এক কোটি টাকাও খরচ হচ্ছে না

    আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে সব সদস্য এখনও যোগ দেননি তারা অপকর্মের সাথে জড়িত:স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

    সেনাবাহিনীকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান

    অযৌতিক পদায়ন ও শিক্ষক লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে কুড়িগ্রামে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ও মানববন্ধন

    দেশ-বিদেশ থেকে নানা রকমের উস্কানিতেও জনগণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ হতে দেবে না:পল্টন জনসমুদ্রে তারেক রহমান

    নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ ঘিরে ব্যাপক শোডাউন(ভিডিও সহ)

    বিএনপির সমাবেশে সাংস্কৃতিক দলের সভাপতির নেতৃত্বে অংশ গ্রহণ

    তিতাস গ্যাস পরিচালনা পর্ষদের পরিচালকের পদ থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন মতিউর রহমান চৌধুরী

    • Dhaka, Bangladesh
      শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
      SalatTime
      Fajr4:31 AM
      Sunrise5:47 AM
      Zuhr11:51 AM
      Asr3:17 PM
      Magrib5:56 PM
      Isha7:11 PM
  • সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুল হাসান বাবলু
    ই-মেইলঃ dk.kamrul@gmail.com
    ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও: মনির হোসেন
    ই-মেইলঃ fsgtcc@gmail.com
    copyright @ বাংলাদেশ দিনকাল / বিডি দিনকাল ( www.bddinkal.com )
    বিডি দিনকাল মাল্টি মিডিয়া (প্রা:) লিমিটেড প্রতিষ্ঠান।