আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ৩:৫৫

শিরোনাম :

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সকল মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা হবে:পঞ্চগড়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান: একের পর এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক গণমাধ্যমের সামনে নিজের সম্পদ বিবরণী ও আয় ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ করেছেন দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন শেখ হাসিনা ও তার ছেলে জয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগের তদন্ত শুরু উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন পাকিস্তানের বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী রাহাত ফাতেহ আলী খান জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলার প্রধান আসামি পলাতক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির আবেদন গত ১৫ বছর গণমাধ্যম জনগণের কথা বলেনি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ডিসেম্বরের প্রথম ২১ দিনে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিভিন্ন অনিয়ম ও রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ‘ডিএনসিসি’তে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের (জন বিভাগ) সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গণি

ভারতকে ছেড়ে চীনের ঘনিষ্ঠ হচ্ছে বাংলাদেশ?

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ৬:২৮ অপরাহ্ণ

বিডি দিনকাল,ডেস্ক :-বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞগণ বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অবনতির যে জল্পনা, তা অতিরঞ্জিত। দি ডিপ্লোম্যাটে ২৩শে সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে নিবন্ধ লিখেছেন, ঢাকাভিত্তিক বাংলাদেশি সাংবাদিক মাসুম বিল্লাহ।

আপনি যদি ভারতীয় এবং বাংলাদেশি সংবাদপত্রের একজন আগ্রহী পাঠক হন, তাহলে আপনি দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যকার সংকট নিয়ে অনেক ধরনের প্রতিবেদন দেখবেন। মন্তব্য প্রতিবেদনও দেখবেন। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যকার একটি টেলিফোন আলোচনার পরে এই মিডিয়া ঝড়ের সূচনা ঘটে। ওই টেলিফোনের পরে একটি দাবি সামনে উঠে আসে যে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূতকে কয়েক মাস ধরে সাক্ষাৎ দেননি। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী আসলে কোনো বিদেশি রাষ্ট্রদূতকে সাক্ষাৎ দেননি।

ভারতীয় সংবাদপত্রগুলো এই তথ্য প্রচার করতে শুরু করে যে, চীন নানাভাবে বাংলাদেশে তাদের জায়গা করে নিচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে তারা বলছেন যে, বাংলাদেশি পণ্যের উপর ৯৭ ভাগ হারে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়া হয়েছে । তাকেও বলা হচ্ছে যে, এটা আসলে একটা ‘খয়রাতি’ বা দাতব্য প্রকল্প। জুলাই মাসের শেষদিকে সাবেক জ্যেষ্ঠ ভারতীয় রাষ্ট্রদূত পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় একটি নিবন্ধ লিখেছিলন। সেই নিবন্ধের শিরোনাম ছিল: বাংলাদেশ এখন চীনা রাডারে।

হিন্দুস্তান টাইমস একটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করে। তার শিরোনাম ছিল: ফোকাস অন বাংলাদেশ। ওই সম্পাদকীয়তে সতর্ক করে দেয়া হয়েছিল যে, ভুল নীতি অনুসরণের কারণে ভারত এক বন্ধু প্রতিবেশী হারাতে বসেছে। বাংলাদেশেও অন্তত দুজন সংবাদপত্রের সম্পাদক নিবন্ধ লিখেছেন এবং সেখানে তারা দেখিয়েছেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কি করে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের কাছে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।

এসব প্রতিবেদন এবং মন্তব্য প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে নেপাল-ভারত সংকটের মতই একটা বিষয়ে পরিণত করেছে। বাংলাদেশ যেন ভারতীয় প্রভাব থেকে সরে গিয়ে চীনের কব্জাবন্দী হতে চলেছে । কিন্তু প্রশ্ন হল, এই যে জল্পনা কল্পনা করা হচ্ছে, তা কতটা বাস্তবসম্মত?

