আজ সোমবার | ২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১৩ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১২:৪২
এস.এম.মনির হোসেন জীবন- সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বহুল কাঙ্খিত তুরাগ থানা আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের ত্রি- সম্মেলনের বাজী মাত্র এক দিন। আগামী রোববার (২৪ জুলাই) ২০২২ তুরাগের কামার পাড়া উচচ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে অনুষ্টিত হতে যাচেছ এ সম্মেলন। এ সম্মেলনকে ঘিরে তুরাগে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে এক ধরনের উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। শেষ মুহুত্বে চলছে নানা সমীকরণ। সর্বমহলে বইছে জল্পনা কল্পনা। এ সম্মেলনের মাধ্যমে তুরাগ থানা এবং এর অধীনস্হ ৫২, ৫৩ ও ৫৪ নং মোট ৩টি ওয়ার্ডের নতুন কমিটি গঠন করা হবে। দীর্ঘদিন পর এবারই তুরাগ থানা আওয়ামী লীগে ভিন্ন একটি পরিবেশ বিরাজ করছে। নেতাদের মধ্যে এক ধরনের প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। থানার আগের রাজনীতি সব কিছু প্রয়াত একজন নেতাকে ঘিরে চললেও এবার নেই চিরচেনা সেই পুরোনো সম্মেলনকে সামনে রেখে পদপ্রত্যাশী নেতাদের লবিং-তদবিরও শেষ মুহুত্বে বেশ জোরেশোরে চলছে। পদ পাওয়ার আশায় অনেকেই আদাজল খেয়ে কোমরে গামছা বেধেঁ পুরো মাঠ ঘুরে বেড়াচেছন। ঢাকা মহানগর উত্তরের সর্বউত্তরের তুরাগ থানা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে কারা আসছেন, তা নিয়ে শেষ মুহুত্বে নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। তবে, থানাটির এবারের কমিটি নিয়ে রয়েছে জটিল এক সমীকরণ। বিশেষ করে দলের হাইকমান্ড ও শীর্ষ পর্যায়ের নীতিনির্ধারকরা বলছে, দলের তৃণমূল পর্যায়ের পরীক্ষিত, ত্যাগী ও প্রকৃত নেতাদেরকে এবার দল মূল্যায়ন করবে এমনটি শোনা যাচেছ।
তুরাগের স্থানীয় তৃনমূল পর্যায়ের কয়েকজন নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উত্তরা বিভাগের সাতটি থানার মধ্যে তুরাগ থানাটিতে গত প্রায় ২০ বছর থেকে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন হরিরামপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্বা প্রয়াত মো, আবুল হাসিম। তার সঙ্গে চলতি সেশনে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন এমডি হালিম। প্রয়াত সভাপতি আবুল হাসিম এর মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) ৫৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং তুরাগ থানা আওয়ামীগের সিনিয়র সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন। তুরাগ থানা আওয়ামী লীগে প্রয়াত সভাপতির পরই নাসির উদ্দিনের নাম ঘুরেফিরে আসে। কিন্তু নানা কারণে তিনি এ থানায় মূল নেতৃত্বে আসতে পারেননি। তাই এবারের তুরাগ থানা আওয়ামীগের ত্রি- বার্ষিক সম্মেলনে তিনিও একজন সভাপতি পদ প্রার্থী।
এছাড়া সভাপতি পদে আরো তিন জন প্রার্থীর কথা শোনা যায়, তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন তুরাগ থানা আওয়ামীগের সহসভাপতি, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, দক্ষ সংগঠক, ত্যাগী, তৃণমূল পর্যায়ের দলের পরীক্ষিত নেতা
নুরুল ইসলাম সুরুজ, তুরাগ থানা আওয়ামীগের সহসভাপতি আলহাজ্ব মো, লেহাজ উদ্দিন এবং তুরাগ থানা আওয়ামীগের সাধারন সম্পাদক এমডি হালিমের নাম শোনা যাচেছ। তাদের মধ্যে নুরুল ইসলাম সুরুজের প্রতি নগর নেতাদের বিশেষ নজর থাকায় বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও তাকে পড়তে হতে পারে জটিল হিসেবের খেলায়, তবে, অঞ্চল ভিত্তিক সেই অঙ্কে শেষ পর্যন্ত লেহাজ উদ্দিন হয়ে উঠতে পারেন গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী।
জানা যায়, তুরাগ থানা আওয়ামীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্বা আলহাজ্ব মো, নাসির উদ্দিন একজন দলের পরীক্ষিত নেতা। তিনি ১৯৮৮ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত হরিরামপুর ইউনিয়নের সদস্য (মেম্বার) ছিলেন। সাবেক ইউপি আওয়ামীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন দুই বার। থানা আওয়ামীগের সিনিয়র সহসভাপতি ছিলেন। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) কাউন্সিল নির্বাচিত হন। তুরাগের নয়ানগর তাসলিমা বেগম বালিকা উচচ বিদ্যালয়ের সভাপতি, নয়ানগর দারুল উলুম উসমানিয়া মাদ্রাসার মোতাওয়ালী সহ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ডিএনসিসি ৫৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল বীরমুক্তিযোদ্বা আলহাজ মো নাসির উদ্দিন।
অপরদিকে, বীরমুক্তিযোদ্বা আলহাজ্ব মো, নাসির উদ্দিন ও প্রয়াত আবুল হাসিম চেয়ারম্যানের পরিবার থেকে এবার তুরাগ থানা আওয়ামীগের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন দক্ষ সংগঠক, সাবেক ছাত্রনেতা তারুণ্যের অহংকার, ত্যাগী, তৃণমূল পর্যায়ের দলের পরীক্ষিত নেতা এবং প্রয়াত সভাপতির অত্যন্ত আস্থাভাজন আলহাজ্ব মো, সাদেকুর রহমান। সাদেকুর রহমান তুরাগ থানা আওয়ামীগ স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি, একজন দক্ষ সংগঠক এবং রাজপথ আন্দোলন সংগ্রামের প্রথম সারির লড়াকু মুজিব সৈনিক হিসেবে এরই মধ্যে সবার নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছেন। পাশাপাশি তিনি তুরাগ থানা আওয়ালী স্বেচ্ছায়সেবললীগের প্রতিষ্টাতা সভাপতি এবং হরিরামপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সফল সাধারন সম্পাদক ছিলেন।
এছাড়া নুরুল ইসলাম মোল্লা সুরুজ একজন তৃনমূলের নেতা। আওয়ামীগ স্বেচ্ছাসেবকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, বৃহত্তর উত্তরা থানা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের প্রতিষ্টাতা আহবায়ক, হরিরামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্টাতা সভাপতি, বৃহত্তর উত্তরা থানা ছাত্রলীগের প্রতিষ্টাতা সভাপতি এবং তুরাগের হরিরামপুর ইউনিয়ন ছাত্র-লীগের প্রতিষ্টাতা সভাপতি ছিলেন বলে নেতাকর্মী রা জানিয়েছেন।
এছাড়া একই থানার সাধারণ সম্পাদক পদে অনেকের নাম শোনা গেলেও সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমডি হালিম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাস্টার। এছাড়া প্রয়াত সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্বা আবুল হাসিম চেয়ারম্যানের পুত্র এবং মহানগর উত্তর আওয়ামীগের সদস্য মুহিবুল হাসান সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রার্থী হয়েছেন।
এছাড়া তুরাগের চারটি ওয়ার্ডে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আসতে প্রায় অর্ধশতাধিক নেতা বিভিন্নভাবে চেষ্টা-তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বলে শোনা যাচেছ। তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন ৫২নং ওয়ার্ডে আবদুল গনি, প্রায় ৪ হাজার হিন্দু অধ্যুষিত ভোটারের প্রতিনিধি হিসেবে রতন সরকার, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও মাদকবিরোধী আন্দোলনের নেতা রাইসুল ইসলাম লিটন, সাজেদুর রহমান, কামাল হোসেন ও সাবেক ছাত্র নেতা শফিকুল ইসলাম।
এদিকে, ৫৩নং ওয়ার্ডে সভাপতি প্রার্থী হয়েছে তুরাগ থানা আওয়ামীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিশিষ্ট সমাজ সেবক আলহাজ্ব মো, নাজিম উদ্দিন। ওয়ার্ড সভাপতি পদপ্রার্থী হিসেবে সর্বাধিক আলোচনায় রয়েছেন বিশিষ্ট সমাজসেবক, আওয়ামীগের একনিষ্ঠ মাঠ পর্যায়ের কর্মী, দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত পরিশ্রমি নেতা আলহাজ্ব মো, নাজিম উদ্দিন, সাবেক ইউপি মেম্বার ও আওয়ামী নেতা নুরুল ইসলাম নূরু মেম্বার, সাবেক ইউপি মেম্বার আলহাজ্ব মো, কফিল উদ্দিন (মেম্বার), তুরাগ থানা আওয়ামীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক জিয়াউল হক জামাল এবং সাবেক ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামীগের সভাপতি সভাপতি মো, মনসুর আহমেদ। ৫৪নং ওয়ার্ডে প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন, সাবেক ইউপি মেম্বার আবুল হোসেন প্রধানসহ অনেকের নাম শোনা যাচেছ।
তৃণমূলের দলীয় নেতা কর্মীরা জানান, এদের মধ্যে দলের হ্যাভিওয়েট প্রার্থী হলেন তুরাগ থানা আওয়ামীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব মো, নাজিম উদ্দিন। ইতিপূর্বে তিনি তুরাগ থানা আওয়ামীগের সাবেক সদস্য, ইউনিয়ন আওয়ামীগের সাবেক সদস্য ছিলেন। তুরাগ থানা কমিউনিটি পুলিশের সহসভাপতি এবং ফুলবাড়িয়া বাইতুল ফালা জামে মসজিদের প্রতিষ্টাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি তুরাগের ফুলবাড়িয়া এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার গরিব, মেহনতি, এতিম, অসহায়, সুস্হ, বয়স্ক, বিধবা নারীদের ঈদ ও করোনাভাইরাস মহামারি সময়ে স্হানীয় এমপি মহোদয়ের উপস্হিতে সাহার্য্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ত্রাণসামগ্রী বিতরন করেছেন।
জানা গেছে, মো, মুনসুর আহমেদ একজন দলের তৃণমূল ও ত্যাগী নেতা। সে ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। এছাড়া সে ডিয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং গাজীপুরের টঙ্গী নিউ মন্নু ফাইন কটন মিলস লি, এর পরিচালক বলে শোনা গেছে।
একটি নির্ভরযোগ্য দলীয় সূত্র বলছে, এবারের সম্মেলনে যারা প্রার্থী হয়েছে তাদের বিগত দিনের দলীয় পারফরমেন্স, বিগত বিএনপি- জামাত জোট সরকারের আমলে হামলা মামলা, জেল, জুলুম, দলীয় কর্মকাণ্ড, সামাজিক কর্মকাণ্ড, যারা রাজ পথে মিটিং মিছিলে ছিলেন সেই সব ত্যাগী, তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদেরকে দল মূল্যায়ন করবে।
সূত্র আরও বলছে, কোন হাইব্রিট, চাঁদাবাজ, ভূমিদস্যু ও সুবিধাবাদীরা এবার পদপদবি থেকে বাদ পড়ছেন। এমনটি মনে করছেন দলের হাইকমান্ড এবং শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্বা শেখ মো, বজলুর রহমান দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে এই প্রতিবেদককে বলেন, টাকা দিয়ে দলের পদ পদবি কেনার কোন সুযোগ নেই। যারা টাকার বিনিময়ে পদ বেঁচাকেনা করে তারা প্রকৃত পক্ষে আওয়ামীগের নেতা নয়। তারা হল সুবিধাবাদি নেতা। তাদের জায়গা দলে হবে না।
তিনি বলেন, এবার দলের নেতাদের খাটি সোনা ঝাঁলাই করে রাজপথের পরীক্ষিত, ত্যাগী, প্রকৃত ও তৃণমূলের নেতাদের খোঁজা মূল্যায়ন করা হবে।
এ নিয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য এবং মহানগর উত্তর আওয়ামীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব মোহাম্মদ হাবিব হাসান এই প্রতিবেদককে বলেন, কারোর পছন্দ ও অপছন্দের বিষয় নেই। এছাড়া পকেট কমিটিরও কোন সুযোগ নেই। শুধু বিএনপি- জামাত জোট সরকারের আমলে রাজপথে আন্দোলন লড়াই-সংগ্রামের মাঠে ছিল, হামলা হামলা, জেল জুলুম, হুলিয়া, ত্যাগী, তৃনমূল পর্যায়ের পরীক্ষিত কর্মীদের মূল্যায়ন করা হবে।
তিনি আরও জানান, কোন চাঁদাবাজ, ধান্দাবাজ, ভুমিদস্যু, হাইব্রিট, সুবিধাবাদী ও বিদ্রোহীদের কমিটিতে নেয়া হবে না। তাদের দলে কোন জায়গা নেই।
Dhaka, Bangladesh রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:43 AM |
Zuhr | 12:07 PM |
Asr | 3:10 PM |
Magrib | 5:31 PM |
Isha | 6:50 PM |