- প্রচ্ছদ
-
- এক্সক্লুসিভ
- ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে রাজধানীতে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করেছে বিএনপি:নেতাকর্মীদের পদচারণায় শোভাযাত্রার প্রাঙ্গণ জনসমুদ্রে পরিণত
৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে রাজধানীতে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করেছে বিএনপি:নেতাকর্মীদের পদচারণায় শোভাযাত্রার প্রাঙ্গণ জনসমুদ্রে পরিণত
প্রকাশ: ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১:৫২ অপরাহ্ণ
বিডি দিনকাল ডেস্ক: – বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত শোভাযাত্রায় অংশ নিতে দুপুর ২টা থেকে নয়াপল্টনে জড়ো হতে শুরু করেন দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীদের পদচারণায় শোভাযাত্রার প্রাঙ্গণ জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে রাজধানীতে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করেছে বিএনপি।
শুক্রবার বিকালে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এই র্যালি শুরু করে ফকিরাপুল মোড়, নটরড্যাম কলেজ সড়ক, মতিঝিলের শাপলা চত্বর, ইত্তেফাক মোড়, হাটখোলা হয়ে রাজধানীর সুপার মার্কেটের কাছে শেষ হয়।
নাইটেঙ্গেল মোড় থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড় ,ফকিরাপুল , নটরডেম কলেজ ,বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক, ইত্তেফাক মোড় হয়ে রাজধানি মার্কেটে শোভাযাত্রাটির সম্মুখ তখনও শোভাযাত্রাটির শেষ অংশ নাইটেঙ্গেল মোড়েই অবস্থান করছিলো।
বড় আকৃতির জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকার পাশাপাশি রঙ-বেরঙের ব্যানার-ফেষ্টুন, জিয়াউর রহমান-খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের প্রতিকৃতিসহ নানা বাদ্যযন্ত্র নিয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী এই র্যালিতে অংশ নেয়।
র্যালি শুরুর আগে কাকরাইলের নাইটেঙ্গল রেস্তারাঁ মোড় থেকে শুরু করে নয়া পল্টনের দীর্ঘ সড়কে নেতা-কর্মীদের তিল পরিমান ঠাই ছিলো না। এই বর্ণাঢ্য র্যালিতে ঘোড়ার গাড়িও ছিলো।
র্যালির আগে ট্রাকের ওপর সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখার পর বিকাল ৪টায় র্যালি শুরু হয়।
নাইটেঙ্গেল মোড় থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড় ,ফকিরাপুল , নটরডেম কলেজ ,বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক, ইত্তেফাক মোড় হয়ে রাজধানি মার্কেটে শোভাযাত্রাটির সম্মুখ তখনও শোভাযাত্রাটির শেষ অংশ নাইটেঙ্গেল মোড়েই অবস্থান করছিলো।
সরজমিনে দেখা গেছে, বেলা ২টা থেকে নেতাকর্মীরা জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকার পাশাপাশি রং বেরঙের ব্যানার-ফেস্টুন এবং দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ফেস্টুনসহ নানা বাদ্যযন্ত্র নিয়ে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী শোভাযাত্রায় আসছেন। এতে ঘোড়ার গাড়িও রয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতাকর্মীদের ভিড়ও বাড়ছে। উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির বিভিন্ন ইউনিট ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা আসেন দলে দলে। এ সময় খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিসহ সরকার বিরোধী বিভিন্ন স্লোগানে শোভাযাত্রার প্রাঙ্গণ মুখরিত করেন তুলেন তারা।
শোভাযাত্রা পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। এতে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম এবং সঞ্চালনা করবেন উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক।
শোভাযাত্রা শুরু হওয়ার পূর্বে নেতা-কর্মীদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অভিনন্দন জানিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ‘‘ আমরা এই র্যালির অনুষ্ঠান করলেও আমাদের মূল মাত্র লক্ষ্য একদফা আন্দোলন। একদফা আন্দোলনের মাধ্যমে আজকে বাংলাদেশে যে ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারি সরকার এদেশের ১৮ কোটি মানুষের ওপর চেপে বসেছে তাকে বিদায় দিতে হবে… সেটাই আমাদের এক দফা আন্দোলন।”
তিনি বলেন, ‘‘ মনে রাখতে হবে বিএনপি কেনো সৃষ্টি করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনিই দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিলো, এদেশের মানুষের হাতে ভোটের অধিকার। আজকে আওয়ামী লীগ সরকার এদেশে অলিখিত বাকশাল মানুষের ওপরে হামলা-মামলা-জেল-জুলুম-অত্যাচার-নির্যাতন-গুম-খুন দিয়ে তাদের ক্ষমতাকে তারা দীর্ঘ স্থায়ী করতে চায়। কিন্তু দেশের মানুষ তা হতে দেবে না।”
‘‘ আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রদত্ত কর্মসূচি আমরা প্রতিনিয়ত অনুসরণ করে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই অগণতান্ত্রিক সরকারকে বিদায় দিয়ে এদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো ইনাশাল্লাহ। এটাই আজকে দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমাদের শপথ।”
স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসুর মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘‘ বাকশালীরা এদেশের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিলো। জিয়াউর রহমান এই দল(বিএনপি) সৃষ্টি করেছিলো গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়ার জন্য, বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়ার জন্য, ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য, আইনের শাসন ফিরিয়ে দেয়ার জন্য, গণমাধ্যমে স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য, বাক স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য। এই দল সৃষ্টি হয়েছে গণতন্ত্রের জন্য।”
‘‘ যে গণতন্ত্রের জন্য দেশনেত্রী গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শেষ পর্যন্ত লড়াই করে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে। এখন আবার আন্দোলন শুরু হয়েছে গণতন্ত্র ফিরে পাবার জন্য। এই আন্দোলনের কে নেতৃত্ব দিচ্ছেন? তারেক রহমান সাহেব। গণতন্ত্র ফিরে পাবার, ভোটাধিকার ফিরে পাবার, বাক স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরে পাবার আন্দোলনের, নিরাপত্তা ফিরে পাবার আন্দোলনের।”
তিনি বলেন, ‘‘ আজকের গণতন্ত্রের লড়াইয়ে অন্তরায় কারা কারা? এক নাম্বার অন্তরায় হচ্ছে আওয়ামী লীগের দলীয় পুলিশ বাহিনী… এদের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।আরেকটা অন্তরায় হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী বিচারক লীগ।এরা হচ্ছে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের আরেকটি অন্তরায়।”
‘‘ সকলের শুনেছেন গতকাল বাংলাদেশের বিদায়ী প্রধান বিচারপতি বলেছেন, যদি বিচার বিভাগকে রাজনীতির উর্ধেব্, রাজনীতি মুক্ত করা না যায় বাংলাদেশে অবস্থা ভয়াবহ হবে। বিদায়ী প্রধানপতি যাওয়ার সময়ে বলেছেন, আসার পরে খেয়াল ছিলো না। তবে এই বার্তা সব বিচারপতির জন্য, এই বার্তা বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য, এই বার্তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য। মনে রাখতে হবে যে বাংলাদেশ বিচার বিভাগকে, বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে, বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের তাদের রাজনীতির উর্ধেব থাকার শপথ রয়েছে। বিদায়ী প্রধান বিচারপতি সেই শপথের কথাই বলেছেন।অর্থাত তাদের সকলকে রাজনীতির উর্ধেব থাকতে হবে।”
স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘ আজকে সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রা দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এই সরকারের দল হলো… বাংলাদেশের কোটিপতিরা। আমরা এই সরকারের পরিবর্তন চাই। আমরা এদেশে কৃষক, শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ, বেকার যুবক তাদের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আর সেজন্য একদফা দাবি আদায় করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নাই।”
১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকার রমনা গ্রিনে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন ততকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। দলটি তার ৪৫ বছরে পাঁচ বার জনগনের ভোটে রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেছে।
র্যালিতে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বড় বড় প্রতিকৃতি হাতে ‘শুভ শুভ শুভদিন, বিএনপির জন্মদিন’, ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া, লও লও লও সালাম’, ‘এক জিয়া লোকান্তরে, লক্ষ জিয়া ঘরে ঘরে’, ‘মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’, ‘তারেক রহমানের বার্তা, ফয়সালা হবে রাজপথে’ ইত্যাদি শ্লোগান দেয় কর্মী-সমর্থকরা উতসবমুখর করে তোলে।
মহানগর বিএনপি, মুক্তিযোদ্ধা দল, যুব দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, কৃষক দল, মতস্যজীবী দল, তাঁতী দল, ছাত্র দল, কৃষক দল, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, জাসাস, ছাত্র দল, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে নাইটেঙ্গল রেস্তোরা থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত গোটা সড়ক মিছিলে মিছিলে জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
মহানগর বিএনপি উত্তরের আহবায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসজিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, যুব দলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, ছাত্র দলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল বক্তব্য রাখেন।
র্যালিতে বিএনপির খোলা ট্রাকের করে স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, শাহজাদা মিয়া, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, শিরিন সুলতানা, কায়সার কামাল, মীর সরাফত আলী সপু, নাসির উদ্দিন অসীম, রফিকুল ইসলাম, রাকিবুল ইসলাম বকুল, সেলিমুজ্জামান সেলিম, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েলসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা অংশ নেন।
র্যালি উপলক্ষে নয়া পল্টন থেকে হাটখোলা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। র্যালি উপলক্ষে কাকরাইল, মতিঝিল, কমলাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
Please follow and like us:
20 20