আজ শনিবার | ২৭শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১১ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১১ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | বিকাল ৩:৫৬
বিডি দিনকাল ডেস্ক:- চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের মরদেহ থাকার প্রমাণ দিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমান লাশ নেই- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রীদের নানা বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার রাতে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব নিজে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে প্রমাণ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘‘ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মরদেহ সম্পর্কে, তার বডি এখানে এসেছে কিনা সে সম্পর্কে যে কথাগুলো এখন তারা বলেছে। আমি শুধু আজকে তার একটা প্রমাণ তুলে ধরতে চাই যে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে সেই চট্টগ্রাম থেকে তার দেহ তোলা হয় তারপরে তার পোস্ট মোর্টেম করা হয়। ডা. তোফায়েল আহমেদ সাহেব তার পোস্ট পোর্টম করেছিলেন এবং ২২ টি বুলেট তার শরীর থেকে বের করে নিয়ে এসছিলেন।”
“ তারপরে বিগ্রেডিয়ার আসম হান্নান শাহ(প্রয়াত) তার মরদেহকে সামরিক এয়ার ক্রাফটে করে কুর্মিটোলায় নিয়ে এসেছিলেন যেটা আমরা সবাই স্বচক্ষে দেখেছি। আমার মনে হয় তখন ড. মোশাররফ হোসেন সাহেব উপস্থিত ছিলেন। আমি এসএ বারী এটি(উপ-প্রধানমন্ত্রী) সাহেবের প্রাইভেট সেক্রেটারি হিসেবে আমিও সেখানে উপস্থিত ছিলাম। আমরা সেখানে দে্খেছি- একটা কাঁচের বাসকেট ছিলো সেখান থেকে আমরা তার দেহ দেখেছি।”
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আজকে এই ধরনের কথাবার্তা বলার একটাই মাত্র উদ্দেশ্য সেটা হচ্ছে যে, ইতিহাসকে বিকৃত করে দেয়া, জনগনের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে সরিয়ে দেয়া এবং বাংলাদেশকে এই যে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা হচ্ছে সেখান থেকে মানুষের দৃষ্টিকে অন্যদিকে সরিয়ে দেয়া।”
“ আমাকে একজন সাংবাদিক বলেছেন, ওবায়দুল কাদের (আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) ছবি দেখাতে বলেছেন। ছবি কেউ কোনদিন দেখায় না। উনাদের ছবিটাও কী উনারা দেখাতে পারবেন? এই কথাগুলো বলার উদ্দেশ্যই হচ্ছে যে, তারা ভিন্ন দিকে নিতে চায়, ভিন্নভাবে মানুষকে প্রতারিত করতে চায়। সত্যি কথা বলতে কি এই সরকার একটা ভন্ড সরকারে পরিণত হয়েছে, হিপোক্রেট সরকার। প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা জনগনের সঙ্গে প্রতারনা করছে।”
তিনি বলেন, ‘‘ আওয়ামী লীগের এখন কোনো রাজনীতি নাই। তারা অন্তঃসার শূণ্য একটা রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। তারা জনগনের কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারে নাই, তারা করোনার সমস্যার সমাধান করতে পারে নাই, আজকে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান তারা করতে পারে নাই। আজকে আমাদের শিশুদের লেখা-পড়া প্রায় ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে।”
‘‘ অর্থনীতি একেবারে রসাতলে যাচ্ছে। আজকে কোনো রকমের রাষ্ট্রের অগ্রগতির জন্য, জনগনের কল্যাণের জন্য, সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য তারা কোনো কাজই করতে পারেনি । আমার সব অর্জনগুলো তারা ধবংস করে নিয়ে গেছে, হরণ করে নিয়ে গেছে। সেজন্য তারা মিথ্যাচার করে জনগনের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিতে নিয়ে যেতে চায়।”
