আজ মঙ্গলবার | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ৯:০৫
পাবনা: পাবনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে অক্সিজেন সংকটে ৪ জনের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোবরার (০৪ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে আজ সোমবার (০৫ জুলাই) দুপুর ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। এ সময়ে করোনায় আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক ডা. সালেহ মোহাম্মদ আলী গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃতরা হলেন- সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের মৃত আলহাজ দায়েন বিশ্বাসের স্ত্রী রাশিদা বেগম (৭০), ঈশ্বরদীর চরকুরুলিয়া গ্রামের মৃত কোরবান সরকারের স্ত্রী রোকেয়া খাতুন (৭০), পাবনা শহর এলাকার নূরে আলম (৬৭), নাজমুল ইসলাম (৭২), ঈশ্বরদীর চরমিরকামারী মাথালপাড়ার জয়েন উদ্দিন খানের ছেলে আমিরুল ইসলাম খান, (৬৬), ঈশ্বরদী শহরের শৈলপাড়া গ্রামের শাহীনের স্ত্রী রিমা খাতুন (৫৬), মুলাডুলি ইউনিয়নের চকনারিচা বাগাবাড়িয়া গ্রামের রিজু প্রামানিক এবং আরেকজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে দায়িত্বে থাকা একজন সিনিয়র চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রোববার সকাল থেকে এখন পর্যন্ত ৪ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে অক্সিজেনের ঘাটতি থাকায় ঠিকমতো অক্সিজেন সরবরাহ করতে না পারায় তারা মারা যায়। পরবর্তীতে অক্সিজেন সংকটে আরও একজনের মৃত্যু হয়।
মৃত রাশিদা বেগমের বড় ছেলে মো. আলমগীর হোসাইন বলেন, আমার আম্মাকে গতকাল দুপুরে ঠান্ডা জ্বর শ্বাসকষ্ট নিয়ে সদরের করোনা ইউনিটে ভর্তি করেছিলাম। শুরু থেকেই অক্সিজেন সংকট ছিল। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ১০ বার বলার পরও তারা আমার মায়ের জন্য একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার দেয়নি। অক্সিজেন সংকট নিয়েই মায়ের মৃত্যু হলো।
তিনি জানান, এ সময় হাসপাতালের প্রতিটি রোগী প্রচণ্ড কষ্ট পাচ্ছিল। অক্সিজেনের অভাবে তার সামনে তিনজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি আফসোস করে বলেন, অনেক আশা নিয়ে মাকে নিয়ে হাসপাতালে আসছিলাম। ভিতরে ঢুকেই দেখি, সেখানে কোনো চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। নার্সরা ঠিকমতো ডিউটিতে আসছেন না।
করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এক রোগীর ভাই জানান, এই হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। অনেক ভাল রোগীকে করোনা ইউনিটে ভর্তি করে রেখেছে। আমার বোনকে ১২ দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। পরের দিন করোনা পরীক্ষার নমুনা দেই। আজ ১১ দিন পার হলেও কোনো ফলাফল পাচ্ছি না।
অক্সিজেন সংকটে মৃত্যুর অভিযোগ নিয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক ডা. সালেহ মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে গণমাধ্যমের কথা হয়।
তিনি বলেন, অনেক রোগী করোনা আক্রান্ত হয়ে শেষ সময়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। শেষ সময়ে একজন করোনা রোগী হাসপাতালে এলে কিছু করার থাকে না। সে যদি আক্রান্ত হওয়ার শুরুতে আসে তাহলে তাকে ভালোভাবে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। যারা মারা গেছেন তাদের বেশিরভাগই করোনা আক্রান্ত হয়ে শেষ সময়ে হাসপাতালে এসেছিল।
তিনি আরও জানান, জেনারেল হাসপাতালে সেন্টাল অক্সিজেন চালু না থাকায় অক্সিজেনের ব্যাপক সংকট দেখা দিচ্ছে। হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলাও অকেজো হয়ে পড়ে আছে।
পাবনার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. কেএম আবু জাফর গণমাধ্যমকে জানান, করোনা সংক্রমণ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ায় এবং বিভিন্ন এলাকায় মানুষের নির্বিঘ্নে চলাচলের ফলে পাবনাতেও করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেছে। প্রতিদিন অনেক রোগী করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাচ্ছে। সবাইকে সচেতন হতে হবে। জনগণ সচেতন না হলে স্বাস্থ্য বিভাগের কিছু করার থাকে না।
এদিকে করোনা ভাইরাসে সংক্রমণ বাড়তে থাকলেও পাবনায় এখনো করোনার চিকিৎসায় তেমন অগ্রগতি হয়নি। পিসিআর ল্যাবের অনুমোদন হলেও এখনো তা স্থাপন হয়নি। এ ছাড়া করোনা চিকিৎসায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহের কাজ এখনো শেষ হয়নি। এ অবস্থায় করোনা সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বলে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।
Dhaka, Bangladesh মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:38 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |