আজ মঙ্গলবার | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১০:৪৭
মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম:- টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলায় এক লাখ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৩হাজার একর জমি বনবিভাগের। উপজেলার হতেয়া রেঞ্জের হতেয়া সদর,বাজাইল,কালমেঘা,কড়িচালা,কালিদাস,বহেড়াতলী রেঞ্জের বহেড়াতৈল সদর,কাকড়াজান(মরিচা),এমএম চালা(আন্দি),ডিবি গজারিয়া(কৈয়ামধু),কচুয়া, বাঁশতৈল রেঞ্জের নলুয়া,পাথারঘাটা,বংশীনগর বিটের কিছু অংশ এবং ধলাপাড়া রেঞ্জের ধলাপাড়া সদর,সাগরদিঘী বিটের কিছু অংশ নিয়ে সখিপুর উপজেলায় বনবিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চল গঠিত। করোনাকালীন সময়ে রাজনৈতিক প্রভাব,জনসংখ্যার আধিক্য রেকর্ড জমি স্বল্পতার কারনে প্রতিনিয়ত বনবিভাগের জমি জবর-দখল হচ্ছে। আর জবর-দখলে সহযোগিতা করছে বনবিভাগের অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীগন। বনবিভাগের জমিতে বিল্ডিং নির্মানের জন্য দুই লাখ টাকা,টিনের ঘর পোল্ট্রি ফার্ম নির্মানের জন্য ৫০হাজার থেকে এক লাখ টাকা বিট কর্মকর্তাকে ঘুষ দিতে হয়। আর সামাজিক বনায়নে অংশীদার নিয়োগ করার জন্য ৫০/৬০হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয় সংশ্লিষ্ট বিট কর্মকর্তাকে। এটা ওপেন সিক্রেট বিষয়। এসব অনিয়ম-দূর্নীতির কথা বনবিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালেও অজ্ঞাত কারনে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয় না। গত কয়েকদিনে কয়েকটি বিটে এলাকায় বনবিভাগের জমিতে ঘর উত্তোলনের বিষয়ে টাঙ্গাইল বনবিভাগের সহকারি বন সংরক্ষক(এসিএফ) মো.জামাল হোসেন তালুকদারকে বার বার জানানোর পরও তিনি কার্যকরী কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেননি। রেঞ্জ কর্মকর্তা ও বিট কর্মকর্তা মোটা অংকের ঘুষ নিয়েই ঘর উত্তোলনের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। বনবিভাগের জমি রক্ষার্থে বনবিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা ঐ দুর্নীতিবাজ রেঞ্জ ও বিট কর্মকর্তাকেই বনের জমি রক্ষা করার জন্য পাঠিয়ে দেয়। ফলে আরো দ্রæততার সাথে বনবিভাগের জমিতে ঘর উত্তোলনের কাজ সম্পন্ন করা হয়। এভাবে গত একমাসে প্রায় কোটি টাকা ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে বনবিভাগের জমি বেদখলে সহযোগিতা করেছে সংশ্লিষ্ট অসাধু রেঞ্জ ও বিট কর্মকর্তাগন। শাল-গজারি চোরাই গাছ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাচার করার জন্য ট্রাক প্রতি টাঙ্গাইল সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা এমরানকে বিকাশে ১০হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। সখিপুর বনাঞ্চলের ভিতর দেড়শতাধিক করাতকল থেকে প্রতিমাসে দুইহাজার টাকা ঘুষ নিয়ে অবাধে করাতকলে বনের গাছ কর্তন করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিট অফিসে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ওই বিটাধীন এলাকায় বনবিভাগের জমিতে ভেকু দিয়ে মাটি কর্তনের সুযোগ করে দেওয়া হয়। নিম্মে বিভিন্ন বিট এলাকায় এক মাসে ঘর উত্তোলনকারীদের নাম দেওয়া হলো-বহেড়াতলী রেঞ্জের বহেড়াতৈল সদর বিটের আমতৈল এলাকায় আ.হামেদ আলীর ছেলে আ.রশিদ এক লাখ টাকার বিনিময়ে চারিদিকে টিনের বেড়া দিয়ে টিনের ঘর নির্মান করেছে,আনোয়ার হোসেন জিন্নাহ ৮০হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে টিনের ঘর নির্মান করেছে, গড়গোবিন্দপুর মৌজায় ১০৭৩ দাগে মৃত সিরাজ ফকিরের ছেলে শাকিল আনোয়ার ২লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে বনবিভাগের জায়গায় বিল্ডিং নির্মান করছে,ডিবি গজারিয়া(কৈয়ামধু)বিটে বেতুয়া নয়াপাড়া এলাকায় সোহরাব এর নিকট থেকে ৫০হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে টিনের ঘর উত্তোলন করার সুযোগ করে দিয়েছে,কালিদাস বিটে কীর্ত্তনখোলা এলাকায় রায়হান,নুরুল ইসলাম,শাহআলম আড়াই লাখ টাকা ইছাদিঘী পশ্চিম পাড়া এলাকায় মৃত আবুল হোসেন বঙ্গুর ছেলে শামসুল হক ৭০হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে বনবিভাগের জায়গায় টিনের ঘর উত্তোলন করেছে,নলুয়া বিটে নলুয়া এলাকায় এক প্রবাসীর স্ত্রী দুই লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে নলুয়া-সখিপুর রোডের আড়ালিয়াপাড়ায় দ্বিতল ভবন নির্মান করেছে, রিপন মন্ডল ৫০হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে বনবিভাগের জায়গায় টিনের ঘর উত্তোলন করেছে,হতেয়া রেঞ্জের হতেয়া সদর বিটে চতলবাইদ এলাকায় জানু ৮০হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে বনবিভাগের জায়গায় টিনের ঘর নির্মান,বংশীনগর বিটের গাবগাছি চালায় এখতার আলীর ছেলে আলমগীর,বখতার আলী ৯০হাজার টাকা দিয়ে বনবিভাগের গাছ কর্তন করে দুইটি টিনের ঘর নির্মান,তক্তারচালা নতুনবাজারে বনবিভাগের জায়গায় দ্বিতল ভকন নির্মান করার সুযোগ করে দিয়েছে বনবিভাগের লোকজন। বনবিভাগের জায়গায় এ রকম অহরহ ঘর উত্তোলন করা হয়েছে-যা সুষ্ঠ,নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে। এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল বনবিভাগের সহকারি বন সংরক্ষক(এসিএফ) মো.জামাল হোসেন তালুকদার বলেন,বনবিভাগের জায়গা বেদখল পুনরুদ্ধারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
Dhaka, Bangladesh মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:38 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |