- প্রচ্ছদ
-
- এক্সক্লুসিভ
- ২২ বছর পর অবশেষে পরিবার খুজে পেলেন সৌদি ফেরত চট্টগ্রামের মিজানুর রহমান
২২ বছর পর অবশেষে পরিবার খুজে পেলেন সৌদি ফেরত চট্টগ্রামের মিজানুর রহমান
প্রকাশ: ২০ আগস্ট, ২০২৩ ৫:২৬ অপরাহ্ণ
বিডি দিনকাল ডেস্ক:- অবশেষে পরিবার খুজে পেলেন সৌদি ফেরত চট্টগ্রামের মিজানুর রহমান। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছবি দেখে দুবাইতে থাকা তাঁর এক ভাই পরিবারকে জানান। পরে গতকাল রোববার রাতে ঢাকার আশকোনায় ব্রাকের মাইগ্রেশন সেন্টার থেকে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান ও এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সহকারী পুলিশ সুপার জান্নাতুল ফেরদৌস উপস্থিত ছিলেন। মিজানুরের এক ভাই রেজাউল করিম ও আরেক আত্মীয় আমির হামজা তাকে নিয়ে রাতে চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন।
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার জান্নাতুল ফেরদৌস সাংবাদিকদের বলেন, শুক্রবার ১৮ আগষ্ট দুপুর ১২.৩০ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের BG-136 বিমান যোগে ঢাকায় পৌঁছান মিজানুর রহমান। এ সময় তিনি এলোমেলোভাবে ঘুরছিলেন। তিনি স্বজনদের ঠিকানা বলতে পারছিলেন না। কোথায় যাবেন বলতে পারছিলেন না। এ ধরনের ঘটনায় পরিবারের সন্ধান পেতে তারা ব্রাকের সহায়তা নেন। মিজানুর রহমানকে তাঁর পরিবারের খোঁজ করার জন্য বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ শনিবার ভোরে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কাছে হস্তান্তর করেন। আজকে পরিবারের কাছে তাকে ফিরিয়ে দিতে পারায় ব্রাককে ধন্যবাদ জানান তিনি।
ব্রাকের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান জানান, শনিবার তাকে আশকোনায় ব্র্যাকে আনা হয়। মিজানুর শারীরিক ও মানসিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ নন। তাঁর বাম পায়ে গভীর ক্ষত। মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন। পাসপোর্টে জরুরী যে নম্বর দেওয় আছে সেই নম্বরে ফোন করে আমরা জেনেছি সেটি পরিবারের কারো নম্বর নয়। বরং যে দালাল পাসপোর্ট করে দিয়েছিল তাঁর নম্বর। চট্রগ্রামের পুলিশকে ছবি ও পাসপোর্টের বিস্তারিত জানাই। পরে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছবি ও পাসপোর্ট দিয়ে তাঁর পরিবারের খোঁজ করি। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলি। সেই ছবি ও পোস্ট দেখে দুবাই থেকে ওসমান গনি নামে একজন ফোন দিয়ে জানান মিজানুর তাদের ভাই।
পাসপোর্ট অনুযায়ী নাম মো: মিজানুর রহমানের বয়স ৫৭। বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার কোতোয়ালি থানার ১২০ সদরঘাট রোড। পিতার নাম আব্দুল জব্বার, মাতা: ফাতেমা বেগম, বোন: আনোয়ারা।
পরিবারের সদস্যরা জানান, মিজানুর রহমান ২০০১ সালে সৌদি আরব যাওয়ার পর থেকে আর কখনোই দেশে আসেনি। তিনি সেখানে গাড়ি চালাতেন। তিনি যে দেশে এসেছেন পরিবারের কেউ জানতো না। ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারেন মিজানুরের কথা।
মিজানুরের আত্মীয় আমির হামজা জানান, দীর্ঘ দুই দশক ধরে মিজানুরের সাথে পরিবারের যোগাযোগ নেই। কখনো দেশে আসেননি। সৌদি আরবে গাড়ি চালাতেন। তাদের বাড়ি চকরিয়ার বদরখালী। ছেলের শোকে মিজানুরের বাবা মারা গেছেন। মা বেঁচে আছেন। তারা ছয় ভাই। মিজানুরকে দেখার জন্য মা অস্থির হয়ে আছেন।
শরিফুল হাসান বলেন, সরকার বিদেশফরেত মানুষের কল্যাণে রেইজ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ড এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এজন্য সারাদেশে ৩০ টা ওয়েলফেয়ার সেন্টারে করেছে। মিজানুরের মতো মানুষেরা সেই প্রকল্পে সহায়তা পেতে পারেন। তবে ঠিকানা থাকার পরেও একজন মানুষ ঠিকানাহীন হবেন এটি ভীষণ বেদনার। প্রবাসীদের যেমন স্বজনদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা উচিত তেমনি স্বজনদেরও খোঁজ রাখা উচিত।
Please follow and like us:
20 20