আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ৭:৪০
কুড়িগ্রাম থেকে রফিকুল ইসলাম :-কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় গত ২০১৯-২০ অর্থ বছরে গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টি আর) সাধারণ উন্নয়ন কর্মসূচীর আওতায় ১ম ও ২য় পর্যায়ে ৭০ লাখ ৫১ হাজার ২শ ৬৫টাকা ৪৩ পয়সা বরাদ্দ দেয়া হয়। উলিপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুদ্দৌলার যোগসাজসে উক্ত টাকার ১৬ শতাংশেরও বেশি শুধুমাত্র হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বি এম আবুল হোসেনের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানেই বরাদ্দ হয়েছে। সরেজমিনে যার অধিকাংশ প্রকল্পের কোন অস্তিত্বই পাওয়া যায়নি।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রকল্পে মধ্যে হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবন সংস্কারের নামে সোয়া ৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। পরিষদ ভবন সংস্কারের নামে টি আর প্রকল্পের ১ম পর্যায়ে ২ লাখ ১২ হাজার ৫শ টাকা বরাদ্দ হলেও ২য় পর্যায়ে একই ভবনের বর্ধিত কক্ষ সংস্কারের নামে আবারও ২ লাখ ১২ হাজার ৫শ টাকা বরাদ্দ হয়। দুই পর্যায়ের বরাদ্দ সোয়া ৪ লক্ষ টাকায় শুধুমাত্র ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের চুনকাম এবং ফ্লাগ স্ট্যান্ড ছাড়া আর কোনো কাজই হয় নি। প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক অনিয়ম এবং সরেজমিনে প্রকল্পের তদারুকীর দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুদ্দৌলার যোগসাজসে উক্ত টাকার হরিলুটের ঘটনায় এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। হাতিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয নামক প্রতিষ্ঠানে সোয়া ২ লক্ষাধিক টাকা বরাদ্দ হলেও সেখানে কাজের কোনো নমুনা পাওয়া যায়নি, ওই বালিকা বিদ্যালযের প্রধান শিক্ষক চেয়ারম্যান নিজে হওয়ায় প্রতি অর্থ বছরে বিভিন্ন সংস্কার প্রকল্পের নাম ভাঙিয়ে সমুদয় টাকা লোপাট করেন বলে এলাকায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়। সোনারার পাড় স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার ঘর সংস্কার নামে প্রকল্পটিরও কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। ধরলা নদী পাড় হয়ে সেখানে দেখা যায় শুধু মাত্র পুরাতন টিনের ঘর, যা কয়েকটি খুটির উপর দাঁড়ানো। দেড় লাখ টাকার প্রকল্প দেখানো ওই মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মো: মামুনের সাথে মুখোমুখি কথা বলার চেষ্টা করলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে সটকে পড়ে।
তার ব্যবহৃত ফোন নম্বরটি বন্ধ থাকায় তার সাথে আর কথা বলা যায়নি। আরেকটি প্রকল্প হাতিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাঠ সংস্কারের নামে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৬শ ৩২টাকা ৭৭ পয়সা বরাদ্দ থাকলেও, সেখানে শুধুমাত্র কিছু বালু ছাড়া কাজের আর কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তবে একটি সুত্রে জানা যায় বালু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ওই বালুগুলো বিনামুল্যে নিয়েছেন চেয়ারম্যান বি এম আবুল হোসেন। চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেনের লালসার হাত থেকে রক্ষা পায়নি শতাধিক বছরের পুরাতন সরকার পাড়া জামে মসজিদটি।ওই মসজিদকে উপেক্ষা করে ১শ গজের মধ্যে
চিড়া খাওয়ার পাড় জামে মসজিদ নামক একটি মসজিদ নির্মাণ হয় তার নেতৃত্বে। সদ্য নির্মিত ওই মসজিদের নামেও সংস্কার দেখিয়ে ৪৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। এলাকার সাধারণ জনগণের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্য়োগে তাদের কষ্ট হলেও পরোক্ষ ভাবে চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন নিজের লাভ খোঁজেন। ফলে এলাকায় প্রচার হয়েছে যে,“দূর্যোগ ও বানে মানুষ ভাসে আর আবুল চেয়ারম্যান হাসে। ”
উপজেলার মোট বরাদ্দের ১৬ শতাংশেরও বেশি শুধু হাতিয়া ইউনিয়নে বরাদ্দ দেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুদ্দৌলা বিষয়টি এমপি মহোদয়ের এখতিয়ার বলে দাবী করেন।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুদ্দৌলা যখনই যে উপজেলায় দায়িত্বে থাকেন, তখনই প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক দূর্নীতির ঘটনার জন্ম হয়। ইতোপূর্বে রৌমারী ও নাগেশ্বরী উপজেলায় থাকা কালীন একই ভাবে টিআর প্রকল্পে ব্যাপক দূর্নীতি হয়। যা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় খবর প্রকাশ হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুদ্দৌলা উলিপুরে দায়িত্ব নেয়ার পর বিভিন্ন মহল আগে থেকেই নানা মন্তব্য করতে থাকেন। হাতিয়া ইউনিয়নে টিআর অধিকাংশ প্রকল্পের কোন অস্তিত্বই পাওয়া যায়নি।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |