আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১১:৩৭
মোঃ রফিকুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি :- কুড়িগ্রামে পৌর এলাকার প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে টাইফয়েড রোগীর সংখ্যা মারাতœকভাবে বেড়েই চলেছে। আর পানিবাহিত এ রোগের মুল কারন হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে পৌরসভার সরবরাহকৃত পানিকে। পানির সংযোগ লাইনের সাথে কিছু কিছু জায়গায় শোয়ারেজ লাইন সংযুক্ত হয়ে যাওয়ায় পানি দুষণের আশংকা পৌরবাসীর। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ পানি সরবরাহের সংযোগ লাইনের কোথাও কোথাও পুরনো হওয়ায় কিছুটা পানি সমস্যা হচ্ছে বলে জানান। এদিকে,টাইফয়েড রোগী বেড়ে যাওয়ায় জেনারেল হাসপাতালে অন্য জ্বরের রোগীর সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছ টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। আর আনুপাতিকহারে টাইফয়েড রোগী অনেক বেশি ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেয়ার কথা বলছেন জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকগণ।জেনারেল হাসপাতাল সুত্র জানায়,করোনার পাশাপাশি টাইফয়েড রোগীর সংখ্যা গত এক থেকে দেড় মাসে হাসপাতালে বেড়েছে। আড়াইশ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া,আমাশয়,সর্দিকাশি জ্বরে প্রতিদিনই কমবেশি রোগী ভর্তি হয়।এর বাইরে গত দেড় মাসে শুধুমাত্র টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আড়াই শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছেন।
এসব রোগীর অধিকাংশই শিশু ও উঠতি বয়সের যুবক এবং নারী। সুত্র আরো জানায়, গত ২২এপ্রিল থেকে টাইফয়েডসহ রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে হাসপাতালে। এ রোগে হাসপাতালের অভ্যন্তরের পাশাপাশি বহির্বিভাগেও রোগীর চাপ দেখা গেছে। ক্রমেই প্রতিদিন বাড়ছে টাইফয়েড রোগীর সংখ্যা। একই বাড়িতে একজন দুজন করে শুরু করে পরিবারের সকল সদস্য আক্রান্ত হচ্ছেন এ রোগে।এ অবস্থায় চিন্তিত রোগী ও তার স্বজনরা। অপরদিকে, যেসব পরিবারের কেউই এখনও আক্রান্ত হননি তারাও পৌরসভার পানি সমস্যায় টাইফয়েড আতংকে রয়েছেন।কলেজ রোড সংলগ্ন পুরাতন রেজিষ্ট্রি অফিস পাড়ার সুজা উদ্দিন জানান,‘আমার বাড়িতে প্রথমে আমার টাইফয়েড ধরা পড়ে।এরপর আমার ছেলে,তারপর মেয়ে শেষে আমার স্ত্রীর টাইফয়েড রোগ দেখা দেয়।মূলত:পৌরসভার সাপ্লাই ওয়াটারের কারনে আমাদের টাইফয়েড হয়েছে।জেনারেল হাসপাতালে প্রায় দুই সপ্তাহ যাবত ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হয়। ডাক্তার বলছেন পানিবাহিত টাইফয়েড রোগ পানি সমস্যার কারনে হয়েছে।’ অন্যদিকে ঘোষপাড়ার আব্দুল সালাম মিয়া জানান,গত পনের দিন থেকে আমার বাড়িতে স্ত্রী ও ছেলের টাইফয়েড রোগী নিয়ে আমি বিপাকে। দামি দামি ওষুধ ও এন্টিবায়োটিক সেবন করতে দিচ্ছেন চিকিৎসকগণ। জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রুমী আক্তার বলেন,বাড়িতে কয়েকদিন ধরে জ্বর ছিল। প্রায় ১০৪-১০৫ডিগ্রি জ্বর ওঠে। কোনভাবেই সারছিলনা। পরে হাসপাতালে ভর্তি হলে চিকিৎসক অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হন টাইফয়েড।
এদিকে,এ রোগ বৃদ্ধির ফলে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসকগণ।বিনামূল্যে সরকারিভাবে দেয়া এন্টিবায়োটিক ওষুধ সেফটি এক্সজোন ইনজেকশনও প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা:মঈন উদ্দিন আহমেদ বলেন,টাইফয়েড রোগী ইদানিং অনেক পাচ্ছি হাসপাতালে। তবে বিশেষ কিছু এলাকা থেকে রোগী আসছে বেশি।যেহেতু এটি পানিবাহিত রোগ তাই বিশুদ্ধ পানি পান না করায় এরুপ হয়ে থাকতে পারে। অপরদিকে,পানিতে কোন দুষণ কিংবা ত্রæটি রয়েছে কিনা পৌরসভার কয়েকটি আক্রান্ত স্থান থেকে পানি উত্তোলন করে ঢাকায় প্রেরণের কথা জানান সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা:নজরুল ইসলাম।জেলা স্বাস্থ্যবিভাগের সিভিল সার্জন ডা:হাবিবুর রহমান বলেন,এ অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ ও জনস্বাস্থ্যবিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে ব্যবস্থা নেয়া জন্য অনুরোধ করেছি।তবে কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র কাজিউল ইসলাম সরবরাহকৃত লাইন পুরাতন ও নষ্ট হওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, দ্রæত এটি সংস্কার করতে জনস্বাস্থ্যকে চিঠি দেয়া হয়েছে এবং সমস্যা সমাধান সম্ভবপর হবে।জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: সায়হান আলী পৌর মেয়র ও সিভিল সার্জনের অবহিতকরণের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন,আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি এবং মনে হয় হোটেল ও রেস্তোরায় ব্যবহার করা অফুটানো পানি পান করে টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত হতে পারেন মানুষজন।তবে তা সংস্কারে দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |