আজ শনিবার | ১৩ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৮শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২৬শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ৯:৩৭
বিডি দিনকাল ডেস্ক :- নব্য জেএমবি’র সামরিক শাখার প্রধান প্রশিক্ষক ও বোমা প্রস্তুতকারকসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।
গ্রেফতারকৃতরা হলো মোঃ জাহিদ হাসান ওরফে রাজু ওরফে ইসমাঈল হাসান ওরফে ফোরকান, সাইফুল ইসলাম মারুফ ওরফে বাসিরা ও মোঃ রুম্মান হোসেন ফাহাদ ওরফে আব্দুল্লাহ। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত হতে বিস্ফোরক পদার্থ, ঢাকনাযুক্ত জিআই পাইপ, রিমোট কন্ট্রোল ডিভাইস, লোহার বল, সাংগঠনিক কাজে ব্যবহৃত ৩টি মোবাইল ফোন ও ১টি ট্যাব উদ্ধার করা হয়।
১০ আগস্ট (মঙ্গলবার) রাজধানীর কাফরুল থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করে সিটিটিসির বোম ডিসপোজাল ইউনিটের একটি টিম।
আজ বুধবার (১১ আগস্ট) দুপুর ১২টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ আসাদুজ্জামান বিপিএম (বার)।
সিটিটিসির প্রধান বলেন, গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত মোঃ জাহিদ হাসান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হতে রসায়নে অনার্স সম্পন্ন করেছে। জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হওয়ায় এবং হিজরত করায় মাষ্টার্স সম্পন্ন করতে পারেনি। ২০১৬ সালে অনলাইনে ‘হোয়াইট হাউজের মুফতি’ নামক আইডি’র মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে নব্য জেএমবি’র তৎকালীন আমির মুসার হাত ধরে সে এই সংগঠনে যোগদান করে। আমির মুসার সাথে কাজ করার সুবাদে সংগঠনের ঐ সময়ের শীর্ষস্থানীয় জঙ্গিদের নজরে আসে এবং তাদের সার্বক্ষনিক সঙ্গী হিসেবে কাজ করে। রসায়নে পরদর্শী হওয়ার কারণে তার মেধা এবং সাহসের জন্য তাকে এই সংগঠনের সামরিক শাখার সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। রসায়নের ছাত্র হওয়ার সুবাদে সে অল্পদিনে গ্রেনেড ও বোমা বানানোর অত্যন্ত দক্ষ হয়ে ওঠে এবং নিত্য নতুন কৌশলে আইইডি (ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) প্রস্তুত করে। এই সংগঠনের যারা বোমা ও গ্রেনেড তৈরী করতো তাদেরকে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিত সে।
তিনি বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিটিসি তথা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানে নব্য জিএমবি’র শীর্ষস্থানীয় জঙ্গিরা গ্রেফতার/নিহত হলে এই সংগঠনটি সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। এসময় গ্রেফতারকৃত জাহিদ গ্রেফতার এড়ানোর জন্য আত্মগোপনে চলে যায়। পূনরায় সে নতুন আমিরের নেতৃত্বে সংগঠনকে সংগঠিত করার উদ্যোগ নেয়। তারই অংশ হিসেবে অনলাইনে আইডি খোলার মাধ্যমে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে যারা অত্যন্ত সাহসী ও সামরিক বিভাগে কাজ করতে আগ্রহী তাদের মধ্য থেকে বাছাইকৃত সদস্যদের বিভিন্ন ধরনের টাইম ও রিমোট কন্ট্রোল বোমা তৈরীর প্রশিক্ষণ দিত। সে সংগঠনটির কার্যক্রম বিস্তৃত করার লক্ষ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একাধিকবার মিটিং করে। শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের আওতাধীন মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়াম থেকে কারাতে প্রশিক্ষণও গ্রহণ করে। সে বড় কোন ক্যামিকেল সাপ্লাই কোম্পানিতে চাকুরি করে সেখান থেকে এক্সপ্লোসিভ তৈরির উপাদান নিয়ে আইইডি বানানোর পরিকল্পনা ছিল তার। সর্বশেষ সে ড্রোন বানানোর পরিকল্পনা করেছিলো। ড্রোনের সাথে এক্সপ্লোসিভ যুক্ত করে কোন জায়গায় আক্রমনের পরিকল্পনার পাশাপাশি সামরিক শাখার প্রধান নিযুক্ত হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, পুলিশ বক্সে হামলার পরিকল্পনার সাথেও সে জড়িত ছিল। সে আমিরের নির্দেশে যেসকল হামলার ঘটনা ঘটেছে সেসকল হামলায় সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেছে।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত অপর অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম মারুফ একজন দক্ষ বোমা তৈরীর কারিগর। সে অনলাইনে জাহিদের নিকট হতে বোমা তৈরীর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। বেশ কয়েকটি বোমা হামলার ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা থাকার বিষয়ে সে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে। সাইফুল ইসলাম মারুফ এবং গ্রেফতারকৃত অপর অভিযুক্ত মোঃ রুম্মান হোসেন ফাহাদসহ সংগঠনের সিদ্ধান্তে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহন করার লক্ষ্যে বান্দরবান এলাকায় হিজরত করে। সংগঠনের ফান্ড তৈরীর নিমিত্তে ইলেকট্রিক শক থেরাপির মাধ্যমে অজ্ঞান করে ছিনতাই ও ডাকাতি করার জন্য টঙ্গী থানাধীন রেলগেট এলাকায় রুম ভাড়া নেয়।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় মামলা রুজু হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
সিটিটিসি’র স্পেশাল এ্যাকশন গ্রুপের উপ-পুলিশ কমিশনার আব্দুল মান্নান, বিপিএম এর তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রহমত উল্লাহ চৌধুরী, বিপিএম(বার) এর নির্দেশনায় এবং মোঃ মাহমুদুজ্জামান এর নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
Dhaka, Bangladesh শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:19 AM |
Sunrise | 6:39 AM |
Zuhr | 12:00 PM |
Asr | 3:01 PM |
Magrib | 5:21 PM |
Isha | 6:41 PM |