আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ২:২৮
ডেস্ক:-অপরিশোধিত ঋণসহ প্রায় ১১৮ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে দীর্ঘ ১ যুগের বেশি সময় ধরে অচল অবস্থা চলছে জেলার একমাত্র ভারি শিল্প প্রতিষ্ঠান মাগুরা টেক্সটাইল মিলে। বন্ধ থাকা অবস্থায় বিটিএমসি বেশ কয়েকবার সার্ভিস চার্জ পদ্ধতিতে এটিকে চালু করার চেষ্টা চালিয়েও কোন ফল হয়নি। যে কারণে সর্বশেষ ২০০৮ সাল থেকে এটি একেবারেই অচল অবস্থায় পড়ে আছে। এই অচলাবস্থার কারণে অব্যবহৃত অবস্থায় থেকে এখান ভৌত অবকাঠামো সহ কমপক্ষে ৪০ কোটি টাকা মূল্যের যন্ত্রপাতি যেমন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তেমনি বন্ধ থাকার কারণে ব্যবস্থাপনা ব্যয় বাবদ প্রতিবছর মিলটিকে লোকসান গুনতে হচ্ছে তিন কোটি টাকা।
দাপ্তরিক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৫ সালে শহরের ভায়না এলাকায় ১৬.১৭ একর জায়গার উপর এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক ও রোমান সরকারের ৩৭ কোটি ৭৭ লাখ ৪৬ হাজার টাকা ঋণে মিলটি স্থাপিত হয়। সে সময় ৭৫১ জন শ্রমিক সমন্বয়ে ২৫ হাজার ৫৬ টাকু বিশিষ্ট মেশিন নিয়ে মিলটি চালু হয়। কিন্তু মাত্র ১৪ বছরের মাথায় ১৯৯৯ সনে ট্রেড ইউনিয়ন ও দুর্বল দূর্ণীতিগ্রস্থ ব্যবস্থাপনার কারণে ৭০ কোটি টাকা লোকসানের দায়ে বিটিএমসি মিলটি লে-অফ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। পরবর্তীতে মেসার্স কর্ণফুলী ট্রেডার্স এর মাধ্যমে এটিকে সার্ভিস চার্জ পদ্ধতিতে চালুর উদ্যোগ নিয়ে জনবল নিয়োগ করা হয়। কিন্তু অব্যাহত লোকসানের কারণে এটি আবার বন্ধ হয়ে যায় ২০০২ সালে।
পরবর্তীতে বিটিএমসি কিছুদিন পর সার্ভিস চার্জ পদ্ধতিতে এটি আবার চালুর উদ্যোগ নেয়। কিন্তু একই কারণে ২০০৫ সালে ১০৩ কোটি টাকার ঋণ মাথায় নিয়ে এটি তৃতীয়বারের মতো বন্ধ হয়ে যায়। সর্বশেষ ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রায় ১০৬ কোটি ১৪ লাখ টাকার ঋণের বোঝা নিয়ে নতুন ব্যবস্থাপনার অধীনে চতুর্থবারের মত চালু হয়। এ সময় প্রতিষ্ঠানটি সার্ভিস চার্জ এর ভিত্তিতে মাগুরার আলী ট্রেডার্সের সাথে দুই বছরের জন্য ‘নো ওয়ার্ক নো পে’ ভিত্তিতে চুক্তিবদ্ধ হয়ে প্রতি বেল সূতা উৎপাদনের মাধ্যমে ছয় হাজার টাকা টাকা আয় করত। যা থেকে মিলটির ৩শত কর্মচারীসহ কর্মকর্তাদের বেতন পরিশোধ করা হতো। কিন্তু এ দুই বছরে মিলটিতে আরো ৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা লোকসান হয়। ফলে ঋণসহ মোট লোকসানের পরিমাণ দাড়ায় প্রায় ১১৬ কোটি টাকা। যে কারণে এটি আবার বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে অপরিশোধিত ঋণসহ এই লোকসানের পরিমাণ দাড়িয়েছে ১১৮ কোটি টাকা। শুধু তাই নয় বন্ধ থাকা অবস্থায় বর্তমানে রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়, পৌরকর, এখনো পর্যন্ত নিয়োজিত থাকা স্বল্প সংখ্যক বিটিএমসি’র কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন, বিদ্যুৎ বিল ও যান্ত্রিক অবচয়ের কারণে প্রতিবছর সরকারকে প্রচুর অর্থ গচ্চা দিতে হচ্ছে। যার পরিমাণ প্রায় ৩ কোটি টাকা।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অনেকেই মিলটিকে লাভজনক করতে হলে এটিকে বিরাষ্ট্রীয়করণের পক্ষে মতামত দিয়েছেন। মাগুরা চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজ কতৃপক্ষ বলেন-‘মিলটি কোন সময়ই লাভের মুখ দেখেনি। বরং ক্ষতির অংক বেড়েছে দিনে দিনে। সেহেতু ক্ষতি পুষিয়ে আনতে বিটিএমসি’র মিলটিকে ব্যক্তি মালিকানায় দিয়ে লাভজনক করার উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।’
এ প্রসঙ্গে মিলের বর্তমান ব্যবস্থাপক (কারিগরি ) নারায়ন চন্দ্র সাহা জানান, ‘মিলটি বিরাষ্ট্রীয়করণ করার উদ্দেশ্যে প্রাইভেটাজাইশেন কমিশন ২০১০ সালের ১০ই জুন ও ২৬শে আগস্ট পরপর দু’বার দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দরপত্র না কেনায় অবস্থার কোন উন্নয়ন হয়নি।
বর্তমানে এ মিলটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনার শিট এর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে । তারা আগামী তে মিলটি চালু করার ব্যাপারে সরকারের সাথে কাজ করবে । আগামীতে যদি মিলটি চালু হয় তবে জেলার হাজারেরও বেশি শ্রমিক কর্মস্থানের সুযোগ পাবে ।
Dhaka, Bangladesh রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:16 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:57 AM |
Asr | 2:57 PM |
Magrib | 5:17 PM |
Isha | 6:38 PM |