আজ শুক্রবার | ২৬শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১০ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১০ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | সন্ধ্যা ৭:৪২
ডেস্কঃ- সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনা সংক্রামণের ভয়াবহ অবস্থার জন্য সরকারের ‘নিষ্ক্রিয়তা’কে দায়ী করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘‘ দেখেন, সীমান্তবর্তী এলাকায় যে করোনা ছড়াবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন। আমরা চিতকার করে বলেছি, চিতকার করে বলেছি। কোথাও কোনো ব্যবস্থা করে নাই।”
‘‘ আমরা ঠাকুগাঁও জেলার হাসপাতালে কোনো আইসিইউই নাই। আপনার অক্সিজেন নাই। আজকেও পত্রিকায় ছবি বেরিয়েছে রাজশাহীতে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে সবাই হাঁসফাঁস হাঁসফাঁস করছে।”
ফখরুল বলেন, ‘‘ভারতে, পশ্চিম বাংলায় এগুলো হচ্ছে- এই অবস্থা তো আমরা দেখেছি। তারপরেও স্মভিত ফিরে পায় না। ইউ আর প্রোটেক্টিং দোউস পিপলল।”
‘‘ওই চোরগুলোকে, ডাকাতগুলোকে আমরা প্রোটেক্ট করতেছি- দি ইজ ভ্যারি আনফরচুনেট।”
‘মানুষের দাঁড়াবার জায়গা নেই’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ এখন বাংলাদেশের মানুষের দাঁড়াবারও কোথাও জায়গা নেই্। একটা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কোথাও গিয়ে যে আশ্রয় পাবে, একটি রিলিফ পাবে-কোথাও জায়গা নেই। আগে আমরা সবাই মনে করতাম যে, আদালত বোধ হয় আমাদের সেই জায়গা। যে জায়গা গে্লে আমরা আশ্রয় পাবো, প্রতিকার পাবো, রিলিফ পাবো। এরকম বিভিন্নভাবে সেই রিলিফটা প্রথম দিকে আমরাও পেয়েছি। এখন দেখছি এটা শূণ্য অবস্থায় চলে গেছে।”
‘‘ রাষ্ট্র যখন নিপীড়নকারী হয়ে যায়, রাষ্ট্র যখন নির্যাতনকারী হয়ে যায়, রাষ্ট্র যখন আপনাকে ডিনাই করে আপনার লাইফগুলো থেকে এবংকি ন্যায় বিচার থেকে তখন আপনার যাওয়ার জায়গাটা কোথায় থাকে। আমরা এই কথাটা বলছি যে, সুপরিকিল্পভাবে, সুচিন্তিতভাবে বাংলাদেশকে একটা অকার্য্কর রাষ্ট্রের পরিণত করা হচ্ছে। এখানে কোনো সুশাসন থাকবেনা, এখানে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না, আমাদের সংবিধানে যেসমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না্। ওদিকে নিয়ে চলেছে রাষ্ট্রকে আজকে যারা ক্ষমতায় আছে তারা।”
তিনি বলেন, ‘‘ আজকে গণতন্ত্রের নামে গণতন্ত্রের কবর রচনা করা হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। আজকে আইনের শাসনের কথা বলে আইনকে পুরোপুরিভাবে ধবংস করা হচ্ছে। স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীকে কেন্দ্র করে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকায় আসাকে কেন্দ্র করে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, আপনারা বেশিরভাগই এটাকে বলেছেন হেফাজতের তান্ডব। আমি এই শব্দটার সাথে একেবারেই একমত নই্।”
‘‘ তান্ডব তো করেছে সরকার। অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে তারা এই তান্ডবটা করেছে এবং নাম দিয়েছে হেফাজতের তান্ডব।”
দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ তার ব্যাপারে হঠাত করে একটা মিথ্যা অভিও ক্লিফ ছাড়া হয়েছে। আপনারা ভালো করেই জানেন যেকোনো জিনিস তৈরি করা কোনো কঠিন কাজ না। সেটা তারা(সরকার) করে তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাকে বাসা থেকে গ্রেফতার করা হলো। তারপর রিমান্ডে নিয়ে গেলো। সেই রিমান্ড আর শেষ হয় না, ১০দিন, ৫দিন, ৭দিন রিমান্ড। আবার তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।”
‘‘ একজন মহিলা, অ্যাডভোকেট, রাজনীতিবিদ, কাম ফ্রম ভেরি গুড ফ্যামিলী, সোশ্যাল স্ট্যাটাস যেকোনো মানুষের চাইতে উপরে তাকে গত তিন মাস যাবত কারাগার থানা বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে চরম হয়রানি করা হচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে তার একমাত কারণ। ওর অপরাধ হচ্ছে ও মহিলা। তুমি এতো অ্যাকটিভ কেনো? তুমি হিন্দু সম্প্রদায়ের মেয়ে তুমি এতো কথা বলো কেনো আমাদের বিরুদ্ধে?”
