আজ সোমবার | ২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১৩ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১:১৭
বিডি দিনকাল ডেস্ক:- রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। শুক্রবার সন্ধ্যায় ৬টা ৫ মিনিটে গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফেরেন তিনি। করোনা প্রাদুর্ভাবের কথা চিন্তা করে বিএনপি চেয়ারপারসনকে বাসায় নেয়ার পরামর্শ দেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা। এদিন বিকালে এভারকেয়ার হাসপাতালের হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলন এ কথা জানান খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা। বিএনপি চেয়ারপারসনের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
খালেদা জিয়া এখনও সুস্থ হননি জানিয়ে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা বলেছেন, হার্টের যে ঝুঁকি নিয়ে খালেদা জিয়া হাসপাতালে এসেছিলেন, সেটা এখন স্থিতিশীল আছে। কিন্তু তিনি এখনও সুস্থ হননি। তবে দেশে নতুন করে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে তাকে রাখা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই তাকে বাসায় রেখে চিকিৎসা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের প্রধান হৃদরোগে বিশেষজ্ঞ ডা. শাহবুদ্দিন তালুকদার বলেন, শি ইজ ডুইং ফাইন। কিন্তু এই মুহূর্তে তিনি (খালেদা জিয়া) কোভিডে আক্রান্ত হলে ক্রিটিক্যাল পজিশনে চলে যেতে পারেন। তাই তাকে আমরা বাসায় রেখে চিকিৎসা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
প্রয়োজন হলে আবারও খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার খাদ্যনালীর যে সমস্যা ছিল, সেটি এখন কী অবস্থায় আছে তা দেখা সম্ভব হয়নি।কারণ সেই ধরনের পরীক্ষা করার মতো এই মুহূর্তে তার শারীরিক অবস্থা নেই।
খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের আরেক চিকিৎসক ডা. এফ এম সিদ্দিক বলেন, খালেদা জিয়ার ফুসফুসে পানি চলে এসেছিল। পরে বিশেষ ইনজেকশন দিয়ে সেই পানি সরানো হয়। এখন তার হার্টে পানি নেই।
তিনি আরও বলেন, আমরা রোগীকে (খালেদা জিয়া) এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে বাসা থেকে হাসপাতালে স্থানান্তর করতে পারছি। আর বাসায় প্রতিদিনই আমাদের মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক তাকে মনিটরিং করেন। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে তিনি সুস্থ না হওয়ার পরও কোভিডের কারণে তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এফ এম সিদ্দিকী বলেন, খালেদা জিয়া এখনও ঝুঁকিতে আছেন। তাকে চিকিৎসার জন্য বাইরে নেয়ার সুযোগ এখন মোটামুটিভাবে আছে। এখন পর্যন্ত বিমানে ভ্রমণ করার শারীরিক সক্ষমতা আছে। উনার সবগুলো জটিলতার চিকিৎসা করতে হলে বা সুস্থ করতে হলে যা করা দরকার তা দেশে আমরা পুরোপুরি করতে পারছি না। সেই সক্ষমতা, মেডিকেল সেটআপ আমাদের এখানে নেই। তার সুষ্ঠু চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। এজন্য আমার আগেও বলেছি, এখনও বলছি তার সুষ্ঠু চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাসের ধরন ওমিক্রন ভয়াবহ না হলেও খালেদা জিয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তার আগের যে লিভার সিরোসিস, ফুসফুসের সমস্যা, সেটি এখনও আছে। তার কোনো চিকিৎসা হয়নি। আমরা যে তার শারীরিক রক্তক্ষরণ বন্ধ করে রেখেছিলাম, সেটা এখন কি অবস্থায় আছে তা জানি না। কারণ গত ছয় মাসে সেটার ফলোআপ করতে পারিনি। এখনও তার হৃদরোগের সমস্যার কারণে এন্ডোস্কোপি করা সম্ভব হয়নি।
সংবাদ সম্মেলন শেষে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) তার চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তার জন্য দোয়া করার জন্য দেশবাসীকেও ধন্যবাদ দিয়েছেন।
বেশি অসুস্থ বোধ করায় গত ১০ জুন মধ্যরাতে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালের ভর্তি করা হয়। পরদিন ১১ জুন এনজিওগ্রাম করা হলে তার হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। তার মধ্যে একটি ব্লক ছিল ৯৫ শতাংশ। পরে সেটিতে রিং পরানো হয়। হার্টে রিং পরানোর পর খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়। ১৫ জুন তাকে সিসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত বোর্ডে এভারকেয়ার হাসপাতালের ১২জন আর বাইরের চিকিৎসক আছেন ৯জন। বোর্ডের নেতৃত্বে আছেন এভারকেয়ার হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান শাহবুদ্দিন তালুকদার।
‘বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার হার্টে বাকি দুটি ব্লকে রিং পরানোর মতো শারীরিক অবস্থা নেই’ বলে জানান তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক মোহাম্মদ মামুন। সেদিন তিনি বলেন, ‘এখনো বেগম খালেদা জিয়ার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়নি।’
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে সাময়িকভাবে মুক্তি দেওয়া হয় তাকে।
গতবছর এপ্রিলে খালেদা নিজেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। এরপর পাঁচ দফা তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
এর মধ্যে ২০২১ সালে একবার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানান চিকিৎসকরা।
Dhaka, Bangladesh রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:43 AM |
Zuhr | 12:07 PM |
Asr | 3:10 PM |
Magrib | 5:31 PM |
Isha | 6:50 PM |