আজ শনিবার | ১৩ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৮শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২৬শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১২:৫০
কামরুল হাসান বাবলু , ঢাকা : সরকার পতনের আন্দোলনে দেশের সব রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ সোমবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে এ আহ্বান জানান ফখরুল ইসলাম ।
এ সময় মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার দেশে একটি লুটপাটের রাজত্ব তৈরি করেছে। আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ দেশের মানুষের সব আশা-আকাঙ্ক্ষা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আমরা এই অনির্বাচিত সরকারকে পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এখনো সময় আছে, পদত্যাগ করুন। না হয় দেশের সচেতন মানুষ আপনাদের চলে যেতে বাধ্য করবে। আমি দেশের সব রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি, আসুন আমরা আমাদের নিজেদের অধিকার রক্ষা করার জন্য, ভোটের অধিকার রক্ষা করার জন্য, দেশে থাকার জন্য এই সরকারকে হটানোর জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন শুরু করি।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশের সবচেয়ে ঘৃণিত ও নিকৃষ্ট প্রতিষ্ঠান। আপানারা দেখেছেন, আমরা বারবার এই নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ জানিয়েছি। বাংলাদেশে যারা বুদ্ধিজীবী আছেন, যারা দেশের রাজনীতি পর্যবেক্ষণ করেন এবং বিদেশের যারা বাংলাদেশের রাজনীতি পর্যবেক্ষণ করেন, তাঁরা বলেছেন, এই নির্বাচন কমিশন থাকাকালে বাংলাদেশে কখনোই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, এ নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয় আওয়ামী লীগের পূর্ণ সমর্থন নিয়ে। এই নির্বাচন কমিশন কখনোই সুষ্ঠুভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। এ নির্বাচন কমিশন তাদের দায়িত্ব পালন করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।’
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের মতো এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো একইভাবে তারা (সরকার) লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। গতকাল গাজীপুরে আমাদের বিএনপির প্রার্থীসহ অনেকেই হামলার শিকার হয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন কিছুই করতে পারেনি। যখন ভোট চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়, তারপর প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে জিজ্ঞেস করলে উনি বলেন, সুষ্ঠু ভোট হয়েছে। আমরা আজকের এই সমাবেশের মধ্যদিয়ে পরিষ্কারভাবে জানাতে চাই, আপনাদের যদি ন্যূনতম কোনো লজ্জা থাকে, আপনাদের এখনই, এই মুহূর্তে পদত্যাগ করা উচিত। অন্যথায় দেশের মানুষ আপনাদের এই পথ থেকে সরাতে বাধ্য।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘২০০৭ সালের এই জানুয়ারি মাসের ১১ তারিখে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মধ্যদিয়ে একটা অবৈধ ও বেআইনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয়েছিল। যারা অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ও সুচিন্তিতভাবে বাংলাদেশে বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়াকে সম্পন্ন করেছে। সেসময় দেশনেত্রী খালেদা জিয়াসহ অসংখ্য রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হচ্ছে, আজ এই আওয়ামী লীগ সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে যোগসাজশ করে একইভাবে দেশে বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। আজ বিএনপির ২৫ লাখেরও বেশি মানুষের ওপর মামলা রয়েছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আজ বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পক্ষে যারা কথা বলেন, তাদের অনেককে গুম করে ফেলা হয়েছে। অসংখ্য মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এখন স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে সব জায়গায় গায়ের জোরে কেন্দ্র দখল করে নিয়ে যাচ্ছে এই সরকার। আজকে দেশের কোথাও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের পরিবেশ নেই। সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে মানুষের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। মোট কথা, তারা এই দেশে একটি একদলীয় শাসনব্যবস্থা তৈরি করেছে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্যই দেশের সব প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে।’
ফখরুল বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে হেরে গিয়েও তার একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য জোর করে ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আমেরিকার প্রতিষ্ঠানগুলো, তাদের বিচার বিভাগ, পার্লামেন্ট ট্রাম্পের অপচেষ্টাকে কঠোরভাবে দমন করার কারণেই আজ আমেরিকায় গণতন্ত্র ধ্বংস করা যায়নি। সেখানে গণতন্ত্রের জয় হয়েছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মানুষ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছিল। সবার একটা আকাঙ্ক্ষা ছিল, দেশে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হবে। আকাঙ্ক্ষা ছিল, এদেশের মানুষ মুক্ত সমাজে বসবাস করবে। কিন্তু এই সরকার সব শেষ করে দিয়েছে।’
বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন,প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার এক চোখ কানা মন্তব্য করে তিনি আরও বলেছেন ‘এই যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার এক চোখ কানা ও এক কান টসা। উনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও প্রধানমন্ত্রীকে শুধু দেখতে পান। কিন্তু জনগণ ভোটার-নির্বাচন, নির্বাচনে ডাকাতি, কারচুপি জালিয়াতি দিনের ভোট রাতে এটা উনি দেখতে পান না। এইটা যদি তিনি দেখতে পেতেন তাহলে নির্বাচন ব্যবস্থা যে ধ্বংস হয়ে গেছে, ভোট ধ্বংস হয়ে গেছে সুস্থ ভোট ভোটারদেরকে নিরুদ্দেশে পাঠানো হয়েছে। এইটা দেশে হতো না।’
বিক্ষোভ সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম সচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন,বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, কৃষকদলের সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, যুবদল মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, মৎসজীবি দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম ,ইডেন কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব সানজিদা ইয়াসমিন তুলি প্রমুখ।
এদিকে নির্ধারিত সময়ের আগেই উত্তর ,দক্ষিণ বিএনপির এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মীরা উপস্থিত হন ।
Dhaka, Bangladesh শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:18 AM |
Sunrise | 6:39 AM |
Zuhr | 12:00 PM |
Asr | 3:00 PM |
Magrib | 5:20 PM |
Isha | 6:41 PM |