কারাবন্দি দলের যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীরও প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘ আসলাম চৌধুরী কী অপরাধ? যেটা দেখতে পাই ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করে নাই। তাই বলে তাকে আজকে ৫ বছর জেলে রাখা হয়েছে। বিচার তো হচ্ছে, বিচার হবে।”
‘‘ আর ওই যে আপনাদের যে এডভাইজার যিনি করোনা নিয়েও আমাদের সঙ্গে প্র্রতারণা করলেন, যার হাজার হাজার কোটি টাকা লোন হয়ে আছে একটা দিনের জন্যও গ্রেপ্তার করলেন না। উপরন্তু তাকে পুরস্কার দিয়েছেন সরকারি গাড়ি-বাড়ি ব্যবহার করে।”
দলের চেয়ারপারসনখালেদা জিয়া, কেন্দ্রীয় নেতা আসলাম চৌধুরী, নিপুণ রায় চৌধুরীসহ দলের নেতৃবৃন্দের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান তিনি।
‘পুলিশকে নির্বাচনী পদক প্রদানে বিস্ময়’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ পত্রিকায় দেখলাম পুলিশকে নির্বাচনী পদক দিচ্ছে। ২০১৮, ২০১৪ ও ২০০৮ সালের জন্য। কারণ কী? কোনো দিন শুনিনি এই পৃথিবীতে যে, নির্বাচন করার জন্য পুলিশকে পদক দেয়া হয়।”
‘‘ একটাই কারণ যে, তাদেরকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়েছে। সেজন্য এসপি সাহেবরা বলেন, দেশটা আমরা চালাই। পুলিশের কনস্টেবল বলে মাছের রাজা ইলিশ আর দেশের রাজা পুলিশ।”
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘‘ আমাদের রাষ্ট্র চলছে যে জয়েন্ট ভেনচারে তাতে আমার মনে হয়- মোর দেন ৬০% পরের কর্তৃত্ব আর লেস দেন ৪০% হলো আমাদের কর্তৃত্ব। দেশের মালিক যদি জনগন না হয়, রাষ্ট্রের মালিক যদি রাষ্ট্র না হয়, রাষ্ট্র যদি জয়েন্ট ভেনচারে চলে তাহলে নিপুণ রায়দের এই দুর্দশা হবে এবং আপনাদেরও এই অবস্থা হবে-এই জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”
‘‘ নিপুণের ওপর যে অত্যাচারটা হচ্ছে জাস্ট লাইক এ কনডেম সেল। ২৪ ঘন্টার মধ্যে আধা ঘন্টা/১৫মিনিটের বেশি তার সেলের লক খোলা হয় না। তাই নিপুণের ভবিষ্যতটা যদি মুশতাক(কারাগারে মারা যাওয়া কাটুনিস্ট মুশতাক আহমেদ) মতো হয়- এটা আশ্বার্চ হওয়ার কিছু নেই। সেখানে(জেলে) ডাক্তার আছেন এরা বলবেন, তার স্বাভাবিক মৃত্যু। সুতরাং নিপুণকে কষ্ট দেয়াটা সরকারের পক্ষে যত না দায়িত্ব, তার চেয়েছে বেশি দায়িত্ব তার পাটনারকে খুশি করাটা। সেই কারণে নিপুণদের ভাগ্য এরকম হবে।”
কারাগারে পুত্রবধুর নির্যাতনে আবেগপ্রবণ কন্ঠে তিনি বলেন, ‘‘ আমি তাকে আমার কর্মীর মতো মনে করি। আই ফিল প্রাউড তার মতো কর্মী দরকারই। আর সে যদি দেশের জন্য জীবন দেয়, মুশতাকের মতো ভাগ্য বরণ করে তাহলে আমি চোখের জল ফেলবো না।”
‘‘ আমি নিপুণের মুক্তির চেয়ে দেশবাসীর মুক্তি, গণতন্ত্রের মুক্তিটাই শ্রেয় মনে করি। আমাদের খালেদা জিয়া তাই দেখে।আমাদের মরতে হবে, লড়তে হবে, দেশটাকে মুক্ত করতে হবে। দেশ মুক্ত হলে খালেদা জিয়া ও নিপুণও মুক্তি পাবে।”
কারাবন্দি নিপুণ রায় চৌধুরীর বাবা দলের ভা্ইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘ আমার মেয়ে জেলখানায় অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে আছে। তার জন্ডিস হয়েছে, সেটাও আমাদেরকে জানানো হয়নি। তার সাথে কেউকে দেখা করতে দেয়া হয় না, কথা বলতে পারি না।”
‘‘ এই যদি হয় আমাদের দেশের অবস্থা? আমরা কোথায় যাবো? আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যার হাত ধরে নিপুণ রাজনীতিতে এসেছে, তার সাথেও এরকম অবর্ণনীয় নির্যাতন করা হচ্ছে। আমরা এই অবস্থার থেকে মুক্তি চাই, আমরা তাদের নিঃশর্ত মুক্তি চাই।”
সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, নিপুণ রায় চৌধুরীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদারও বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, শেখ রবিউল আলম, শায়রুল কবির খান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
Dhaka, Bangladesh শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:43 AM |
Zuhr | 12:06 PM |
Asr | 3:09 PM |
Magrib | 5:29 PM |
Isha | 6:49 PM |