আজ বৃহস্পতিবার | ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | সন্ধ্যা ৭:২৬
বিডি দিনকাল ডেস্ক :- আজ ৫ জানুয়ারী বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাসে এক কালিমালিপ্ত দিন। সাত বছর আগে ২০১৪ সালের এই দিনে সারাদেশে ভোটার ও বিরোধী দলের প্রার্থীবিহীন একতরফা বিতর্কিত, প্রতারণামূলক, হাস্যকর ও শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ প্রহসনমুলক একদলীয় পাতানো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দেশ-বিদেশে প্রত্যাখ্যাত, জনধিকৃত একদলীয় নির্বাচন করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ আবারো সারা দুনিয়ায় নিজেদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করে। আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে গণহত্যা, খুন, গুম,নির্যাতন চালিয়েও ন্যূনতম ভোট আদায় করতে পারেনি আওয়ামী লীগ। সারাদেশে নির্বাচন কেন্দ্রগুলো ছিল একদম ফাঁকা। কোথাও কোথাও ভোটারের বদলে ভোট কেন্দ্রে চত্ষ্পুদ প্রাণীর বিচরণ দেখেছে বিশ্ববাসী।
৫ জানুয়ারীর নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ৭৩ সালের ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে নিজেদের কলংকিত রেকর্ডকে ভেঙ্গে ফেলে। স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ। স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র সোয়া এক বছরের মাথায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ জনগণের উপর বিশ্বাস রাখতে পারেনি। তাদেরকে সন্ত্রাস-ভোট ডাকাতি-কারচুপির আশ্রয় নিতে হয়েছিল। ৩০০ আসনের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিজেরা নিয়েছিল ২৯৩ আসন. মাত্র ৭টি আসন বিরোধী দলকে দেয়া হয়। ৭৩ সালের নির্বাচনে জাসদ ২৩৭টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। জাসদকে দেয়া হয়েছিল মাত্র ১টি আসন। দুর্নীতি, সন্ত্রাস গণতন্ত্র হত্যা, ভোটাধিকার হরণ, আওয়ামী লীগের ইতিহাসে নতুন নয়। দেশের ইতিহাসে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচনে বিশ^াস করে না। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনী সংস্কৃতি আওয়ামী লীগ কখনোই পাত্তা দেয় না। জনগণের ক্ষমতার প্রতি অবিশ্বাসী-অবিশ্বস্ত আওয়ামী লীগ মানুষের ভোটাধিকার হরণ করতে পরিকল্পিতভাবে ২০১১ সালে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করে দিয়েছিলো। এরপর যে কোনো উপায়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে তারা প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত এই সরকারের যতগুলো নির্বাচন হয়েছে তা ছিল একতরফা, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা, নিশিরাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করা, জালভোট প্রদান, ভোট ডাকাতি, মৃত ব্যক্তির ভোট প্রদান, গায়েবী ভোট, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়াসহ অভিনব ভোট সন্ত্রাসের বহু বিচিত্র দৃশ্য। যা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে এবং হচ্ছে।
৫ জানুয়ারী ২০১৪ সালে প্রহসনের নির্বাচন প্রায় সকল রাজনৈতিক দল বর্জন করেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা ও তাঁর দলকে ক্ষমতায় রাখার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত দৃশ্যমান হয়। তৎকালীন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব মিসেস সুজাতা সিং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদকে শেখ হাসিনার পাতানো নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য কি হুমকি দিয়েছিলেন তা