আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | ভোর ৫:৩৬
মাদারীপুর : মাদারীপুরের কালকিনিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় গতকাল রোববার সন্ধ্যায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। এই মামলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী এসএম হানিফের ভাতিজা আয়নাল সরদার বাদী হয়ে ৫৫ জনের নাম এজাহারে উল্লেখ করেন। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে এই মামলায় আজ সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত একজনকেও গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।
স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মসিউর রহমান ওরফে সবুজের ভাষ্য, ‘মামলায় যাঁরা আসামি, সবাই আমার কর্মী–সমর্থক। যাঁরা ঘটনার দিন ছিলেন না, তাঁদেরও আসামি করা হয়েছে। ঢাকায় ছিলেন আমার এমন লোকজনদেরও আসামি করা হয়েছে। এটা পুলিশের ষড়যন্ত্র। আমাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে ও চাপে ফেলতেই এই ধরনের মামলা হয়েছে।’
এ বিষয়ে আজ দুপুর ১২টার দিকে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছির উদ্দিন মৃধা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শনিবার রাতে দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের সমর্থকেরা আহত হন। নৌকার সমর্থকদের পক্ষে আয়নাল সরদার নামে এক ব্যক্তি থানায় মামলা করতে এলে আমরা তাঁর মামলা নিই। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ থেকে কেউ থানায় মামলা বা অভিযোগ দিতে আসেননি। তাঁরা অভিযোগ দিলেও আমরা মামলা নেব। তবে এ ঘটনায় কোনো আসামিই এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হননি। যাঁদের নাম দেওয়া হয়েছে, তাঁরা সবাই ওই সংঘর্ষের সময় ছিলেন।’
ওসি আরও বলেন, ‘নির্বাচন চলছে। এর মধ্যে আমরা কোনো প্রার্থীর সমর্থকদের বিনা অপরাধে হয়রানি করব না। সংঘর্ষের ঘটনায় যাঁরা গুজব ছড়ানো ও উসকানি দিয়েছেন, পুলিশ তাঁদের খুঁজে বের করতে কাজ শুরু করেছে।’
এদিকে গত শনিবার রাতের সংঘর্ষে কালকিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন অন্তত ৮০ জন। গুরুতর আহত অবস্থায় একজনকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার বিকেলে কালকিনি পৌর এলাকার পালপাড়ায় সমর্থকদের নিয়ে গণসংযোগ চলাকালে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মসিউর রহমান ওরফে সবুজকে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছির উদ্দিন মৃধা ডেকে সরকারি গাড়িতে তোলেন। পরে তাঁরা যান পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয়ে। এরপর থেকে নিখোঁজ হন সবুজ। তাঁর নিখোঁজের সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এর জের ধরে তাঁর সমর্থকেরা শনিবার সন্ধ্যা থেকে থানার সামনে অবস্থান নেন। পরে তাঁরা বিক্ষোভ, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালান। একপর্যায়ে নৌকার সমর্থকেরা তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে টানা তিন ঘণ্টা সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়।
এ সময় দুই পক্ষের লোকজনের হাতে লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র দেখা যায়। সংঘর্ষের সময় ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দও শোনা গেছে। পরে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিখোঁজের প্রায় ১১ ঘণ্টা পর গতকাল রোববার ভোররাতে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন সবুজ।
এ ব্যাপারে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) আবদুল হান্নান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সবুজের নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারটা ভুল–বোঝাবুঝি। সবুজ বলেছেন, তিনি এসপির কাছে যান এবং পরে তিনি ঢাকায় গিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলে আবার এলাকায় ফিরে আসেন। মাঝখানে সবুজ নিখোঁজ, এই গুজব ছড়ানো হয়। এ কারণেই অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।’
১৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে কালকিনি পৌরসভা নির্বাচন। এখানে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন এসএম হানিফ। বিএনপি থেকে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন মো. কামাল হোসেন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নারকেলগাছ প্রতীকে মসিউর রহমান সবুজ ও চামচ প্রতীক নিয়ে সোহেল রানা ওরফে মিঠু নির্বাচন করছেন। ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মনোনীত হাতপাখা মার্কার প্রার্থী লুৎফর রহমান প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
Dhaka, Bangladesh রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:16 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:57 AM |
Asr | 2:57 PM |
Magrib | 5:17 PM |
Isha | 6:38 PM |