- প্রচ্ছদ
-
- ঢাকা
- সখিপুরে পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন
সখিপুরে পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন
প্রকাশ: ২৯ মার্চ, ২০২৩ ৪:১১ অপরাহ্ণ
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি :-টাঙ্গাইলের সখিপুরে একটি সমিতির কোষাধ্যক্ষ ও সভাপতি পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন করেছে। টাকা আত্মসাৎ এর ঘটনা একে অপরের উপর দোষ চাপিয়ে মানববন্ধন এর মাধ্যমে সাফাই গাইতেছে।সেলাই মেশিন দেওয়া হবে, খরচ হিসেবে তিন হাজার টাকা দেন। একলাখ টাকার গাভী দেওয়া হবে, অগ্রিম খরচা-পাতি লাগবে ২০ হাজার টাকা। দুই লাখ টাকার পাওয়ার টিলার পাবেন, খরচ দিতে হবে ৩০ হাজার। বড় ট্রাক্টর দিবে খরচ ৫০ হাজার! গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক ও গৃহিণীদের কাছ থেকে এভাবেই টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। তিনি টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য রুহুল আমিন। গত ২৮/০৩/২০২৩ তারিখ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার গড়বাড়ি-ভূয়াইদ সড়কে ইউপি সদস্য রুহুল আমিনের প্রতারণায়
বিক্ষুব্ধ প্রায় অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া একাধিক ব্যক্তি জানান, ইউপি সদস্য রুহুল আমিন স্থানীয় টেংরা মাদলা খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। এ সমিতির মাধ্যমে জাইকা ও এলজিইডি’র ক্ষুদ্রাকার পানিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য ও সমিতির সভাপতি হওয়ার সুবাদে রুহুল আমিন স্থানীয়দের প্রলোভন দেখাতে শুরু করেন। পরে তিনি বিদেশী সংস্থা জাইকা’র মাধ্যমে সরকারিভাবে উন্নত কৃষি যন্ত্রপাতি, সেলাই মেশিন, গাভী ও পাওয়ার টিলার দেওয়া হবে বলে প্রচার দিতে থাকেন। এতে লোভে পড়ে সমিতির প্রায় ৩০ জন সদস্য সেলাই মেশিন, গাভী ও কৃষি যন্ত্রপাতি পাওয়ার আশায় রুহুল আমিনের কাছে টাকা জমা দেন। কিন্তু প্রায় তিন বছর পেরিয়ে গেলেও হতদরিদ্র সদস্যরা কিছুই পাননি।
কোন কোন মহিলা ধার-দেনা ও সুদি করে ইউপি সদস্য রুহুল আমিনকে টাকা দিয়েছেন। এখন কিছুই না পেয়ে তাঁদের বাড়িতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ চলছে বলেও অভিযোগ করেন মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী নারীরা।
গড়বাড়ি গ্রামের গৃহবধূ আকলিমা আক্তার বলেন, এক লাখ টাকার একটি গাভী পাওয়ার আশায় রুহুল মেম্বারের কাছে ২০ হাজার টাকা দিছি। তিন বছর হয়ে গেলো, কিছুই পাই নাই।
রফিকুল ইসলাম নামের এক কৃষক বলেন, পাওয়ার টিলার দেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিছে। এখন ওই মেম্বারকে সচরাচর খোঁজেই পাওয়া যায় না।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত সমিতির কোষাধ্যক্ষ আবদুল মান্নান শিকদার বলেন, কাকড়াজান ইউনিয়নের আট-নয়টি গ্রামে বোরো চাষের জন্য সেচ প্রকল্পের আওতায় টেংরা মাদলা নামে দুটি খাল খনন করা হয়েছে। সেই খাল খনন, কৃষিযন্ত্রপাতি ও খালের পাশ দিয়ে গাছ রোপন করা বাবদ জাইকা প্রকল্প থেকে ৯৬ লাখ টাকা আসে। এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো খালের পাশে কোন গাছ রোপন করা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেংরা মাদলা খাল পানি ব্যবস্থাপনার সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুলতান হোসেন বলেন, সমিতির নাম করে বা সমিতির মাধ্যমে কোনো টাকা-পয়সা লেনদেন হয়নি। লেনদেন যদি হয়ে থাকে তা অবশ্যই সভাপতির সঙ্গে সদস্যরা ব্যক্তিগতভাবে করেছেন। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
কাকড়াজান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. দুলাল হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমি দুইপক্ষকেই আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের কথা বলেছি। কিন্তু কেউ বিষয়টি সমাধানের পথে আসছে না। এই মানববন্ধনের প্রতিবাদে বুধবার সকালে ওই সমিতির সভাপতি কাকড়াজান ইউপি সদস্য রুহুল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদ সমিতির কোষাধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান সমিতির টাকা আত্মসাৎ করেছে এ অভিযোগ এনে মানববন্ধন করেছে।
Please follow and like us:
20 20