বিডি দিনকাল ডেস্ক :- স্বামী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। বিয়ের পর স্বামীর সাথে তার বাড়িতে উঠে তিনি। সেখানে শুরুতে কিছুদিন ভাল গেলেও ধীরে ধীরে শুরু হয় তার উপর নির্যাতন। তার পরিবারের কাছে নানা রকম প্রত্যাশা তার শ্বশুড়বাড়ির মানুষের। বাবা নেই; তাই, সেই প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টাও করেছেন তার মা। হয়তো প্রত্যাশা পূরণ হয়নি তাই ক্রমশই বাড়তে থাকে এই নির্যাতনের মাত্রা। স্বামীর সাথে তাকে মিশতে মানা, সন্তান নিতে মানা ইত্যাদি নানা প্রকার নির্যাতন তার উপর চলছিল। এক পর্যায়ে সইতে না পেরে তিনি তার শিশু সন্তানকে নিয়ে তার বিধবা মায়ের কাছে চলে আসতে বাধ্য হন। তার ও তার সন্তানের ভরণপোষণ বা কোনো প্রকার খোঁজখবর নিচ্ছিল না তার স্বামী বা স্বামীর পরিবার। কি করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন তিনি। তিনি কোনো মামলা মোকদ্দমায়ও যেতে চান না। তার ধারনা, মামলা মোকদ্দমায় গেলে স্বামীর সাথে তার সংসারের আর কোনো সম্ভাবনাই টিকে থাকবে না। বিয়ে তো একবারই হয়! স্বামী সন্তান নিয়ে তিনি সুখে থাকতে চান। সংসার ভাঙতে চান না। তবে, একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক সংসার জীবন চান তিনি। নানাভাবে চেষ্টা করেছেন সমস্যা সমাধানের। ব্যর্থ হয়েছেন। এভাবেই নিজের কথা বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে লিখে পাঠান সেই নারী।
বার্তা পেয়ে মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং তার স্বামীর কর্মস্থল ও বর্তমান আবাসস্থল চট্টগ্রামের পটিয়া থানার ওসি মো: রেজাউল করিম মজুমদারকে বার্তাটি প্রেরণ করে উপযুক্ত আইনের আলোকে সমস্যাটি সমাধানের উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেন।
গত ১৬ জুলাই ২০২১ খ্রি. ওসি পটিয়ার আন্তরিক উদ্যোগে স্থানীয় সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ, জনপ্রতিনিধি ও উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে উক্ত নারীকে তার শিশু সন্তানসহ তার স্বামী ও শ্বশুড়বাড়ির লোকজন সম্মানের সাথে গ্রহণ করে বাড়িতে নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে কিছু ভুল বুঝাবুঝি ছিল। পটিয়া থানা এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং সোশ্যাল কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে সে ভুল বোঝাবুঝি দূর হয়েছে। উভয় পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যেক সদস্যের সাথে কথা বলেছে মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং। স্বামী-সন্তানসহ শ্বশুড়বাড়ির সকলের সাথে আনন্দঘন ঈদ উদযাপনের ছবি পাঠিয়েছেন সেই গৃহিনী। উক্ত নারী এবং তার স্বামীর সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে পুলিশ। সর্বশেষ ২৭ জুলাই ২০২১ খ্রি. তাদের উভয়ের সাথে কথা বলেছে মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং। তারা উভয়েই জানিয়েছেন শিশু সন্তানসহ তারা এখন বেশ ভাল আছেন। একটি সুখী জীবনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তারা। তাদের প্রত্যেকের প্রাপ্য আইনি অধিকার বাস্তবায়নে পুলিশ সক্রিয়ভাবে সব সময় পাশে থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভুক্তভোগীর সর্বোচ্চ কল্যাণ ও সুরক্ষা বিবেচনায় প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও বিষয়াদির নাম পরিচয় প্রকাশ না করার পলিসি অনুসরন করে থাকে মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং।
শ্রদ্ধান্তে
মো. সোহেল রানা
এআইজি (মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স)
বাংলাদেশ পুলিশ