আজ সোমবার | ২২শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |৬ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | বিকাল ৩:৪৭
বিডি দিনকাল ডেস্ক: বাংলাদেশ এক ‘ভয়াবহ’ অবস্থায় বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার সকালে এক আলোচনা সভায় দেশের পরিস্থিতি তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আসম হান্নান শাহ স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে প্রয়াত এই নেতার(আসম হান্নান শাহ) সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা হয়।
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ বলে খালেদা জিয়া দণ্ডিত। কিসের দণ্ড? কিসের মামলা? যে দুই কোটির আত্মসাতের কথা বলা হয়েছে, তা এখন নয় কোটি টাকায় রূপান্তরিত হয়েছে। আসলে খালেদা জিয়াকে রাজনীতিতে রাখা যাবে না। তাকে বাইরে রাখা যাবে না। জিয়া পরিবারের কথা শুনলেই এরা ভয় পায়। তারপরও এরা বলবে দেশে আইনের শাসন আছে। আবার বলে এর অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। এদের কথা শুনলে পাগলও হাসে।
প্রয়াত হান্নান শাহ’র স্মৃতিচারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ১/১১তে যখন খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ বিএনপির সিনিয়র নেতাদের জেলে নেয়া হলো তখন তিনি নিজের জীবনবাজি রেখে যে ভূমিকা রেখেছেন জাতি তা আজীবন কৃতজ্ঞতা সাথে স্মরণ করবে। হান্নান শাহ যে গণতন্ত্রের স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা পুনরুদ্ধার করতে পারলেই পরপারে থেকেও তিনি শান্তি পাবেন।
তিনি বলেন, ‘‘ আমরা একটা ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আছি, দেশের অবস্থায় ভয়াবহ। সেই অবস্থা থেকে বেরুতে না পারলে গোটা জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। আজকে এই বিপদ, এই সংকট শুধু বিএনপির নয়। এই সংকট আজকে সমগ্র জাতির।”
‘‘ আজকে আমরা ভবিষ্যতে স্বাধীন থাকবো কিনা, আমার স্বাধীনতা থাকবে কিনা, আমার সার্বভৌমত্ব থাকবে কিনা, আমার দেশ করদ রাজ্যে পরিণত হবে কিনা, আমার গণতান্ত্রিক অধিকার থাকবে কিনা আমি আমার প্রতিনিধি আমি নির্বাচিত করতে পারবো কিনা তার সব কিছু নির্ভর করছে আগামী কয়েকটা দিনের মধ্যে।”
ফখরুল বলেন, ‘‘ আমার একটাই কথা … যারা সংগ্রাম করছেন তাদেরকে আরও বেশি করে শক্তিশালী হয়ে এই আন্দোলনকে এই সংগ্রামকে রাজপথে বিস্তৃত করে দিয়ে সাধারণ মানুষকে নামিয়ে আনতে হবে। সাধারণ মানুষকে যখন রাজপথে নামিয়ে আনতে পুরোপুরিভাবে সক্ষম হবো সেদিনই আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত হবে।”
‘দলছুট-বহিস্কৃতদের দিয়ে দল ভাঙার অপচেষ্টা’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ ওরা(ক্ষমতাসীনরা) কতটা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে… এখন দল ভাঙার চেষ্টা করে। দল কখন ভাঙতে যায় যখন সে বুঝে দূর্বল। আজকে তারা(সরকার) আমাদের দলছুট, বহিস্কৃত লোকজনকে নিয়ে আবার দল তৈরি করে ঝামেলা করতে চায়।আমরা খুব পরিস্কারভাবে বলছি, এগুলো করে কোনো লাভ হবে না।”
‘‘ মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে। মানুষ একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন চায় সব দলের অংশগ্রহনে। এর বিকল্প তারা কিছু চায় না।”
সম্প্রতি ‘তৃণমূল বিএনপি’র কাউন্সিলে বিএনপির থেকে পদত্যাগ করে বিকল্প ধারা‘র ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী এবং বিএনপি থেকে বহিস্কৃত চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তৈমুর আলম খন্দকার যোগ দিয়ে দলটির নেতৃত্বে নেন।