বাংলাদেশি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশেষজ্ঞগণ অবশ্য ভিন্ন দাবি করছেন। লাইলুফার ইয়াসমিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক। তার কথায়, বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মধ্যে চীনকে টেনে আনা একটা ‘হাইপ’ সৃষ্টির বিষয়। তার কথায়, বাংলাদেশের একটা স্বাধীন নীতি অনুসরণ করা উচিত। যার আওতায় সে ভারত, চীন, আমেরিকা এবং অন্যান্য শক্তিগুলোর সঙ্গে আলাদাভাবে বোঝাপড়া করতে পারে।’

সাহাব এনাম খান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক । তিনি বিশ্বাস করেন, উভয় দেশের মিডিয়া বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সম্ভাব্য ঘাটতি নিয়ে যে লেখালেখি করেছে, তাতে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে। অধ্যাপক খানের মতে, বৈদেশিক সম্পর্ক কোন একটা আবেগের জায়গা থেকে পরিচালিত হয় না। এখানে জাতীয় স্বার্থের বিষয় থাকে।

যাইহোক, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ঢাকা সফরের পর মিডিয়ার অনুমান এবং যারা মতামত দিয়েছিলেন, সেই বিষয়ে একটা নতুন চূড়ায় পোঁছায়। কিছু বিশ্লেষণে এটাই বেরিয়ে এসেছে যে, কি করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হোটেলে মি. শ্রীংলাকে কয়েক ঘণ্টা বসিয়ে রেখেছিলেন এবং সংশ্লিষ্ট আরো কিছু খুঁটিনাটি বিষয়ের বিস্তারিত প্রকাশ করেছে। যার উদ্দেশ্য হচ্ছে এটাই দেখানো যে, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মধ্যে একটা সম্ভাব্য সংঘাত তৈরি হয়েছে।

আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সাবেক বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবিরকে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি কীভাবে বিষয়টিকে দেখেন। তিনি একসময় ভারতের কলকাতায় ডেপুটি হাই কমিশনারের দায়িত্বও পালন করেছেন।

রাষ্ট্রদূত কবির প্রকারান্তরে উক্ত শিক্ষাবিদদের মনোভাবকেই সমর্থন করলেন । তার কথায়, আমার এটাই বলা উচিত যে, আমরা খুব বেশি কল্পনাপ্রবণ হয়ে পড়েছি।

রাষ্ট্রদূত কবির আরো বলেছেন, আমরা প্রতিবেশী। তাই আমাদের মধ্যে নানা ধরনের সহযোগিতা থাকবে । আবার একই সঙ্গে কিছু চ্যালেঞ্জও থাকবে। আমরা যদি গত ১০ বছরের বৃহত্তর দৃশ্যপটের দিকে তাকাই, তাহলে আমরা দেখতে পাই যে, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক অনেক বিস্তৃত হয়েছে। অনেক মাত্রায় গভীরতম হয়েছে। সুতরাং এই বৃহত্তর দৃশ্যপটের দিকে তাকালে কিন্তু আমরা এই পরিবর্তনটা, এই অগ্রগতি আমরা লক্ষ্য করবো।

বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের অবশ্যই বাণিজ্য সম্পর্কের বিকাশ ঘটছে। বাংলাদেশ যেহেতু তার বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ আশা করছে ক্রমবর্ধমানহারে, তাই সেখানে চীন প্রবেশ করছে। ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাংলাদেশ সফর করেন। এসময় বেইজিং বাংলাদেশকে বিস্ময়করভাবে ২৪ মিলিয়ন ডলারের ঋণ দিতে সম্মত হয়। তবে ওই পরিমাণ অর্থ প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা কিন্তু একটা আলোচনার বিষয়। ২০১৬ সাল থেকে চীন অব্যাহতভাবে বাংলাদেশকে আর্থিকভাবে সহায়তা দিয়ে চলেছে। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই ঢাকার সঙ্গে বেইজিংয়ের সম্পর্ক শক্তিশালী হয়েছে। বিশেষ করে গত চার বছর সময়ে।

অধ্যাপক ইয়াসমীন অবশ্য আর একটু পেছনে ফিরতে চান। তিনি বলেন, আমরা যদি লক্ষ করি তাহলে দেখব যে, ২০১৬ সাল থেকেই চীন বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদারে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ কোন নতুন ঘটনা নয়। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্য সম্পর্ক মি. শি-র ঢাকা সফরের সময় শক্তিশালী হয়েছিল ব্যাস এটুকুই। বাংলাদেশ এবং চীনের মধ্যকার যে সম্পর্কের উন্নয়ন, সেটা কতিপয় পর্যবেক্ষকের মতে, সেটা এসেছে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে খাটো করার বিনিময়ে, এই ধারণাটি কেবল একটা গ্রহণযোগ্যতা পেতে পারে, আমরা যদি বৃহত্তর প্রেক্ষাপট থেকে দেখি যে, দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্কের কিভাবে বিকাশ ঘটেছে। অধ্যাপক খান বলেছেন, এই অঞ্চলে যা ঘটে চলেছে তা আসলে একটা যৌক্তিক পরিবর্তন। এর ভিত্তি হলো জাতীয় স্বার্থ এবং ভূ-রাজনৈতিক প্রয়োজনীয়তা। বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল তার জাতীয় স্বার্থ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির স্বার্থকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নেয়া এবং এটা সে সব সময়ের জন্যই তার এই চাওয়াটা থাকবে। আর সে কারণেই বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাঁর অর্থপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলবে।

তবে এসব কথা সত্ত্বেও এটাও খুবই পরিষ্কার যে, নয়াদিল্লি সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে তার তরফে একটা অতিরিক্ত সংরক্ষণবাদ বা ওভারপ্রটেক্টিভ মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ দেখিয়েছে।
ভারত-চীন সম্পর্কে যেটা পূর্ব লাদাখে ঘটেছে, সেখানে একটা সংঘাত তৈরি হয়। মধ্য জুনে। চীনের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়। একইসঙ্গে নেপালের সঙ্গে উত্তেজনার পারদ চড়ে। এই প্রেক্ষাপটে ভারত দেখতে পায় যে, প্রতিবেশীদের দিক থেকে অন্তত অংশত হলেও সে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অবশ্য এটার কৃতিত্ব এই অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব। বাংলাদেশ-ভারতের বাণিজ্যিক এবং রাজনৈতিক স্বার্থ বিবেচনায় নয়াদিল্লি আশা করে যে, চীনের সঙ্গে তার চলমান সংঘাতে বাংলাদেশ তার পক্ষে থাকবে । কিন্তু নয়াদিল্লি বিস্মিত হয়ে দেখল, ঢাকা কোন পক্ষ অবলম্বন করল না। বরং এর পরিবর্তে সে একটা নিরপেক্ষ অবস্থান নিল। এবং বিরোধপূর্ণ ইস্যুর একটা শান্তিপূর্ণ সমাধান চাইল। এর ফল হিসেবে রাষ্ট্রদূত কবিরের মতে গত জুন থেকে ভারত তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে অধিক সংবেদনশিল হয়ে উঠেছে।

ভারতের প্রতিবেশীদের মধ্যে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের আলোকে এটা কি বলা যায় যে, শ্রিংলা ঢাকায় যে সম্প্রতি এলেন, তার মধ্য দিয়ে আসলে চীনের কাছে সে তার প্রতিবেশীদের হারাচ্ছে, এই ভীতিটা কি প্রকাশ পেল? অধ্যাপক খান কিন্তু তা মনে করেন না । তিনি বরং এর পরিবর্তে উল্লেখ করতে চান যে, ভারতের নিকটবর্তী প্রতিবেশীদের সঙ্গে তার মূল চিন্তার বিষয় বাণিজ্য এবং উন্নয়ন। আর রয়েছে আন্তঃসীমান্ত নিরাপত্তা উদ্বেগ । খানের কথায়, অন্য কোন দেশ কার দিকে ঝুঁকে গেল, সেটা ভারতের কাছে ইস্যু নয় । এটা উন্নয়নশীল দেশগুলোর একটা স্বাভাবিক চাহিদা এবং সে ক্ষেত্রে এসব ব্যতিক্রম নয় । ভারতীয় অর্থনীতি এবং তার পররাষ্ট্রনীতিকে এই বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে।

এখন কথা হল যদিও তারা ঢাকা দিল্লির মধ্যে দূরত্ব বাড়ার জল্পনা-কল্পনাকে নাকচ করে দিচ্ছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের প্রতি ভারতের মনোভাবে একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করছেন। গত জুন থেকে ভারত রোহিঙ্গা ইস্যুতে তার অবস্থানে একটা পরিবর্তন এনেছে । মিয়ানমারপন্থী একটা নির্দিষ্ট অবস্থানের পরিবর্তে ভারত এখন বলছে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের যে উদ্বেগ রয়েছে, তার দিকে অবশ্যই নজর দিতে হবে । বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে, এই পরিবর্তন শুধু একটি ক্ষেত্রে নয়, বাংলাদেশের প্রতি ভারত তার বিদেশনীতিতে পরিবর্তন আনছে।

তাই প্রশ্ন হল, নেপালের সঙ্গে তাঁর বোঝাপড়া করা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা কি একটা নতুন ভারতকে দেখতে পাচ্ছি? যদি তাই ঘটে, তাহলে কি বাংলাদেশের এখন এই ক্ষমতা বাড়ালো, যাতে করে সে এখন তিস্তা নদীর পানি ভাগাভাগিতে একটা চুক্তি করে ফেলতে পারবে ? দু’দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ মিটিয়ে ফেলতে পারবে। অধ্যাপক ইয়াসমিন এর উত্তরে বলেছেন, আগের তুলনায় বাংলাদেশের দরকষাকষির ক্ষমতা যে বৃদ্ধি পেয়েছে তা আমি মনে করি । কিন্তু তিনি একইসঙ্গে বাস্তবসম্মত উদ্বেগ উল্লেখ করতে চান যে, ভারতের সঙ্গে তিস্তা নদীর মত যতো অনিষ্পন্ন বিরোধ রয়েছে, সেগুলো সমাধান করা এখনো কঠিন থেকে যাবে । এর কারণ এসব বিষয়ের সঙ্গে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি যুক্ত রয়েছে। রাষ্ট্রদূত কবির অবশ্য এ বিষয়ে বলেছেন, প্রতিবেশীর অবস্থান সম্পর্কে বাংলাদেশকে সেনসিটিভ হতে হবে।

রাষ্ট্রদূত কবির আরো বলেছেন, দুই ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশীর মধ্যকার সম্পর্কের বহুমুখী স্তর রয়েছে । সম্পর্কের নানা মাত্রা রয়েছে । সুতরাং পরস্পরের কি অগ্রাধিকার প্রয়োজন এবং প্রত্যাশা, সেদিকে উভয়কে সংবেদনশীল হতে হবে। আমাদেরকে একত্রে বাস করতে হবে। সেটাই জীবনের বাস্তবতা । আমরা যত সম্পর্ক ভালো করতে পারি, সেটা আমাদের উভয়ের জন্য ভালো হবে।

কিন্তু প্রশ্ন হলো, ভবিষ্যৎ কোথায় ? চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে কি বেইজিংয়ের দিকে ঝুকে যাবে? এ ধরনের প্রশ্নে অবশ্য অধ্যাপক খান উদ্বিগ্ন হতে রাজি নন। তাঁর কথায়, বাংলাদেশ কোন একটি দেশের দিকে ঝুঁকছে না। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। আবার চীন সমানভাবে বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তার করছে। তারা ভারতীয় অর্থনীতিতেও প্রভাব বিস্তার করছে ।

ইয়াসমিন উল্লেখ করেছেন, যেসব বিবৃতিতে এমন দাবি করা হচ্ছে যে, বাংলাদেশ চীনের দিকে ক্রমাগত ঝুকে যাচ্ছে , যেমনটা ভারতের অন্যান্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো সরে যাচ্ছে, এটা আসলে আমি বলব, একটা ‘নিরঙ্কুশ সেন্সেশন’ তৈরি করার জন্য এটা করা হচ্ছে। ইয়াসমিনের কথায়, আমি মনে করি এধরনের সংবেদনশীল বিবৃতি বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের ঐতিহাসিক উন্নয়নকে বিবেচনায় নিয়ে করা হচ্ছে না। তবে উল্লেখিত পর্যবেক্ষণ সত্বেও বাংলাদেশের সঙ্গে যে ভারত তার সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে একটা উদ্বেগ এবং একটা ‘ওভার প্রটেক্টিভনেস’ দেখিয়ে চলছে, তা অস্বীকার করা যাবে না। এমন কিছু কি রয়েছে, যা ঢাকার প্রতি নয়াদিল্লিকে উদ্বিগ্ন করে তুলতে পারে? এর উত্তরে রাষ্ট্রদূত কবির বলেছেন, ‘মাঝেমধ্যে এধরনের একটা উচ্চবাচ্য হতে পারে । মাঝে মধ্যে একটা ব্যবধানের বিষয়ও তৈরি হতে পারে । যেভাবে মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কে ঘটে। একটা ঘাটতি পড়ে। অনেক সময় সেভাবে রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্কে কখনো কখনো ওঠানামা করতে পারে। কিন্তু আমি বৃহত্তর দৃশ্যকল্প হারাতে চাই না । কারণ আমি সব ইস্যুগুলোকেই তো চোখের সামনে দেখতে পাই । (-মাসুম বিল্লাহ ঢাকাভিত্তিক একজন সাংবাদিক। দি ডিপ্লোম্যাট থেকে অনুবাদ)

Please follow and like us:
error20
fb-share-icon
fb-share-icon20

এক্সক্লুসিভ জাতীয় প্রধান খবর

আরও পড়ুন

গত ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ

  • আর্কাইভ

    তারেক রহমান মানে অন্ধকারের এক বাতি ঘর : বগুড়ায় আতিকুর রহমান রুমন

    বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সকল মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা হবে:পঞ্চগড়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল

    অনূর্ধ্ব-১৯ নারী এশিয়া কাপের ফাইনালে ৪১ রানে হেরেছে বাংলাদেশ

    নিরাপদ বাংলাদেশ গঠনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে ৪ দফা দাবি জানিয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট

    যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান: একের পর এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক

    গণমাধ্যমের সামনে নিজের সম্পদ বিবরণী ও আয় ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ করেছেন দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন

    শেখ হাসিনা ও তার ছেলে জয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগের তদন্ত শুরু

    উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন পাকিস্তানের বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী রাহাত ফাতেহ আলী খান

    জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলার প্রধান আসামি পলাতক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির আবেদন

    গত ১৫ বছর গণমাধ্যম জনগণের কথা বলেনি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম

    ডিসেম্বরের প্রথম ২১ দিনে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা

    প্রত্যাশা পূরণে পুলিশ ও জনগণ একে অপরের পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে কাজ করবে:অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ মাসুদ করিম

    বিভিন্ন অনিয়ম ও রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ‘ডিএনসিসি’তে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে

    কুড়িগ্রাম জেলার সার্বিক উন্নয়নে চর বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

    স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের (জন বিভাগ) সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গণি

    রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের ৩১ দফা বাস্তবায়নে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র ৮টি সাংগঠনিক “জোন কমিটি” গঠন

    জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তবর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে: আমিনুল হক(ভিডিও সহ)

    আওয়ামী স্বৈরাচারের দোসররা দূর্নীতি করে সেকেন্ড হোম বানিয়ে পালিয়ে আছে : আমিনুল হক

    ‘বিগত ১৫ বছরের তথ্য নিয়ে নানা বিভ্রাট রয়েছে, তথ্য লুকানোর চেষ্টা করা হয়েছে:অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ

    ‘চাঁদাবাজির কারণে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে ,সেই কারণে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী

    “প্রথম বাংলাদেশ-আমার শেষ বাংলাদেশ”

    আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায় বিএনপি’র সমমনা দল ও জোট

    কুষ্টিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে মাদক ব্যবসায়ী ৩ বছরের সাজাপ্রাপ্ত ১ জন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেফতার

    কুষ্টিয়ায় চেয়ারম্যান পুত্রের উপর জাসদ গণবাহিনীর হামলা

    আগামীকাল উত্তরা পর্ব থানা বিএনপির কর্মিসভা ও ৩১ দফার কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে:প্রধান অতিথি থাকছেন আহ্বায়ক আমিনুল

    তারেক রহমানের নির্দেশনায় গাবতলী উপজেলার পদ্মপাড়া গ্রামে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্র বিতরণ করবে “কৃষিবিদবৃন্দ”

    ইতালিতে বাংলাদেশের মুখ উজ্জল করলো কিশোরগঞ্জের সায়ক মিয়া

    টঙ্গীতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বেইলি ব্রিজ ভেঙে পাথর বোঝাই ট্রাক তুরাগ নদীতে

    “যুবলীগ নেতা মোয়াজ্জেম হোসেনের সহযোগী সন্ত্রাসী পিস্তল জাহিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট”

    অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ নারী দল

    • Dhaka, Bangladesh
      রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
      SalatTime
      Fajr5:16 AM
      Sunrise6:37 AM
      Zuhr11:57 AM
      Asr2:57 PM
      Magrib5:17 PM
      Isha6:38 PM
  • সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুল হাসান বাবলু
    ই-মেইলঃ dk.kamrul@gmail.com
    copyright @ বাংলাদেশ দিনকাল / বিডি দিনকাল ( www.bddinkal.com )
    বিডি দিনকাল মাল্টি মিডিয়া (প্রা:) লিমিটেড প্রতিষ্ঠান।