এই অবস্থা উত্তরণে সকলকে বিশেষ করে তরুন প্রজন্মকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ এই সরকার যতদিন থাকবে, আরো বেশি দিন যদি থাকে বাংলাদেশ আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। সেজন্য আমাদের বড় প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে জনঐক্য সৃষ্টি করা। ১৯৭১ সালে যেমন জিয়াউর রহমান জণযুদ্ধ শুরু করেছিলেন সেই রকম জনযুদ্ধের জন্য আমাদেরকে ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য।”
বিএনপির স্বাধীনতা সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির উদ্যোগে ‘২৮ আগস্ট ১৯৭১: জিয়াউর রহমান কর্তৃক রৌমারীতে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রথম বেসামরিক প্রশাসনের উদ্বোধন’ শীর্ষক এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিষয়বস্তুর উপর তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন দলের তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক একেএম ওয়াহিদুজ্জামান।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেন, ‘‘ রৌমারী মুক্তিযুদ্ধের একটি গৌরবময় ইতিহাস, আমাদের গর্বের স্থান। জেড ফোর্সের অধীনে এই অঞ্চলটি ছিলো স্বাধীন দেশের মুক্তাঞ্চল। ২৮ আগস্ট আমাদের জেড ফোর্সের কমান্ডার জিয়াউর রহমান সেখানে বেসামরিক প্রশাসনের উদ্বোধন করেন। ওই সময় রৌমারীর জনগন ট্যাক্স দেওয়ার জন্য লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকতো। তারা জানে যে, তাদের ট্যাক্সের টাকায় মুক্তিযুদ্ধের প্রচেষ্টা আরো জোরদার হবে। জিয়াউর রহমান কেবলমাত্র একজন সময় নায়কই ছিলেন না। কিভাবে বেসামরিক প্রশাসন চালাতে হবে একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন তিনি রৌমারীতে।”
“ আজকে ইতিহাসের এমনই বিকৃতি ঘটেছে যে, জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা কিনা এটাও আমাদের বক্তৃতা দিয়ে বলতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় বিদেশীদের বক্তব্য কিংবা ইতিহাসের যে নির্মোহ সত্য এগুলোকে ভুলিয়ে দেয়ার জন্য বর্তমান সরকার প্রাণপন চেষ্টা করে যাচ্ছে। জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা, জেড ফোর্সের বীরত্ব গাঁথা, রৌমারীর সেই মুক্তাঞ্চলের আকাশ-বাতাস, বৃক্ষ-লতা সব কিছুই সাক্ষী দেবে যে, জিয়াউর রহমান মহান মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। এই অবৈধ সরকার, অনির্বাচিত সরকারের কথায় দেশবাসী মোটেও আলোড়িত হবে না। মিথ্যা আর কত টিকবে এখানে?”
তিনি বলেন, “ আজকে আমরা একটি অবরুদ্ধ দেশে বসবাস করছি। আজকে প্রয়োজন সেই গামছা পরা, গেঞ্জি গায়ে দেয়া গ্রামীন মুক্তিযোদ্ধাদের। তাদেরকে এসে শহর দখল করতে হবে, তাদেরকে দেশবাসী সামনে পরিচয় দিতে হবে কারা মুক্তিযুদ্ধে করেছিল এই দেশে আর কারা বিদেশে গিয়ে আরামে ছিলো।”
“ এদেশ কোনো বক্তৃতায় স্বাধীন হয় নাই। বুকের রক্ত দিয়ে ইতিহাস করেছি আমরা। জেড ফোর্সের একজন সৈনিক হিসেবে আমি অত্যন্ত গর্বিত। স্বাধীনতা যুদ্ধে সবচাইতে ভয়াবহ যুদ্ধে অংশ গ্রহন করেছে জেড ফোর্স, আমাদের যেমন খেতাবধারীর সংখ্যা সর্বাধিক তেমনি শহীদের সংখ্যাও আমাদের সর্বাধিক।আজকে ইতিহাসকে বিকৃতি করে সেই গৌরবের কথা জনগনের মন থেকে মুছে ফেলা যাবে না।”
জাতীয় কমিটির সদস্য আহবায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেন সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আব্দুস সালামের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও চিলমারী উপজেলার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারী সরকার বক্তব্য রাখেন।
Dhaka, Bangladesh শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:43 AM |
Zuhr | 12:06 PM |
Asr | 3:09 PM |
Magrib | 5:30 PM |
Isha | 6:50 PM |