আজ রবিবার | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১১:৪৪
আসাদুল করিম শাহীন:- বাংলাদেশের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ সন্তান, “শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম।” “মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের রুপকার, মুক্তিযুদ্ধে জেড ফোর্সের অধিনায়ক, “বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ” দর্শনের প্রবক্তা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। ইতিহাস দ্রষ্টা মহান এই নেতার আজ ৮৬তম জন্মবার্ষিকী। জাতি আজ কৃতজ্ঞতার সংগে ও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে তাঁর ঐতিহাসিক ও অবিস্মরণীয় অবদানকে। মহান স্বাধীনতার ঘোষক বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং দক্ষ ও জনপ্রিয় রাষ্ট্রনায়ক হিসাবে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জাতির ইতিহাসে ও আমাদের জাতীয় জীবনে যে অনন্য সাধারণ ভূমিকা ও অবদান রেখে গেছেন তা-ই তাকে জনগণের হৃদয়ে শ্রদ্ধার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। স্বদেশ প্রেম, গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য ও মূল্যবোধের প্রতি সুগভীর শ্রদ্ধা দেশের উন্নয়ন, জনকল্যাণে ঐকান্তিক আগ্রহ এবং ব্যক্তি সততার সুনাম তাকে বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসে এক স্মরণীয় ও জননন্দিত ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে। শহীদ জিয়ার ছেলেবেলা কেটেছে কলকাতায়। তাঁর বাবা মনসুর রহমান তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চপর্যায়ের একজন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ছিলেন। কলকাতার হেয়ার স্কুলে শহীদ জিয়া ৭ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় পরিবারের সঙ্গে শিশু জিয়া করাচী চলে যান। সেখানে কেটেছে তাঁর স্কুল ও কলেজ জীবন। করাচীর স্কুল-কলেজে অধ্যয়নকালে শহীদ জিয়া একজন ভাল হকি খেলোয়াড় ছিলেন। স্কুলে তিনি ইংরেজীতে ভাল বক্তৃতা দিতে পারতেন। কৈশোরে নির্মেদ দেহের অধিকারী এক আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। এই জন্য সকলেই তাকে সমীহ করে চলত। বই পড়া ছিল তাঁর বিশেষ শখ। তিনি প্রায়ই স্কুল লাইব্রেরীতে বই নিয়ে পড়াশুনা করতেন। জিয়াউর রহমানের ডাক নাম ছিল কমল। ছেলেবেলায় কমল ছিল লাজুক স্বভাবের এবং অন্যদের চেয়ে একটু আলাদা। ঝগড়া-বিবাদ এড়িয়ে চলতেন শিশু কমল। মিথ্যা বলতেন না। কেউ মিথ্যা বললে অপছন্দ করতেন। করাচীর ডি জে কলেজে পড়ার সময় ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান সামরিক একাডেমিতে একজন অফিসার ক্যাডেট হিসাবে শহীদ জিয়া যোগদান করেন। ১৯৫৫ সালে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসাবে শহীদ জিয়া কমান্ডো ট্রেনিং লাভ করেন। ১৯৬৭ সালের এপ্রিল মাসে জিয়াউর রহমান ঢাকার অদূরে জয়দেবপুর সাব ক্যান্টনমেন্টে ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের দ্বিতীয় ব্যাচে লিয়নে সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসাবে যোগদান করেন। একই বছর উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য তিনি পশ্চিম জার্মানী যান। ১৯৭০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তাকে চট্টগ্রামে বদলি করা হয়। তাঁর ঘাটি ছিল ষোলশহর বাজারে। এখান থেকেই শহীদ জিয়া দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ১৯৭১ সালে জাতির সবচেয়ে বড় বিপদের দিনে মুক্তিপাগল দিশেহারা জনগণের কাছে, একটি “অবিস্মরণীয় কণ্ঠস্বর” তাদের হৃদয়ে আশার সঞ্চার করেছিল। “১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ দেশের পূর্বাঞ্চল থেকে জাতির সেই ক্রান্তিলগ্নে ভেসে এসেছিল একটি কণ্ঠস্বর ‘আমি মেজর জিয়া বলছি।’ “সেই কণ্ঠ সেদিন অযুত প্রাণে নতুন সঞ্জীবনী মন্ত্র এনে দিয়েছিল।” এ বিষয়ে শহীদ জিয়ার একজন ঘনিষ্ঠ সহকর্মী যিনি ১৯৭০ সালের অক্টোবর মাস থেকে ১৯৭২ সালের মে মাস পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে সার্বক্ষণীক ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব:) অলি আহমদ বীর বিক্রম তার লেখায় উল্লেখ করেছেন, “২৫ মার্চ পাক সেনারা এদেশের নিরস্ত্র মানুষের উপর যখন হামলা করল আমরা সবাই জানি, তখন আওয়ামী লীগ নেতাদের অনেকে পাকিস্তানীদের হাতে বন্দী হন, আত্মসমর্পণ করেন। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, পাক সেনারা যখন ২৫ মার্চ ঢাকার বুকে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করল, তৎকালীন ইপিআর হেড কোয়ার্টার দখল করল এবং সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের সমস্ত কিছু তাদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিল এবং যখন ঢাকার সঙ্গে সেদিন সন্ধ্যা ৬ টার পর থেকে দেশের অন্যান্য জেলার সঙ্গে টেলিফোন, ওয়্যারলেস বা অন্য সব যোগাযোগের মাধ্যম বন্ধ হয়ে গেল তখন নেতারা সবাই নিজেদের জীবন রক্ষার জন্য আত্মগোপন করলেন। এটা বোধ করি কারো অজানা থাকার কথা নয়। এদেশের জনগণ তখন চরম হতাশা ও অনিশ্চয়তায় ভুগছিল, একটা রাজনৈতিক নৈরাজ্য বিরাজ করছিল সর্বত্র। তখন কেউ কোনো দিক-নির্দেশনা দিতে পারে নাই। কেউ জানত না কোথায় কি হচ্ছে? এদেশের ভবিষ্যতই বা কি তাও তাদের জানা ছিল না। সেদিন মেজর জিয়ার নেতৃত্বে আমরা কয়েকজন সামরিক অফিসার এবং ৮ম বেঙ্গল রেজিমেন্টের মাত্র ৩শ’ বাঙালি সৈন্য নিয়ে ২৫/২৬ মার্চ রাত প্রায় আনুমানিক ১১টার দিকে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করি। আমাদের না ছিল প্রয়োজনীয় অস্ত্র, না গোলাবারুদ। সেদিন আমরা চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের যেসব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করি তাঁরা হলেন এম আর সিদ্দিকী, মোশাররফ, আতাউর রহমান কায়সার, প্রফেসর নুরুল ইসলাম প্রমুখ। তাঁরা সবাই ছিলেন ভীত, আতঙ্কিত। কি করতে হবে, কোথায় যেতে হবে সেদিন তাদের কেউ সে বিষয়ে কোনো দিক নির্দেশনা দিতে পারছিলেন না। জাতির সেই চরম মুহূর্তে এবং বিপদের সময়ে ৩৫ বছর বয়স্ক তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে, রেডিও-এর মাধ্যমে এই দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করতে হবে, জনগণকে মুক্তিযুদ্ধের জন্যে আহবান করতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, নচেৎ পাক সেনারা হত্যাকান্ড চালিয়ে এদেশকে শাসন ও শোষণ করবে, বাইরের জগতের পক্ষে কিছুই জানা সম্ভব হবে না। আমরাও স্বাধীন হতে পারবো না। তাই সেই দিনের মেজর জিয়া তাঁর নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র দখল করে এদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করলেন এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণের আহবান জানালেন দেশবাসীকে। মেজর জিয়ার সেদিনের সেই কণ্ঠস্বর শুনে এদেশের জনগণ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। দিশেহারা জাতির জীবনে আশার সঞ্চার হলো। সকলে বুঝতে পারলো কি করতে হবে। দলে দলে সবাই মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করলো। তারই ফলশ্রুতি হিসাবে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সাল আমরা স্বাধীনতা লাভ করলাম। কিন্তু আজ আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে কার ভুলের জন্যে এদেশের ৩০ লাখ নর-নারী, বুদ্ধিজীবী ও শিশু শহীদ হলেন? কে ছিলেন ২৫ মার্চের আগে আমাদের নেতা, এদেশের নেতা? কার ভুলের জন্যে এই মাশুল দিতে হল? সেই দুর্যোগের দিনে আওয়ামী লীগের নেতারা কোথায় ছিলেন? আজ কেউ কেউ বলতে শুরু করেছেন, মেজর জিয়াকে শেখ মুজিব নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বাধীনতা ঘোষণা করতে। কিন্তু তাদের এ বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি সব সময় মেজর জিয়ার সঙ্গে ছিলাম। কেউ তাকে হুকুম দেন নাই। তিনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কারণ তিনি এদেশকে এবং এদেশের জনগণকে ভালবাসতেন। বিপদের সময় পলায়ন করা কাপুরুষের কাজ, এটা তিনি বুঝতেন। সেই দিন যদি মেজর জিয়া চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা না করতেন, জানি না, এদেশ স্বাধীন হতো কি-না। সেদিন থেকে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা মেজর জিয়াকে পছন্দ করতেন না। তাই মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় তাঁকে তিন তিন বার এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বদলি করা হয়। অন্য কোন সেক্টর কমান্ডারকে এমন করে বদলি করা হয় নাই। আমার মনে হয় তাঁর বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন দিবা-রাত্রি তিনি শুধু চিন্তা করতেন, কিভাবে পাকসেনাদের ঘায়েল করা যায়। এই দীর্ঘ নয় মাসে কোনো একটি দিনও তিনি তাঁর স্ত্রী বা পুত্রের কথা চিন্তা করেন নাই দেশ আর দেশের মানুষই ছিলো তাঁর সার্বক্ষণিক চিন্তায়। যুদ্ধ শেষে জিয়াউর রহমান পুনরায় সেনাবাহিনীতে ফিরে আসেন এবং ডেপুটি চীফ অব আর্মি স্টাফের পদে বহাল হন।” ১৯৭৫ সালে কয়েকবার ক্ষমতার রদবদল হয়। কিন্তু তিনি তাঁর উপর অর্পিত রাষ্ট্রীয় পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কারো অনৈতিক প্ররোচনায় প্রলুব্ধ হননি। তিনি বিশ্বস্ততার সঙ্গে তাঁর নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন। ৭৫ এর ৩ নভেম্বর আধিপত্যবাদীদের এদেশীয় চরেরা ষড়যন্ত্র করে তাঁকে বন্দী করে। কিন্তু ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক বিপ্লবের মাধ্যমে সিপাহী জনতা তাঁকে মুক্ত করে পুনরায় তাঁর উপর দায়িত্ব অর্পণ করে এবং ক্রমে তিনি দেশ পরিচালনার দায়িত্বে ব্রতী হন। পূর্ণ ক্ষমতা লাভের পর বাংলাদেশের কষ্টার্জিত স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের পতাকা সমুন্নত রাখার, গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য ও মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় এবং দেশ গঠন ও জনকল্যাণের শপথ নিয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রমনা ও গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী। এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং অর্জিত স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র যা আজ ভুলণ্ঠিত। গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য ও মুল্যবোধে এবং এদেশের মানুষের স্বতন্ত্র-জাতিসত্তা ও স্বাধীনতায় বিশ্বাসী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ক্ষমতালাভের পর দেশের শাসনতন্ত্র সংশোধনের মাধ্যমে সেই বিশ্বাসেরই প্রতিফলন ঘটান, বৃহত্তর জনগণের স্বতন্ত্র আত্মপরিচয় ও আশা আকাক্সক্ষা তুলে ধরেন এবং জনগণের উপর জোরপূর্বক চাপিয়ে দেওয়া জগদ্দল পাথর তথাকথিত বাকশাল বিলুপ্ত করে বাংলাদেশে বহু দলীয় গণতন্ত্রের জানালা খুলে দেন। যা ছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রধান লক্ষ্য। শহীদ জিয়া ক্ষমতা গ্রহণের পর একাধারে অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে নিজস্ব স্বকীয়তা ও আত্মশক্তির বিকাশ, দেশ গঠন, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে উদ্যোগ ও ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরার এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক জোরদার করার উদ্যোগ নেন। তিনি গভীরভাবে উপলব্ধি করেন যে, বর্তমান বিশ্বে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং পারস্পরিক ও আন্তর্জাতিক সাহায্য সহযোগিতা ছাড়া অস্তিত্ব রক্ষা ও উন্নয়ন কঠিন। বাংলাদেশের মতো একটি নব্য স্বাধীন, জনবহুল ও দারিদ্রপীড়িত দেশের পক্ষে তা যে আরো কঠিন সে সত্য ও বাস্তবতা তিনি গভীরভাবে উপলব্ধি করেন। অত্যন্ত বাস্তব কারণে প্রেসিডেন্ট জিয়া সার্বভৌম সমতার ভিত্তিতে প্রতিবেশী দেশসমূহ ও বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। শহীদ জিয়ার বিশেষ উদ্যোগ ও তৎপরতার ফলেই মুসলিম বিশ্বের বিশেষত মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশ সমূহের সঙ্গে বাংলাদেশের গভীর মৈত্রীবন্ধন ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে উঠে। ও আই সি তথা ইসলামী সম্মেলন সংস্থার তৎপরতায় প্রেসিডেন্ট জিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। সার্বভৌম সমতার ভিত্তিতে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং উন্নয়নে সহযোগিতার নীতিতে বিশ্বাসী প্রেসিডেন্ট জিয়া সার্ক ধারণার পথদ্রষ্টা এবং এই সংগঠনের বড় প্রেরণার উৎস। জাতিসংঘ থেকে শুরু করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থায় বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও সম্মানজনক অবস্থানের পেছনে প্রেসিডেন্ট জিয়ার ভূমিকা ও অবদান অবিস্মরণীয়। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সম্মান ও স্বীকৃতি এবং বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে শহীদ জিয়া স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির পথেও অগ্রসর হতে পেরেছিলেন। রাজনীতিতে জিয়াউর রহমান ছিলেন নিঃসন্দেহে একজন ব্যতিক্রমী পুরুষ। রাজনীতির নিস্তরঙ্গ সমুদ্রে তিনি প্রচন্ড বেগ সৃষ্টি করেছিলেন। রাজনীতি তাকে পরিণত করেছিল জনগণের শক্তিতে বলীয়ান শ্রেষ্ঠ জাতীয় ব্যক্তিতে। জনগণের বিশ্বাস আর প্রত্যাশার কাছে তিনি ছিলেন আশা জাগানিয়া