আজ রবিবার | ২৮শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১২ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১২ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | সন্ধ্যা ৭:৫৯
বিডি দিনকাল ডেস্ক:- যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সরকারের লবিষ্ট নিয়োগে অর্থ ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘‘ যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক গ্রহীত ব্যবস্থাকে ধামাচাপা দিয়ে কর্তৃত্ববাদী অবৈধ সরকার জনগনের করের টাকায় আমেরিকায় লবিস্ট নিয়োগ করেছে যা পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বক্তব্যের মাধ্যমে স্বীকৃত। তার ভাষ্যমতে সরকারের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের জন্য তারা লবিস্ট নিয়োগ করেছে।”
‘‘ খুন, গুমের মতো অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তির দায় কিংবা ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতায় নিমজ্জিত প্রতিষ্ঠানের দায় রাষ্ট্র কিংবা সরকার কিভাবে জনগনের টাকায় ভাবমূর্তি রক্ষার নামে ব্যয় করে? বিএনপি মনে করে, জনগনের টাকায় লবিস্ট নিয়োগ করে সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো গুরুতর অপরাধে নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়টিই প্রমাণিত ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ বিএনপি মনে করে, সরকার জড়িত না থাকলে তা প্রমাণের জন্য তারা উক্ত সাত কর্মকর্তাকে আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করতো। খুন, গুম, গায়েবী মামলা দায়ের বন্ধ করে, নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে হেঁটে সরকার পদত্যাগ করতো।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ ২০০৫ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত সজীব ওয়াজেদ জয়ের সংশ্লিষ্টতায় ৯০ লক্ষ ডলার(৯ মিলিয়ন) খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করেছিল বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে। যার প্রমাণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ওয়েব পেজে আছে।”
‘‘ বিএনপি জানতে চায়, সজীব ওয়াজেদ জয়ের ওই টাকার উতস্য কি ছিলো? কিভাবে ওই টাকা বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় গিয়েছিলো?”
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে গতকাল অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তসমূহ এই সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।
‘বিএনপি লবিস্ট নয়, উন্নয়ন সহযোগীদের চিঠি দিয়েছে’
বিএনপি লবিস্ট নিয়োগ করেছে বলে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীর এহেন অভিযোগ খন্ডন করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে কথা বলেছেন সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী। যে চি্ঠির কথা বলা হয়েছে এই চিঠি দেখিয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে। আপনারা দেখুন(নিজের স্বাক্ষরিত চিঠি) ওই কাকে লেখা হয়েছিলো এবং চিঠির বিষয় বস্তু কি ছিলো? বিএনপি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার সকল ব্যক্তির সব চেয়ে নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের সবচেয়ে বড় ভ্যানগার্ড।”
‘‘ আর তাই বিএনপি তার আন্দোলন-সংগ্রামের অংশ হিসেবেই দেশের ডেভেলপমেন্ট পার্টনারদের সময় চায়, মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ চায়, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সংগ্রামে দেশী-বিদেশী সব অংশীদারদের এই সরকারের সকল অপকর্ম সম্পর্কে অবগত রাখতে চায়। বিদেশীদের কাছে লেখা আমার ওই চিঠিসমূহ কোনো লবিস্ট নিয়োগের বিষয় নয়, মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতি আহবান মাত্র।”
প্রবাসী বাংলাদেশী একজনের লবিস্ট নিয়োগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘ আপনার দেখেছেন একজন প্রবাসী বাংলাদেশী কর্তৃক লবিস্ট নিয়োগেরে বিষয়টিও আজো আমাদের দলের ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। আমরা বলতে চাই, দেশের গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে যদি কোনো প্রবাসী কোনো পদক্ষেপ কোথাও নেয়, দেশের প্রতি তার ভালোবাসার জন্য যদি কিছু করে সে পদক্ষেপের দায়িত্ব তার, বিএনপির নয়।”
‘‘ ওই পদক্ষেপকে নৈতিকভাবে সমর্থনের দায়িত্ব বাদে অন্য কোনো দায় দায়িত্ব বিএনপি বহন করে না। তবে বিশ্বের দেশে দেশে প্রবাসীদের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার জন্য এই ধরনের দেশপ্রেমিক পদক্ষেপকে বিএনপি সাদুবাদ জানায় এবং তাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে।
‘সরকার উল্টো পথে হাঁটছে’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ কোনো সভ্য গণতান্ত্রিক দেশ হলে সরকার সর্বপ্রথমেই নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত ৭ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনি কার্যধারা শুরু করতো, গ্রেফতার করতো এবং জাতিকে কলংকের দাগ থেকে উত্তরণে ক্ষমা প্রার্থনা করে জাতীয় সংকট হিসেবে সবার সহায়তায় এই পরিস্থিতির উত্তরণের চেষ্টা করতো।”
‘‘ অথচ কর্তৃত্ববাদী সরকার হাঁটছে উল্টো পথে, গুমের শিকার পরিবারের বাড়ি বাড়ি পুলিশ পাটিয়ে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে, খুনিদের রক্ষার সর্বাত্মিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যার থেকে প্রমাণ হয় সরকারের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিরা এসব খুন-গুমের সাথে জড়িত। সেজন্য বিএনপি অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ চায়, খুন, গুমের সাথে জড়িত নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সকলের নিরপেক্ষ তদন্ত পূর্বক আইনের ব্যবস্থা গ্রহন. মানবাধিকার নিশ্চিত করা দেখতে চায়, বিচার প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্র ফেরত এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়।”
নির্বাচন কমিশন গঠনে সংসদে পাস হওয়া ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২ আইনটি গ্রহনযোগ্য নয় উল্লেখ করে এটি জনগনের সাথে প্রতারণা বলে মন্তব্য করেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।
হবিগঞ্জের সাবেক পৌর মেয়র জিকে গাউসসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৪০ নেতা-কর্মীকে উন্নত আদালতের আগাম জামিন সত্বেও নিম্ন আদালত কর্তৃক কারাগারের প্রেরণের নিন্দা জানান মির্জা ফখরুল। গত ২২ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিতসার দাবিতে হবিগঞ্জের সমাবেশে প্রধান অতিথি খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে পুলিশ হামলা চায় এবং উল্টো বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
Dhaka, Bangladesh রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:43 AM |
Zuhr | 12:07 PM |
Asr | 3:10 PM |
Magrib | 5:31 PM |
Isha | 6:50 PM |