আজ রবিবার | ২৮শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১২ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১২ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ৪:০০
নজরুল ইসলাম মানিক, সাভার ও আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি : ব্যাটারি চালিত অবৈধ রিকশা-অটোরিকশা মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ঢাকার আশুলিয়ার মহাসড়কগুলোতে এদের রাজত্ব। প্রকাশ্যে হাইওয়ে পুলিশ এবং ট্রাফিক পুলিশের সামনে দিয়ে হরহামেশা এসব অবৈধ রিকশা অটোরিকশা চলাচল করলেও তারা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে দাবী সতেতন মহলের। তবে মাঝে মধ্যে লোক দেখানো রিকশা অটোরিকশা ধরলেও অর্থের বিনিময়ে তা ছেড়ে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। আর হাইওয়ে পুলিশ বলছে এদের বিরুদ্ধে নিয়মিত আটক সহ মামলা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘুরে আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক এবং বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর মহাসড়কে এদের রাজত্ব চোখে পড়েছে।
সরেজমিনে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল ত্রিমোড়ে গিয়ে দেখা যায়, শত শত ব্যাটারি চালিত অবৈধ রিকশা অটোরিকশা মহাসড়কে চলাচল করছে। এখানে রিকশা অটোরিকশাগুলো ঝটলা করে মহাসড়ক দখলে নিয়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছে। ট্রাফিকের দায়িত্বরতদের সামনেই এসব তিন চাকার যান চলাচল এবং দীর্ঘ সময় যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
মহাসড়কে তিন চাকার এসব ব্যাটারি চালিত রিকশা অটোরিকশা চলাচলের কারণে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দূর্ঘটনা। আর এতে প্রাণহানি সহ আহতের ঘটনা ঘটছে হরহামেশাই। অনেকে পঙ্গুত্ববরণ করে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছেন।
বাইপাইল ত্রিমোড়ে কথা হয় রফিকুল নামের ব্যাটারি চালিক এক রিকশা চালকের সাথে। সে জানায়, আমরা সকাল হলেই রিকশা নিয়ে মহাসড়কে বের হই। কি করব ভাই আমিত আর অন্য কোন কাজ জানি না তাই রিকশা নিয়েই বের হতে হয়। মহাসড়কে ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে সে জানায়, সেটা আমরা যারা রিকশা চালাই তারা সকলেই জানি। তবে মাঝে মধ্যে হাইওয়ে পুলিশ ধরে ফেলে। তখন বাধ্য হয়েই টাকা দিয়ে ছুটে আসতে হয়।
কত টাকা দিতে হয় এমন প্রশ্নের জবাবে সে জানায়, কোন কোন দিন দুই হাজার, আবার কোন কোন দিন এক হাজার টাকা দিলেই ছেড়ে দেয়। তবে কোন কোন দিন টাকার কোন রশিদ দেয়া হয়, আবার কোন কোন দিন রশিদ দেন না।
আশুলিয়ার জিরানী বাজারে কথা হয় আরেক অটোরিকশা চালক সেন্টুর সাথে। সে জানায়, ঈদের আগে তাকে চেতনা নাশক খাইয়ে অটোরিকশা ছিনিয়ে নিয়ে যায় দুইজন। তিন চার দিন পরে বাড়িতে আসি এবং খুব অসুস্থ হয়ে পড়ি। সুস্থ হয়ে আবার মাসিক কিস্তিতে একটি অটোরিকশা কিনেছি। আঞ্চলিক সড়কগুলোতে চালাতে তেমন সমস্যা হয় না। কিন্তু মহাসড়কে উঠলেই মাঝেমধ্যেই এক হাজার আবার কোন কোন সময় দুই হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে হয়। তাই বাধ্য হয়েই মহাসড়কে আসিনা। তবে সকালের দিকে পুলিশ তেমন কিছু বলে না। তাই সকালেই অটোরিকশা নিয়ে মহাসড়কে এসেছি। সকালে যাত্রীও বেশী পাওয়া যায়, আবার ভাড়াও বেশি পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্লাসিক পরিবহণের এক চালক জানান, মহাসড়কে এসব অবৈধ ব্যাটারি চালিত রিকশা অটো রিকশার কারণে প্রতিনিয়তই দূর্ঘটনা ঘটছে। বাস চালক সহ অন্যান্য যানবাহনের চালকরা বিব্রতবোধ করে। যার ফলে দূর্ঘটনার ঘটনা ঘটে। প্রশাসনের জোর নজরদারি থাকলে এসব বন্ধ হবে অচিরেই।
প্রকাশ্যে এসব নিষিদ্ধ শত শত অবৈধ ব্যাটারি চালিত রিকশা অটোরিকশা চলাচল করলেও জুড়ালো কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন। তবে হাইওয়ে পুলিশ মাঝে মধ্যে রিকশা জব্দ করে রাখে, কাউকে আবার মামলাও দিয়ে থাকেন বলে জানিয়েছে একাধিক রিকশা চালক।
এব্যাপারে আশুলিয়া থানা সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি লায়ন মোহাম্মদ ইমাম হোসেন জানান, মহাসড়কে ব্যাটারি চালিত রিকশা অটোরিকশা চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এরপরও আমাদের আশুলিয়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন হওয়ায় মহাসড়কে রিকশা অটোরিকশা উঠছে। এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয় না। তবে প্রায় প্রতিদিনই বাইপাইল, জামগড়া এবং ইপিজেড ট্রাফিক বক্স এলাকায় ব্যাটারি চালিত রিকশা অটোরিকশা ধরা হয়। এসব রিকশা অটোরিকশা ধরা হলেও চালকদের কাছ থেকে র্যাকার বিল রেখে আবার ছেড়েও দেয়া হয়।
তিনি জানান, মহাসড়কে চলাচলরত নিষিদ্ধ ব্যাটারি চালিত রিকশা অটোরিকশা ধরে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কিংবা তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করলে অনেকটাই কমে যেত। তারা মহাসড়কে উঠতে সাহস পেত না এমনটাই প্রশাসনের প্রতি সুপারিশ করেন তিনি।
এব্যাপারে ট্রাফিক ইনচার্জ খসরু পারভেজ জানান, এটা নিয়ন্ত্রণের ভেতরেই আছে। প্রতিনিয়ত এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। প্রতিনিয়তই আমরা রিকশা, অটােরিকশা ও ভ্যান এগুলো ডাম্পিংয়ে পাঠাচ্ছি। এছাড়া র্যাকার বিল করা হচ্ছে। এভাবেই এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
ছবির ক্যাপশন : নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক এবং বাইপাইল-আব্দুল্লাপুর মহাসড়কের আশুলিয়ার বাইপাইল ত্রিমোড় এলাকা থেকে তোলা ছবি।
Dhaka, Bangladesh শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:43 AM |
Zuhr | 12:06 PM |
Asr | 3:09 PM |
Magrib | 5:30 PM |
Isha | 6:50 PM |