‘আন্দোলন দমানো যাবে না’
ফখরুল বলেন, ‘‘ আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের যে দায়িত্ব সেই দায়িত্ব আমরা পালন করছি। আমরা রাস্তায় নেমেছি, প্রায় একবছর ধরে রাস্তায় নেমেছি, এর মধ্যে আমাদের ২২ জন তরুন যুবক নেতাদের প্রাণ গেছে রাস্তায় পুলিশের গুলিতে, আমাদের অসংখ্য মামলা হয়েছে, আমাদের অসংখ্য জেলে গেছে তারপরে আমাদেরকে কখনো দমিয়ে রাখতে পারছে না, পারবে না।”
‘‘ এখন আমাদের রোড মার্চ হচ্ছে, সেই রোড মার্চগুলোতে মানুষের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহন কিনা আপনারা দেখেন। আমি নিজে একটা রোড মার্চে ছিলাম বগুড়া থেকে রাজশাহীতে… রাস্তার দুই ধারে অগনিত পুরষ-মহিলা-নারী-শিশু, স্কুলের ছেলে মেয়েরা স্কুল থেকে বেরিয়ে আসছে… তারা এই রোড মার্চকে স্বাগত জানাচ্ছে এবং এই সরকারের পতন চাচ্ছে।”
‘ওরা দেশকে নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্র বানিয়েছে’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ ওরা দেশকে ভয়াবহ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।আল-জাজিরা মিডিয়ার করোসপোডেন্ট তার সঙ্গে আমার কথা হচ্ছি কয়েকদিন আগে। তিনি বলছেন যে, আমি তো এখানে আছি, আসছি …কোনোদিন ভাবিনি যে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাব। এখন চিন্তা করতে শুরু করেছি যে, বাংলাদেশে থাকবো না। কোনো?”
‘‘ বলছেন যে, কোন সমাজ আমি একটা রেস্টুরেন্টে কথা বলতে পারবো না, এটা কোন সমাজ যে, আমি বিয়ে বাড়িতে কিংবা উতসবে গিয়ে সেখানে আমি আমার মনে কথা বলতে পারবো না। অর্থাত আমি কাদের সঙ্গে চলাফেরা করি, আমি কার সঙ্গে বসে কোন কথা বলি সেটাও এখন আমাকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়, সার্ভিলেন্সে আনা হয়। তারপরে আমার নিরাপত্তা নির্ভর করে।”
তিনি বলেন, ‘‘ আমাদের বহু বুদ্ধিজীবী এখন টেলিভিশনের টকশোতে আসেন না।কারণ কি ? তাদেরকে ভয় দেখানো হয় যে আপনারা যদি গিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেন তাহলে আপনাদের বিপদ হবে। বিপদের মধ্যের মধ্যে যে সবচাইতে টাচি জায়গায় আঘাত করতে তারা। ছেলে-মেয়েরা যদি স্কুল-কলেজে পড়ে তাদেরকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, হুমকি দেয়া হয় অদৃশ্য জায়গা থেকে… এই রাষ্ট্রে আমরা বাস করছি।
‘‘ আজকে দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা যারা স্বাধীনতা যুদ্ধে জড়িত ছিলাম আমরা এটা ভাবতেও পারি না যে, আমাদেরকে এখন গার্ডেডওয়েতে কথা বলতে হবে, আমাদেরকে এখন কোথায় যাবো, না যাবো, কার বিয়েতে যাবো, অনুষ্ঠানে যাবো কি যাবো না… এই বিষয়গুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়।”
সংগঠনের সভাপতি গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জেড খান মো: রিয়াজ উদ্দিন নসু ,সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, শ্রম বিষয়ক সহ-সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, কৃষক দলের সহসভাপতি ওমর ফারুক শাফিন, প্রয়াত আসম হান্নান শাহের ছেলে জেলা সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান, স্থানীয় নেতা খন্দকার আজিজুর রহমান পেরা, রাশেদুল হক বক্তব্য রাখেন।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:22 AM |
Sunrise | 6:42 AM |
Zuhr | 12:04 PM |
Asr | 3:06 PM |
Magrib | 5:27 PM |
Isha | 6:47 PM |