- প্রচ্ছদ
-
- খুলনা
- নড়াইলে গ্রাম বাসিদের অর্থে রাস্তা নির্মাণ। একই রাস্তার ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে টাকা আত্মসাত
নড়াইলে গ্রাম বাসিদের অর্থে রাস্তা নির্মাণ। একই রাস্তার ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে টাকা আত্মসাত
প্রকাশ: ২২ জুন, ২০২১ ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ
উজ্জ্বল রায় (নড়াইল জেলা) প্রতিনিধিঃ-নড়াইলে রাস্তার ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে টাকা আত্মসাত। নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের নোয়া গ্রামের একটি গ্রাম্য রাস্তা গ্রাম বাসিদের নিজেদের অর্থে নির্মাণ করা হলেও সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, প্রকল্প সুপার ভাইজার ও পিআইও’র বিরুদ্ধে একই রাস্তার ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগে জানা গেছে, নোয়াগ্রামের খাজা মোল্যার বাড়ি থেকে বিল অভিমুখী একটি গ্রাম্য রাস্তা গ্রামবাসিরা মিলে নিজেদের অর্থে নির্মাণ করে। পরবর্তিতে কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া ইউপির সদস্য মো. সেলিম মোল্যা, চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মনি, প্রকল্প সুপারভাইজার দেবাশিষ বিশ্বাস ও পিআইও শরীফ মো. রুবেলের যোগসাজসে ওই রাস্তার বিপরীতে গোপনে ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থানের জন্য পরিচালিত সরকারি প্রকল্পের টাকা তুলে নেয়ার প্রমান পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় উপজেলার নওয়াগ্রামের আব্দুল্লাহ শেখসহ ৬ জন গত ১৬ জুন কালিয়ার ইউএনও’র নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন। পরে দায় এড়াতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বাদি হয়ে প্রকল্প সভাপতির বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট মামলা দায়ের করেছেন বলে তথ্য মিলেছে।
সরকার পরিচালিত অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থানের জন্য কর্মসূচির আওতায় প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপসহকারি প্রকৌশলী দেবদাশ বিশ্বাসের সহযোগিতায় গ্রামবাসির টাকায় নির্মিত নোয়গ্রাম ‘খাজা মোল্যার বাড়ি থেকে বিল অভিমুখী রাস্তা মাটি দ্বারা উন্নয়নের’ নামে ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে কাজ না করেই প্রকল্প সুপারভাইজার দেবদাশ বিশ্বাসের সহযোাগিতায় বরাদ্দের টাকা তুলে লোপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগ প্রাপ্তির পর কালিয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপসহকারি প্রকৌশলী দেবদাশ বিশ্বাসের তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পের কাজের প্রথম পর্যায় ৬৯ হাজার টাকা প্রকল্প সভাপতির অনুকুলে দেয়া হয়েছিল বলে জানতে পারেন।
এছাড়া উপজেলা ব্যাপী সকল ইউনিয়নে অতিদরিদ্রদের জন্য চলতি অর্থ বছরে সরকারের বাস্তবায়নাধীন কর্মসৃজন প্রকল্পের ১০/১৫শতাংশ কাজও যথাযথ কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় প্রকল্প কমিটির সভাপতিরা করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্প সুপারভাইজার দেবদাশ ও নির্বাচিত প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা কাজ না করেই এ সমস্ত টাকা ভাগাভাগি করে নেয় বলে একটি সুত্র জানিয়েছেন। ওই দাখিলকৃত ভুয়া প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় গ্রামবাসী। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সুত্রে জানা যায়, অতিদরিদ্রদের জন্য চলতি অর্থ বছরে সরকারের বাস্তবায়নাধীন কর্মসৃজন প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ৪৮টি প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়া হয়। ওইসব প্রকল্পের অনুকুলে ১ হাজার ২৩৯ জন শ্রমিক নিয়োগ করা হয়। আর প্রকল্প সমূহের অনুকুলে ৯৯ লাখ ১২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ১৭ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ৯ জুন পর্যন্ত প্রকল্পগুলোর কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। কিন্তু উপজেলার নওয়াগ্রামের গ্রামবাসির অভিযোগ দায়েরের পর সংশ্লিষ্টদের টনক নড়ে। তখন তড়িঘড়ি করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শরীফ মো. রুবেল প্রকল্প সভাপতি মো. সেলিম মোল্যার প্রথম পর্যায় তুলে নেয়া ৬৯ হাজার টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য ১৬ জুন বিকালে ইউএনওর নিকট সার্টিফিকেট মামলা দায়ের করেন। ওইসব প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে নিয়োজিত উপসহকারি প্রকৌশলী দেবদাশ বিশ্বাস অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার অজান্তেই এ ঘটনাটি ঘটেছে। সরকারী টাকা ফেরত আনার প্রক্রিয়া চলছে। উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা শরীফ মো. রুবেলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। কালিয়া ইউএনও মো. নাজমুল হুদার মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
Please follow and like us:
20 20