এরশাদ নিজেই গণমাধ্যমে বলেছিলেন। তারপরেও জাতীয় পার্টি তাদের সকল মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করার পরেও বন্দুকের নলের মুকে ভয় দেখিয়ে কয়েকজনকে বিজয়ী ঘোষনা করে গৃহপালিত বিরোধী দলের আসনে বসানো হয়। এটির প্রমাণ এইচ টি ইমাম বলেছিলেন-আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করতে প্রত্যেক কেন্দ্রেই আমরা দলীয় চেতনার ম্যাজিষ্ট্রেটসহ প্রয়োজনীয় লোক নিয়োগ দিয়েছি। তারপরও আওয়ামী লীগের ভয় কাটেনি। যদি জনগণ অন্য কোনো প্রার্থীকে নির্বাচিত করে ফেলে, এমন আতঙ্কে নির্বাচনের আগেই সরকার গঠন করার মতো ১৫৩ জন প্রার্থীকে আওয়ামী লীগ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিজ দলীয় এমপি হিসেবে ঘোষণা করে। বাকী আসনগুলোতে শতকরা ৫ শতাংশ ভোটও পড়েনি। জনগণ সেই নির্বাচন ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছিল।
নির্বাচনের আগেই সরকার গঠন করার মতো এমন লজ্জাকর আর ন্যাক্কারজনক ও নজীরবিহীন নির্বাচন কেবলমাত্র আওয়ামী লীগের দ্বারাই সম্ভব। এ কারণেই দেশের জনগণ একটা বিষয় বিশ্বাস করে, সেটি হলো ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে-দেশে স্থিতিশীল, প্রাণবন্ত, দায়িত্বশীল, সুগ্রন্থিত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে না। গণতন্ত্র, ভোটাধিকার থাকবে না। আর দেশে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার থাকলে আওয়ামী লীগ সরকারে থাকবে না। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে ৫ জানুয়ারীর দশম সংসদ নির্বাচনের ঘৃন্য কালিমালিপ্ত পথ ধরে ২০১৮ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ভোটারদেরকে পরিত্যাগ করা হয়েছে। এই ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও দেশের প্রশাসন মিলেমিশে নব্য নাৎসীবাদে পরিণত হয়ে তার হিং¯্র দাঁতের কামড়ে সমগ্র রাষ্ট্রব্যবস্থাকে বিষময় করে তুলেছে। বাস্তবিক অর্থে নির্বাচন কমিশন, সরকার ও আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী অপকর্মের মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রধান মালিক জনগণকে পরাজিত করেছে। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ২০০৮ এবং ২০১৪ ও ২০১৮ সালের একতরফা জাতীয় নির্বাচন সবই ছিল দেশী-বিদেশী গভীর চক্রান্তের নির্বাচন।
সুপ্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ/
৫ জানুয়ারীর এ দিনে ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে জনগণকে করা হয়েছে পরাধীন। স্বাধীনভাবে ভোট প্রদানের অধিকার ও ইচ্ছাকে ধ্বংস করা হয়েছে। গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে সংবিধান,গণতন্ত্রকে।অঘোষিত বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ‘লাল ঘোড়া’ দাবড়িয়ে দেয়ার আদলে স্বৈর সরকারের সন্ত্রাসী বাহিনী, গুম-খুন বাহিনী, দখল-লুটেরা বাহিনী, ধর্ষক বাহিনী লন্ডভন্ড করে চলেছে গোটা দেশ। এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার জন্য বন্দী করে রাখা হয়েছে। গত একযুগ আওয়ামীলীগ জোর করে ক্ষমতায় বসে থেকে প্রতিটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতির উৎসব করে চলেছে।কেবল জাতীয় নির্বাচন নয়,স্থানীয় প্রশাসনের নির্বাচন থেকে শুরু করে পেশাজীবি সংগঠনের নির্বাচনেও ক্ষমতাসীনরা ভোটার বিহীন নির্বাচনের ভাইরাস সংক্রমিত করেছে।এখন ভোট মানে প্রহসন।সরকার বিরোধী দলগুলোর জন্য গ্রেফতার মামলা হামলা সন্ত্রাসের হিম আতংক।নির্বাচন মানে মুজিব কোট ধারীদের নৌকা প্রতীক লাভের আর্থিক প্রতিযোগিতা।এখন জনগন জানে,যে কোন নির্বাচনের আগে নৌকা প্রতীক টেন্ডারে তোলা হচ্ছে। যে প্রার্থী বেশী দামে কিনতে পারে তার ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে। নৌকা প্রতীক পাওয়া মানে নির্বাচিত হওয়া। এভাবে আওয়ামী লীগ এখন ভোট ডাকাতলীগে পরিণত হয়ে বাংলাদেশের অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থাকে জাদুঘরে পাঠিয়ে দিয়েছে।
সচেতন বন্ধুরা/
মধ্যরাতে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় থাকতে হচ্ছে আওয়ামী লীগকে। এখন জনরোষের ভয়ে দিনের বেলায় ভোট ডাকাতি করতেও ভয় পাচ্ছে। ধিক্কার জানাই এই আওয়ামীলীগকে। আওয়ামী লীগের কাছে নির্বাচন,গণতন্ত্র, মানবাধিকার, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব কিছুর মূল্য নেই। তাদের কাছে জবরদস্তি করে ক্ষমতায় দুর্নীতি লুটপাট করে সব চেটেপুটে খাওয়াটাই মূখ্য।
সুপ্রিয় বন্ধুরা/
একটি ষড়যন্ত্রের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসার পর থেকে গণতন্ত্রের সব দরজা-জানালা বন্ধ করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। নাগরিক স্বাধীনতার গলায় ফাঁসির দড়ি লটকিয়ে দিয়েছে। নিঃশব্দ বোবাকণ্ঠই হচ্ছে আওয়ামী বাকশালীদের কাছে প্রিয়। ক্ষমতাসীনরা উৎপীড়নের পথ বেছে নিয়ে যেভাবে গণতন্ত্রকে বিষাক্ত গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়েছেন, তার পরিণতি হবে এই সরকারের জন্য ভয়াবহ। মার্কিন রাষ্ট্রনায়ক টমাস জেফারসন বলেছেন-অন্যায় যখন আইন, তখন প্রতিরোধই একমাত্র কর্তব্য। ডযবহ রহলঁংঃরপব নবপড়সবং ষধ,ি ৎবমরংঃধহপব নবপড়সবং ফঁঃু.
বন্ধুরা,
আগামী ৩০ জানুয়ারী ২০২১ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য লাকসাম পৌর নির্বাচনে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী মোঃ বেলাল রহমান মজুমদার ও তার মনোনয়ন পত্রের সমর্থনকারী মোঃ মাহবুবুর রহমান মজুমদার মানিকের উপর লাকসাম বাজারে প্রকাশ্যে দিবালোকে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ৪০/৫০ জনের সশস্ত্র একটি দল পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে তাদেরকে গুরুতর জখম করে।
এছাড়া রির্টানিং অফিসার বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর সমর্থনকারী উপস্থিতি না থাকায় তার মনোনয়ন পত্র বাতিল ঘোষণা করেন।
এছাড়াও দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃ বেলায়েত হোসেন ও রুহুল আমীনের উপর সন্ত্রাসীরা হামলা করে চালিয়ে তাদেরকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে, নির্যাতনে বেলায়েতের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে কুমিল্লা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
একই চিত্র পাবনার সাথিয়া পৌর নির্বাচনেও। সেখানে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী মোঃ সিরাজুল ইসলামের নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা দেশী-বিদেশী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে নেতাকর্মী ও সমর্থকদেরকে গুরুতর আহত করেছে। আহতরা মূমুর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আমি আওয়ামী সন্ত্রাসীদের এধরণের পৈশাচিক ও ন্যাক্কারজনক ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি করছি। আহত নেতাকর্মীদের আশু সুস্থতা কামনা করছি।
সবাই ভাল থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।(PRESS BRIEFING OF BNP SR JOINT SEC GENERAL-05-01-21)
Dhaka, Bangladesh বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:18 AM |
Sunrise | 6:39 AM |
Zuhr | 11:59 AM |
Asr | 2:59 PM |
Magrib | 5:20 PM |
Isha | 6:40 PM |