আজ মঙ্গলবার | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১১:৩১
মনির হোসেন জীবন- র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার বিরুদ্ধে যদি অভিযান পরিচালনা করা না হতো, তাহলে হলি আর্টিজানের চেয়েও বড় ধরনের কোনো নাশকতা হতে পারত। পাহাড়ে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে নতুন প্ল্যানে অভিযান হবে বলে জানান র্যাব ডিজি
র্যাব প্রধান বলেন, জঙ্গি ও রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী দমনে চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছে এলিট ফোর্স র্যাব।
যখনই জঙ্গিরা মাথাচাড়া দিয়েছে তখনই অভিযান পরিচালনা করে জঙ্গিদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছে এলিট ফোর্স র্যাব।
র্যাব হাপরিচালক বলেন, বর্তমানে সারাদেশে র্যাবের ১৫টি ব্যাটেলিয়নে পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে।
অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে র্যাব এখন অনেক বেশি স্মার্ট, সুসংহত, আত্মপ্রত্যয়ী, দৃঢ় ও অপরাধ দমনে মূল কারিগর বাহিনীতে পরিণত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন র্যাব ডিজি।
আজ রোববার সকালে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রাজধানীর কুর্মিটোলায় র্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত দরবারে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান কালে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান কামাল, সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম, পুলিশের আইজিপি, ডিএমপি পুলিশ কমিশনারসহ অন্যান্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এম খুরশীদ হোসেন বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে র্যাব জঙ্গি, জলদস্যু, মাদক, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা, চাঞ্চল্যকর মামলার আসামি গ্রেপ্তারসহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ জঙ্গি এবং রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের দমন করার জন্য কাজ করছে জানিয়ে ডিজি র্যাব বলেন, মানবাধিকার সমুন্নত রেখে স্মার্ট বাহিনী র্যাব কাজ করে যাচ্ছে। এদেশের যেকোনও ক্রাইসিসে নিরাপত্তা, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান, জঙ্গিবিরোধী অভিযান এবং যেকোনও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দুর্যোগে র্যাব সাধারণ মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাবে।
প্রধানমন্ত্রীরে প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে র্যাব ডিজি বলেন, আপনার মহানুভবতায় র্যাব ফোর্সেস স্থল, আকাশ ও নৌপথে একটি শক্তিশালী ও সক্ষম ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহলের জঙ্গিবাদের বীজ বপনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে পরিগণিত করার অপচেষ্টাকে রুখে দিয়েছে র্যাব।
র্যাব ডিজি বলেন, সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চরমপন্থিদেরও রুখে দিয়েছে। গ্রেনেড হামলা মামলার চার্জশিটভুক্ত ১৮ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
র্যাব প্রধান বলেন, এই নতুন জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে যদি অভিযান পরিচালনা করা না হতো তাহলে হলি আর্টিজানের চেয়েও বড় ধরনের কোনো নাশকতা হতে পারত। যখনই জঙ্গিরা মাথাচাড়া দিয়েছে তখন অভিযান পরিচালনা করে তাদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছে র্যাব।
মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে র্যাব দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে আসছে উল্লেখ করে এ অতিরিক্ত আইজিপি বলেন, র্যাব
অনেক বড় বড় অভিযান পরিচালনা করে ইয়াবার অনেক বড় চালান জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যুবসমাজকে মাদকের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এবং জিরো টলারেন্স নীতির আলোকে র্যাব দেশকে মাদকমুক্ত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
সুন্দরবনকে জলদস্যু মুক্ত করতে র্যাবের কার্যক্রম অব্যাহত আছে জানিয়ে র্যাব ডিজি বলেন, ইতোমধ্যে ৩২৮ জন আত্মসমর্পিত জলদস্যুকে পুনর্বাসন করতে আপনার (প্রধানমন্ত্রী) অনুদান ও জনসম্পৃক্ততা গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। যে কারণে সুন্দরবন অঞ্চলের মানুষ শান্তিতে বসবাস করছে।
র্যাব ডিজি এম খুরশীদ হোসেন বলেন, জলদস্যুমুক্ত সুন্দরবনের জন্য র্যাবের ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সাফল্যগাঁধা জনসাধারণের সামনে তুলে ধরার জন্য ‘অপারেশন সুন্দরবন’ নামের চলচ্চিত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
তিনি বলেন, র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মানুষ অনেক কথাবার্তা বলে। এসব বিষয় এখন আর নেই। আমরা চেষ্টা করছি র্যাবের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনার।
সংস্হার প্রধান বলেন, এই চলচ্চিত্র থেকে আয়ের লভ্যাংশ আত্মসমর্পণ করা জলদস্যুদের পুনর্বাসনে ব্যয় করা হচ্ছে। সিলেটে ভয়াবহ বন্যা, শৈত্যপ্রবাহসহ যেকোনো জাতীয় দুর্যোগে ফাস্ট রেস্পন্ড বাহিনী হিসেবে জনগণের আস্থা অর্জন করেছে র্যাব। এই বাহিনী যেকোনো দুর্যোগে সহায়তা প্রদানে সদা প্রস্তুত।
র্যাব জানিয়েছে, ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা ৩৩ ঘণ্টা জঙ্গি দমন অভিযানে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ-জেএমবির আমির শায়খ আব্দুর রহমানকে সিলেটের শাপলাবাগ থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। পরবর্তীতে গ্রেফতার করা হয় সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই, আতাউর রহমান সানিসহ বিপুলসংখ্যক জঙ্গিকে।
র্যাবের গণমাধ্যম শাখা বলছে, ২০০৪ সালের ২৬ মার্চ প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ লাখের বেশি সন্ত্রাসী এবং অপরাধীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। গত ১৮ বছরে ২৯২৯ জন জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২০২২ সালে ১২৪টি অভিযানে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের ১৮৫ জনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এরমধ্যে জেএমবির সদস্য রয়েছে ২৯ জন ও জামায়তুল আনসার আল হিন্দাল শারক্বিয়ার ৬৮ জন ও কেএনএফ-এর ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাবের গণমাধ্যম শাখা সূত্রে জানা গেছে, সাইবার ক্রাইমের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ৭৯১ জনকে, ৬৭৫ জলদস্যু, ১৬০ বনদস্যু, মানবপাচারের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০৬৫ জন, অপহরণের অভিযোগে ৪ হাজার ৫৩৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়। নারী ও শিশু পাচারের অভিযোগে ৩১৭ জন, যৌন হয়রানি এবং ইভটিজিংয়ের অভিযোগে ৩৮১ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
এছাড়া একই সময়ে সোনা ডাকাতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে মোট ২৭৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধর্ষণ এবং চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় ৩৮৭৩ জন, ছিনতাই মলম পার্টি অজ্ঞান পার্টির ৯৮১৮ জন, দেশি-বিদেশি জাল নোট ব্যবসায়ী এবং হুন্ডি চক্রের ২১৫৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাবের সূত্র বলছে, গাড়ি চোর চক্রের ১৪৬৭ জনকে গ্রেফতার করে র্যাব। তার মধ্যে চরমপন্থি ৫০৫ জন প্রতারণার অভিযোগে ৭ হাজার ৫২ জন, অবৈধ ভিওআইপি পরিচালনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০২৯ জন, ডাক্তার না হয়েও ডাক্তার পরিচয় বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা সেবা দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাহিনীটি ৪৩৭ জনকে গ্রেফতার করে।
এছাড়া ২০৩০ জন চাঁদাবাজ, ডাকাতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৬৩৯ জনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয় বলে জানায় এলিট ফোর্স র্যাব।
Dhaka, Bangladesh মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:38 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |