আজ শুক্রবার | ২৬শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১০ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১০ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১০:৫২
বিডি দিনকাল ডেস্ক : সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও ‘নীল নকশা‘র নির্বাচন হবে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আসন্ন সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের অবস্থা তুলে ধরে রোববার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এরকম মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন ব্যবস্থাটাকে তারা (সরকার) বেমালুম ধবংস করে দিয়েছে। দেখেন… আজকে নির্বাচনের অবস্থা কেমন? এই যে মেয়র ইলেকশন হচ্ছে… বেশির ভাগ সিটি করপোরেশনে বিরোধী দল কোনো প্রার্থী দিচ্ছেন না। সিলেটে একজন অত্যন্ত জনপ্রিয় দুইবার মেয়র হয়েছেন আরিফ(আরিফুল হক চৌধুরী) এবং সিলেটের মানুষ তাকে আবারও মেয়র হিসেবে চায়।”
‘‘ সেই আরিফ পর্যন্ত কাল(শনিবার) জনসভা করে বলেছেন যে, এই নির্বাচন কখনোই গ্রহনযোগ্য হবে না, নির্বাচনই হবে না। তারা ব্লু প্রিন্ট করে ফেলেছে। এই নির্বাচনে যাওয়ার অর্থই হয় না, এটা অর্থহীন হবে। আপনারা দেখেছেন সিলেটের মানুষের তারা চোখের পানি ফেলেছে, কেঁদেছে যে তাদের প্রিয় নেতা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না…. । তিনি(আরিফুল হক চৌধুরী) পরিস্কার করে বলেছেন, আমি মনে করি যে, এই নির্বাচন অর্থহীন হবে এবং এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হবে না। ।”
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ সব জায়গায়ই একই অবস্থা। আজকে প্রতিটি নির্বাচনই একই অবস্থার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সরকার। পুরো নির্বাচনের ব্যবস্থা ও প্রতিষ্ঠানটাকেই ধবংস করে দেয়া হয়েছে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে। এটাই হচ্ছে এই ধরনের কর্তৃত্ববাদী যারা, এই ধরনের ফ্যাসিবাদী যারা তাদের একটা হাতিয়ার। নির্বাচন একটা টুল, দেখাবে নির্বাচন, নির্বাচন নির্বাচন দেখাবে। নির্বাচন কমিশন তারা কথা বলবে, নির্বাচন কমিশনের কমিশনাররা কথা বলবেন। নির্বাচন একটা দেখানোর চেষ্টা করবে কিন্তু তারা পুরো নির্বাচনটাকে তাদের মতো করে নিয়ে যাবে।”
‘‘ এই কারণে আমরা পরিস্কার করে বলেছি, অত্যন্ত পরিস্কার, স্পষ্ট, দৃঢ় উচ্চারণ যে, এই সরকার থাকলে কোনো নির্বাচন হবে না। হাসিনা সরকার থাকলে কোনো নির্বাচন হবে না। একটা নিরপেক্ষ তত্ত্বা্বধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে।”
তিনি বলেন, ‘‘ নির্বাচন নিয়ে এমন একটা অবস্থা হয়েছে তাদের(ক্ষমতাসীন জোট) যে জোট আছে ১৪ দল, ১৪ দলের এক শরিক দলের মন্ত্রী ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির আমাদের অত্যন্ত সন্মান্বিত শ্রদ্বেয় ব্যক্তিত্ব রাশেদ খান মেনন, তিনি কিছুদিন আগে বলেছেন, পরিকল্পিত নির্বাচন চাই না। ম্যাসেজ ইজ ভেরি ক্লিয়ার যে, আওয়ামী লীগ পরিকল্পিত নির্বাচন করে, সেই নির্বাচন তিনি(রাশেদ খান মেনন) চান না।”
‘‘ আরেকজন প্রতিমন্ত্রী বলেছেন যে, এখানে মন্ত্রীরাই সিন্ডিকেট তৈরি করে, তারাই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে।এসব আমার কথা নয় তারা(সরকারের মন্ত্রীরা) বলছেন।”
রাষ্ট্র যন্ত্রকে ব্যবহার করে সরকার দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধবংস করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার প্রতিষ্ঠাতা শফিউল আলম প্র্রধানের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাগপার একাংশ।
শফিউল আলম প্রধানের মৃত্যুর পর তার প্রতিষ্ঠিত সংগঠনটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়। এক অংশের নেতৃত্বে দিচ্ছেন তার একমাত্র মেয়ে ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, আরেক অংশ খন্দকার লুতফর রহমান। দুই অংশই সরকারি বিরোধী যুগপত আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে আছে।
‘খেলাপী ঋণ প্রসঙ্গে’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ পত্রিকায় আজকে এসেছে যে, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক তার রিপোর্টে বলছে যে, বাংলাদেশ ইজ চ্যাম্পিয়ান অব ডিফল্ট লোনস, এই যে খেলাপী ঋণ এটাতে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ান হয়ে গেছে। এক শ্রীলংকা ছিলো, শ্রীলংকা থেকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ।”
‘‘ খেলাপী ঋণ কেনো হবে না? যারা ঋণ নেয় শোধ করে না। তারা তো তাদের এডভাইজার মন্ত্রী আমি নাম বলব না। হাজার হাজার কোটি টাকা তারা ঋণ নিয়ে রিসিডিউল করতেই আছেন বছরের পর বছর ধরেন। আর আমাদের ছোট খাটো ব্যবসায়ীরা তারা যদি একটা-দুইটা ডিফল্ট হয় তো তার বিরুদ্ধে মামলা হয়ে যাচ্ছে তাকে কারাগারে নিয়ে যাচ্ছে।”
তিনি বলেন, ‘‘ এই সরকারের অপকর্ম বলে শেষ করা যা্বে না। এনাফ ইজ এনাফ। এই সরকার যদি একটা মুহুর্ত আর দেশের পরিচালনায় থাকে দেশ আরও খারাপের দিকে যাবে।”
‘‘ ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ যে কমিটমেন্টগুলো করেছিলো জনগনের কাছে প্রতিশ্রুতি করেছিলো প্রত্যকটা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে। আওয়ামী লীগ হচ্ছে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গে দল, আওয়ামী লীগ হচ্ছে জনগনের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর দল, আওয়ামী লীগ হচ্ছে স্বাধীনতার বিরুদ্ধে দল।”
‘অনেক খেলা হবে’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ এখানে অনেক খেলা হচ্ছে, খেলা হবে। এই যে, উনি(ওবায়দুল কাদের) তো প্রায় বলেন খেলা হবে। সেটা হবে। অনেক চেষ্টা হবে আমাদের মধ্যে ভুলবুঝাবুঝি সৃষ্টি করানোর। যারা দেশপ্রেমিক আছেন তারা কখনো ভুল বুঝবেন না।”
‘‘ আজকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য নিয়ে আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেবকে দেশে ফিরিয়ে আনা, গণতন্ত্রের মুক্তি, বাংলাদেশের মুক্তি, ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা এবং একটা সাম্যের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে আমরা এক এবং অনঢ় হয়ে থাকব। এই আন্দোলন আমাদের শুরু হয়ে গেছে। আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায় যাওয়ার জন্য আমাদের সবাইকে সর্বশক্তি দিয়ে নামতে হবে একাত্তর সালে যেভাবে আমরা নেমেছিলাম আজকেও একইভাবে আন্দোলনে নেমে শান্তিপূর্ণভাবে এই সরকারকে সরিয়ে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা আমাদেরকেই করতে হবে।”
তিনি বলেন, ‘‘ এই কাজটা বাইর থেকে কেউ করে দেবে না। অনেকে অপেক্ষা আছেন। অপেক্ষায় থাকার কোনো কারণ নাই। আপনাকে করতে হবে, আমাদের সবাইকে করতে হবে। এটা প্রত্যেকের দায়িত্ব আছে বিশেষ করে তরুন সমাজের।”
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ বিচার বিভাগের কি অবস্থা, তারা নিয়ন্ত্রণ করছে। আপনি হাইকোর্ট থেকে জামিন নিচ্ছে, নিম্ন আদালতে গেলে সেই জামিন ক্যানসেল করে কারাগারে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। আর গায়েবী মামলার কথা আমরা বলতে বলতে হয়রান হয়ে গেছে, আর বলতে ইচ্ছা করে না।”
‘‘ খুলনাতে দেখেন একটা সভা দাঁড়াতে গিয়ে কিভাবে পুলিশ সেখানে আক্রমন করেছে। ন্যাক্কারজনক। সেখানে অসংখ্য মানুষকে গুলিবিদ্ধ করেছে, আহত করেছে এবং হয়রানি কি করেছে…. ১৩‘শ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে।”
জাগপার সভাপতি খন্দকার লুতফর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, জাগপার সাধারণ সম্পাদক এসএম শাহাদাত, প্রেসিডিয়াম সদস্য খন্দকার আবিদুর রহমান, আসম মেজবাহ উদ্দিন, হুমায়ুন কবীর প্র্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
Dhaka, Bangladesh শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:43 AM |
Zuhr | 12:06 PM |
Asr | 3:09 PM |
Magrib | 5:29 PM |
Isha | 6:49 PM |