মানুষ। সত্তর ও আশির দশকের ক্রান্তিকালে বিশ্বে যে ক’জন নেতা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন শহীদ জিয়া ছিলেন তাদের মধ্যে প্রথম সারিতে। শহীদ জিয়া রাজনীতি সম্পর্কে ছিলেন সচেতন ব্যক্তিত্ব সবদিকে ছিল তাঁর সমান দৃষ্টি। তিনি সংবাদপত্রে “আমাদের পথ” নামে একটি রাজনৈতিক প্রবন্ধ লেখেন তাতে শহীদ জিয়া লিখলেন “মানুষের কর্মে, চিন্তা-ভাবনা, রাজনীতি-এসব কিছুই নির্ণীত ও পরিচালিত হয় একটা বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে। ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে এ জীবনদর্শনের তারতম্য ঘটতে পারে। তাই কোনো কোনো মানুষের রাজনীতি ও জীবনদর্শন ভীতির উদ্রেক করলেও সব সময় তা বিপজ্জনক বা অকল্যাণজনক নাও হতে পারে। বস্তুতঃ কোন কিছুকে অবলম্বন না করে কোনো রাজনীতি কোনো দর্শনের উন্মেষ এবং বিকাশ ঘটতে পারে না। উদাহরণস্বরূপ মার্কস ‘ইজম’-এর কথা বলা যেতে পারে। যদি আমরা মার্কস-ইজম নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করি তাহলে দেখা যাবে এর একটা আদর্শ এবং লক্ষ্য আছে। এ আদর্শ ও লক্ষ্যকে ভিত্তি করেই রাশিয়ায় মার্কস-ইজম কায়েম হয়েছিল। একথা আজ বিনাদ্বিধায় বলা যেতে পারে যে ১৯১৭ সালে রাশিয়ায় মার্কস-ইজম এর প্রভাব না ঘটলে হয়তো রুশ জাতি এতটা উন্নত অবস্থায় উপনীত হতে পারতো না। হয়তো বা সেখানকার সাধারণ মানুষের অবস্থার আরও অবনতি ঘটতো। এই যে আমরা সবাই রাতের বেলায় আলো জ্বালাই এর পেছনেও যুক্তি আছে, ভিত্তি আছে। রাজনৈতিক দলের সদস্য হওয়ার পেছনেও রয়েছে একটা ভিত্তি আছে একটা যুক্তি আছে। এ ভিত্তিটা কি? অপরাপর বিরোধী রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক দর্শনকে যথাযথভাবে যুক্তি ও কর্মসূচি সহ মোকাবিলা করে স্বীয় জীবনবোধের আলোকে সমাজ ও জাতিকে গড়ে তোলা এবং কখনও কখনও পথভ্রষ্ট স্বেচ্ছাচারের কাছ থেকে বাঁচার তাগিদই হচ্ছে একটি রাজনৈতিক মতের পতাকাতলে সমবেত হবার মৌল কারণ। এর অর্থ এই দাঁড়াচ্ছে যে-রাজনীতি, রাজনৈতিক দর্শন ও বিশ্বাস মানুষের একটা সুষ্ঠু সুন্দর চেতনাবোধ।” বাংলাদেশী জাতিসত্তার রূপকার ছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি ছিলেন আমাদের রাষ্ট্র কাঠামোর সবচেয়ে জনপ্রিয় রাষ্ট্রপতি। তিনিই ছিলেন এই জাতির শ্রেষ্ঠ নেতা। স্বল্প সময় তিনি রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলেন। তাঁর এই স্বল্পকালীন সময়ই বাংলাদেশের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ সময়। এই সময় জাতির জন্য তাঁর উপহার তাঁর কালজয়ী দর্শণ “বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ”। এটি একটি চেতনার নাম। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে আমাদের জাতির অস্তিত্বের, ভৌগলিক অবস্থান, রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক উন্মেষ এবং তাঁর ঐতিহাসিক পটভূমি আমাদের জাতীয় চেতনার রূপরেখা নির্ধারণ করেছে। এই জাতীয় চেতনার উদ্বোধন পর্যায় ক্রমিক ভাবে উপনিবেশবাদ বিরোধী সংগ্রাম জাতিগত নিপীড়ণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং পরবর্তীকালে সম্প্রসারণবাদ ও আদিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হয়েছে। ১৯৪৭, ১৯৭১ ও ১৯৭৫ সেই পর্যায়ক্রমিক ইতিহাস ও সংগ্রামের প্রক্রিয়ার ফল। আমাদের জাতীয় অস্থিত্ব নির্ধারিত হয়েছে অসংখ্য ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। এর নির্যাস হচ্ছে আমরা বাংলাদেশী। ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল নিয়ে আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম জাতি রাষ্ট্র তাকে রক্ষা করা, প্রাণ দিয়ে ভালবাসার মধ্যেই নিহিত রয়েছে আমাদের জাতীয়তাবাদের মূল শক্তি। আমাদের স্বাজাত্যবোধ একান্তভাবেই আমাদের রাজনৈতিক চেতনার প্রতিফলন। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের মূল প্রেরণা জাতীয় স্বাধীনতা, রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব এবং আত্মনির্ভরশীল জাতীয় অর্থনীতি গড়ে তোলা যা ছিল শহীদ জিয়ার স্বপ্ন। তিনি মনে করতেন দেশীয় ও বৈদেশিক শক্তিকে আমাদের আত্মশক্তির দ্বারা আমরা পরাস্ত করব। সেই আত্মশক্তির মূল চেতনা বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ। “বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ” বিষয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একটি দীর্ঘ প্রবন্ধ লেখেন, তিনি লিখলেন, (ক)“বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের দর্শন শত শত বছর ধরে এদেশের আপামর জনগণের অন্তরে চিরজাগরূক রয়েছে। যুগ-যুগান্তরের দেশপ্রেমিকদের হৃয়ের মর্মমূলে নিহিত তাদের সব উৎসাহ, উদ্যোগ ও প্রেরণার উৎস এই দর্শন। এই দর্শনে নিহিত রয়েছে বাস্তব অর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মসূচি যা দেশের ঐক্যবদ্ধ জনগণকে সমকালীন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির উপযোগী বাস্তবমূখী ও সময়োচিত শান্তিপূর্ণ বিপ্লবের কর্মসূচি বাস্তবায়নে উদ্বুদ্ধ করে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সুসংবদ্ধ করবে, জাতিকে সুনিশ্চিতভাবে অগ্রগতির ও সমৃদ্ধির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেবে এবং বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে মর্যাদা ও গুরুত্বের আসনে সুপ্রতিষ্ঠিত করবে।” (খ) “আমাদের মূল লক্ষ্য তথা বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিমূলে রয়েছে যে শোষণমুক্ত সমাজের স্বপ্ন, তাকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে পরিকল্পিত পদ্ধতিতে জনগণের সম্মিলিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে। শোষণমুক্ত সমাজ মূলত বোঝায় ধর্ম-বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, বাসস্থান ও পরিবার পরিকল্পনার মৌলিক চাহিদা পূরণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। মূল এই বিষয়টির সঙ্গে জড়িয়ে আছে আরো অনেক আনুষঙ্গিক বিষয়। শান্তিপূর্ণ বিপ্লবের মাধ্যমে এ সবের সমাধান করতে হবে। সে বিষয়ে পরে আরো বিশদ ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে। একথা স্পষ্টভাবে বুঝতে হবে যে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, একটি শোষণমুক্ত সমাজ যা অত্যন্ত বাস্তব ও প্রগতিশীল একটি সমাজ- যাতে থাকবে সমতা, নিরপেক্ষতা ও ন্যায়বিচার। এই পর্যায়ে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের মূল বিষয়গুলো ব্যাখ্যার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে যা ছাড়া জাতীয়তাবাদী দর্শনের আন্দোলন এবং তার মূল লক্ষ্য অর্থাৎ শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার কাজ হয়ে পড়বে অসম্পূর্ণ, ত্রুটিপূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর। আমরা বলতে পারি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে সাতটি মৌলিক বিবেচ্য বিষয় রয়েছে, যা হচ্ছে ঃ (১) বাংলাদেশের ভূমি অর্থাৎ আন্তর্জাতিক সীমানার মধ্যবর্তী আমাদের ভৌগলিক ও রাজনৈতিক এলাকা (২) ধর্ম ও গোত্র নির্বিশেষে দেশের জনগণ (৩) আমাদের ভাষা বাংলা ভাষা (৪) আমাদের সংস্কৃতি-জনগণের আশা-আকাঙক্ষা, উদ্দীপনা ও আন্তরিকতার ধারক ও বাহক আমাদের নিজস্ব কৃষ্টি ও সংস্কৃতি (৫) দুশো বছর উপনিবেশ থাকার প্রেক্ষাপটে বিশেষ অর্থনৈতিক বিবেচনা বৈপ্লবিক দিক (৬) আমাদের ধর্ম-প্রতিটি নারী ও পুরুষের অবাধে তাদের নিজ নিজ ধর্মীয় অনুশাসন ও রীতি-নীতি পালনের পূর্ণ স্বাধীনতা (৭) সর্বোপরি আমাদের ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ যার মধ্য দিয়ে আমাদের বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের দর্শন বাস্তব ও চুড়ান্ত রূপ লাভ করেছে।” (গ) “বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের বাস্তবমূখী রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক কর্মসূচির দর্শনে উদ্বুদ্ধ করে প্রতিটি মানুষকে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে তার ব্যক্তিগত ও সম্মিলিত দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন ও নিষ্ঠাবান করে নারী ও পুরুষ নির্বিশেষে তাদের প্রত্যেককে দেশ ও তার জনগণ এবং বিশ্ববাসীর কল্যাণ করার সুযোগ করে দিতে হবে। এ কথা সুস্পষ্টভাবে বুঝতে হবে যে, জাতি হিসেবে আমরা নিজেরা শক্তিশালী, সুদৃঢ় ও সফলকামী না হতে পারলে বিশ্বমানবতার সেবা করতে পারব না। পূর্বে উল্লেখিত পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতার নিশ্চয়তা বিধান করতে হলে আমাদেরকে বহুদলীয় গণতন্ত্র কায়েম করতে হবে যাতে জাতীয় স্বার্থেই গঠনধর্মী বিরোধী দলের অস্তিত্ব থাকবে। দেশের উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণ এসব চিন্তাও কাজের মূল পথ নির্দেশিকা হবে।” (ঘ) “আমাদের বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের কর্মসূচির উদ্দেশ্য হচ্ছে, ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগতভাবে মানুষের প্রতিভা ও নিজস্ব ক্ষমতার পূর্ণ সদ্বব্যবহারের ব্যবস্থা করা। সেজন্য জনগণকে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ইউনিটে সুসংগঠিত করা এবং সর্বনি¤œ গ্রাম পর্যায়ে সংগঠন গড়ে তোলার জন্য বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারণাকে কাজে লাগানো। এ জন্য আমাদের দলকে সর্বনি¤œ পর্যায়ে সুসংগঠিত করে ধাপে ধাপে উপরে আসতে হবে। বিভন্ন পেশায় নিয়োজিত কর্মজীবী পুরুষ ও মহিলাদের রাজনৈতিক ভূমিকা নিশ্চিত করার জন্য তাদেরকে দলের সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যে বিভিন্ন অঙ্গ দলে সামিল করতে হবে। এ জন্য আমাদের দলে যুবক, মহিলা, কৃষক ও শ্রমিকদের জন্য বিভিন্ন অঙ্গ দল রয়েছে। আমরা গ্রামের সর্বনি¤œ পর্যায়ে আর্থ-সামাজিক ইউনিট হিসেবে স্বনির্ভর গ্রাম সরকার গড়ে তুলেছি যা হবে একটি আত্মনির্ভরশীল সরকার এবং তা খাদ্য, সাক্ষরতা, স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও আইন-শৃঙ্খলার মতো মৌলিক ও মানবিক প্রয়োজন মেটাতে সচেষ্ট থাকবে। জাতীয় বিবেচনার আলোকে এ ছাড়াও জাতীয় পর্যায়ে মহিলা, যুবক, তরুণী ও শিশুদের সুসংগঠিত করা হবে যাদের কাজের সমন্বয় সাধিত হয় এবং কর্মীদের একাত্মতা প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতীয় উন্নয়ন ও পুনর্গঠনের কাজে সমাজে সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এভাবে সব রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন তথা সার্বিকভাবে জনগণকে শান্তিপূর্ণ বিপ্লবের কর্মসূচিতে সামিল করতে হবে।” শহীদ জিয়ার স্বপ্নছিল বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা। তিনি বাংলাদেশকে স্বনির্ভর ও আত্মপ্রত্যয়ী করার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে গেছেন। তাঁর আমলে বাংলাদেশের অর্থনীতিসহ সকল ক্ষেত্রে ঈর্ষান্বিত উন্নতি সাধিত হয়। এছাড়া দেশের অগণিত মানুষের জীবনের দুঃস্বপ্ন কেটে গিয়ে এক সোনালী ভবিষ্যতের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছিল। তাঁর সময়েই “তলাবিহীন ঝুড়ি” উপাধি প্রাপ্ত দেশ উন্নতি আর সমৃদ্ধির নতুন দিগন্তের পথে বিরামহীন যাত্রা শুরু করেছিলো। বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি কৃষি, শিল্প ও রেমিটেন্সের ক্ষেত্রে তিনি বিপ্লবের সূচনা করেন। তিনিই বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান খাত তৈরী পোষাক শিল্পের গোড়াপত্তন করেন। তিনিই প্রথম বাংলাদেশে ইপিজেড এর শুভ সূচনা করেন এবং তা গণচীনের আগেই। তাঁর কর্মসূচির মধ্যে তাঁর রাজনৈতিক দর্শন নিহিত রয়েছে যা’ হলো-উৎপাদনমুখী রাজনীতি, বহুদলীয় গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি, ন্যায়ভিত্তিক শোষনমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা। এই বিষয়গুলো ছিল তাঁর রাজীনতির মূল লক্ষ্য। তাঁর রাজনীতির আর একটি লক্ষ্য ছিল বিপ্লব সেই বিপ্লব হলো, শিক্ষা বিপ্লব, কৃষি বিপ্লব, শিল্প বিপ্লব আর জনসংখ্যার বিস্ফোরণকে প্রাণান্তকর ভাবে ঠেকিয়ে রাখা। আজ এই সকল কর্মসূচি থেকে দেশ অনেক দূরে সরে গেছে, এটাই হচ্ছে সুষম উন্নয়নের অন্তরায়। শহীদ জিয়ার অসমাপ্ত বিপ্লবকে এগিয়ে নেয়া এবং সম্পূর্ন করার দায়িত্ব তাঁরই স্বপ্ন ও আদর্শে উজ্জীবিত রাজনৈতিক উত্তরাধিকার বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের সকল নেতাকর্মীরা, যদি ঐক্যবদ্ধ হয় এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আত্মনিয়োগ করে তবে সেটাই হবে শহীদ জিয়ার প্রতি প্রকৃত সম্মান প্রদর্শন। স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের রাজনীতির চরম অধঃপতনের সময়ে মহান দেশপ্রেমের আলোক বর্তিকা নিয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। পার্থিব লোভ-লালসা ও ক্ষমতার মোহ তাঁকে ন্যায় ও সত্যের আদর্শ থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্যুত করতে পারেনি। অন্যায় ও অসত্যের নিকট তিনি কোনদিন মাথানত করেন নি। আজ জাতির শ্রেষ্ঠ নায়ক শহীদ জিয়ার পবিত্র জন্মদিনে মহান আল্লাহর নিকট তাঁর আত্মার চিরশান্তি কামনা করছি।
লেখক:আসাদুল করিম শাহীন,সহ-প্রচার সম্পাদক, বিএনপি
Dhaka, Bangladesh রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:16 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:57 AM |
Asr | 2:57 PM |
Magrib | 5:17 PM |
Isha | 6:38 PM |