আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | বিকাল ৩:৪৩
উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধিসেতুর উভয়পাশে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতায় আটকে রয়েছে সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ। জমির মালিকরা ক্ষতিপূরণের দাবিতে আদালতের শরণাপন্ন তৈরি করা হয়েছে। সে অনুযায়ী খুব দ্রুত কাজ শুরু হবে। সেতুটি চালু হলে চারটি ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ উপকৃত হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নড়াইল জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের গন্ডবগ্রামে তুষখালী দোয়ার ওপর ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ১০ কোটি ১৯ লাখ ৮১ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৭৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ২৪ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট পিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো দেড় বছর পর ২০১৭ সালের ২২ অক্টোবর।
নির্ধারিত সময়ের আড়াই বছর পর চলতি বছরের শুরুর দিকে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। এরপর এরপর সংযোগ সড়ক নির্মাণকালে জমি নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়। সংযোগ সড়ক প্রশস্ত হওয়ায় উভয়পাশে ব্যক্তিমালিকানা জমির প্রয়োজন হয়। কিন্তু ক্ষতিপূরণ না দেওয়ায় জমির মালিকরা ক্ষতিপূরণ ছাড়া জমি দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এক পর্যায়ে ক্ষতিপূরণের জন্য ভুক্তভোগী পরিবারগুলো আদালতের শরণাপন্ন হন।
ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিক কাশিপুর ইউপি সদস্য মোঃ ইব্রাহিম হোসেন বলেন, আমাদের কয়েকজন শরীকের মোট ৬০ শতাংশ জমি সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য প্রয়োজন। আমরা গরীব মানুষ। তাই এতো জমি বিনামুল্যে ছেড়ে দেওয়া সম্ভব নয়। রাস্তার পাশের এই জমি প্রতি শতকের বর্তমান বাজার মুল্য আছে ৫০ হাজার টাকা করে। জনগনের স্বার্থে জমি দিতে আমরা রাজি আছি। তবে আমাদেরকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। জমি অধিগ্রহণের জন্য কোন অর্থ বরাদ্দ না থাকায় ক্ষতিপূরণ বাবদ কোন টাকা দিতে রাজি হয়নি এলজিইডি। সে কারনে আমরা ক্ষতিপূরণের দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।
এদিকে সেতুটি চালু না হওয়ায় কাশিপুর, নোয়াগ্রাম, শালনগর ও লাহুড়িয়া এই চারটি ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক মানুষের চরম দুর্ভোগ রয়েই গেছে।
গন্ডবগ্রামের বাকিবিল্লাহ, কামরুজ্জামান, বাহিরপাড়া গ্রামের সৌরভ মোল্যাসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ-দুর্দশা প্রতিকারের লক্ষ্যে ২০১৬ সালে ব্রীজটির কাজ শুরু হয়। দেড় বছরে ব্রীজের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পর আরো তিনটি বছর অতিবাহিত হচ্ছে। অথচ উত্তর লোহাগড়ার অর্ধশতাধিক গ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নের সেতুটি চালু হচ্ছে না। যার কারনে দুর্ভোগ রয়েই যাচ্ছে। এ্যাম্বুলেন্স বা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশের কোন সুযোগ নেই। দ্রতু জমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের দাবি জানান এসব ভূক্তভোগীরা।
ভ্যানচালক বাহিরপাড়া গ্রামের রিপন খান, গন্ডব গ্রামের কলম শেখসহ একাধিক চালক জানান, ব্রীজটি চালু না হওয়ায় জেলা শহরের সাথে উত্তর লোহাগড়াবাসীর সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হচ্ছে না। ব্রীজটির দুপাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় দ্বিগুণ পথ পাড়ি দিয়ে জেলা শহরে যেতে হচ্ছে। এতে কষ্ট ও সময় নষ্ট হচ্ছে। তাছাড়া যাত্রী কম হওয়ায় আয়-রোজগার কম হওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সকল জটিলতা নিরসন করে ব্রীজটি চালু করার জোর দাবি জানিয়েছেন ভ্যান চালকসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ।
সেতুটি নির্মাণকাজের দায়িত্ব পেয়েছিলেন গোপালহগঞ্জের কাশিয়ানীর পিপিএল-এনএকে নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারের নাম নায়েব আলী খান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক নূর ইসলাম শরীফ জানালেন, জমির মালিকদের বাঁধার কারনে ৯মাস ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে। জমির সমস্যা সমাধান হলেই দ্রæত কাজ শুরু ও শেষ করা হবে।
লোহাগড়া উপজেলা প্রকৌশলী অভিজিৎ মজুমদার বলেন, গন্ডবগামে তুষখালী দোয়ার ওপর সেতু নির্মাণের কাজ বেশ আগেই শেষ হয়েছে। সেতুটির স্টীমেট করার সময় জমির মালিকরা কোন আপত্তি করেনি। যার কারনে স্টীমেটে জমি কেনার হিসাবটি বাদ পড়ে যায়। সেতু নির্বাণ শেষ হওয়ার পর জমির মালিকরা ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন। যার কারনে সংযোগ সড়ক নির্মাণে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে আদালতে মামলাও হয়েছে। তবে জমির জটিলতার কারনে নতুন করে দুপাশের নকশা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে অনুমোদন হয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত সড়কটির দুপাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারবো। সড়কটি চলাচলের জন্য খুলে দিতে পারলে উত্তর লোহাগড়াবাসীর সাথে জেলা শহরের সড়ক পথে সংক্ষিপ্ত ও দ্রুত সময়ের মধ্যে যাতায়াত সুবিধা হবে। নির্ধারিত সময়ের আড়াই বছর পর নির্মাণ কাজ শেষ হয় নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের গন্ডব সেতুর। এরপর সংযোগ সড়ক নির্মাণ নিয়ে জটিলতায় আরো ৯ মাস কেটে গেছে। এখনও চালু করা যায়নি সেতুটি।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |