আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ৪:৩০
মনির হোসেন জীবন- রাজধানীর তুরাগের বাউনিয়া আব্দুল জলিল উচ্চ বিদ্যালয়ের কর্মরত সহকারী ও সিনিয়র শিক্ষকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের (পিএফ) বিপুল পরিমান টাকা স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ ও অফিস সহকারী নুরুল ইসলাম গাজী আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষকদের পক্ষে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. আলমাছ উদ্দিন। এছাড়াও, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, জেলা প্রশাসক, দুর্নীতি দমন কমিশন, জেলা শিক্ষা অফিসার, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (ঢাকা অঞ্চল) ও ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্যের বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা। খবর এলাকাবাসি, ভুক্তভোগী ও বিভিন্ন তথ্য সূত্রের।
জানা গেছে, ভুক্তভোগী শিক্ষকরা হলেন, সিনিয়র শিক্ষক আলমাছ উদ্দিন, সিনিয়র শিক্ষিকা তাসলিমা আক্তার, সিনিয়র শিক্ষক সামসুল হক, সিনিয়র শিক্ষিকা ফারজানা, সহকারী শিক্ষক ফারুক হোসেন, সহকারী শিক্ষক আতিকুর রহমান, সহকারী শিক্ষিকা সাহানাজ আক্তার, সহকারী শিক্ষিকা শামীমা আক্তারসহ অন্যরা এই অভিযোগ করেন।
এদিকে, ভুক্তভোগী সিনিয়র শিক্ষক মো. আলমাছ উদ্দিন জানান, ‘বাউনিয়া আব্দুল জলিল উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ বিদ্যালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর অফিস সহকারী নুরুল ইসলাম গাজির সহযোগিতায় ২০১৪ সাল থেকে দুর্নীতি শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি সকল শিক্ষক শিক্ষিকার ভবিষ্যৎ কল্যাণের জন্য জনতা ব্যাংকের উত্তরা কর্পোরেট শাখায় প্রভিডেন্ট ফান্ডের (পিএফ) জন্য প্রত্যেকের নামে পৃথক সঞ্চয় হিসাব খোলা হয়েছে। এই প্রফিডেন্ট ফান্ডে ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ছয় বছরে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা জমা না দিয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ ও অফিস সহকারী নুরুল ইসলাম গাজীর যোগসাজসে আত্মসাৎ করা হয়েছে। একজন শিক্ষক ব্যাংক স্টেটমেন্ট তুলে আনলে বিষয়টি প্রথমে ধরা পড়ে। এছাড়া সব মিলিয়ে টোটাল ৬৬ লাখ টাকা ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন এই প্রধান শিক্ষক।
অপরদিকে, স্কুলের সহকারী শিক্ষক মো. আতিকুর রহমান জানান, ‘প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা আত্মসাতের ঘটনাটি প্রকাশ পেলে আমরা বিষয়টি প্রধান শিক্ষকের নিকট জানতে চাই। তিনি এর কোন সদুত্তর তো দেনইনি বরং চাকরি হারানোর ভয় দেখান। গত এক বছর যাবৎ শিক্ষক ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের বেতনও আটকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা বকেয়া করেছেন তিনি। শুধু তাই নয় করোনাকালীন সময়ে বেতন ও আইডি কার্ড বাবদ প্রায় ১২শ স্টুডেন্টদের নিকট থেকে ১০০ টাকা করে মোট এক লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। শিক্ষার্থীদের এখনো আইডি কার্ড দেওয়া হয়নি এমনকি টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি। প্রতিবাদ করায় আমাকেও চাকরিচ্যুত করা হয়। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্যের হস্তক্ষেপে আমাকে আবার পুনর্বহাল করা হয়। তবে, হুমকি ধামকি এখনো থামেনি বলে অভিযোগ করে তিনি।
এদিকে, শিক্ষকদের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদের বক্তব্য জানতে বিদ্যালয়ের গেলে প্রতিবেদককে দেখে তিনি তার অফিস কক্ষ থেকে দৌঁড়ে বের হয়ে যেতে চান। এরপরও তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে মামলা দায়ের করেছেন শিক্ষকরা, মামলা যেহেতু চলমান এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। আমি জড়িত হলে আমার চাকরি যাবে সমস্যা কি? আমি প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা দিয়ে স্কুল সংস্কার করেছি। এখন ব্যাংকে কিছু কিছু পরিশোধ করা হচ্ছে শিক্ষকদের।
প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে তা দিয়ে বিদ্যালয় সংস্কার করা কতটা বৈধ জানতে চাইলে তিনি উত্তর না দিয়ে বলেন, ‘আমার মা অসুস্থ আমাকে গাজীপুর থেকে ঔষধ আনতে হবে। আপনারা পরে আসুন।
অপরদিকে, বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী নুরুল ইসলাম গাজী বলেন, এ অভিযোগের বিষয়টি আপনারা বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম ইকবাল স্যারকে জিজ্ঞেস করেন। আমি কিছু বলতে পারবো না। এরপর বিদ্যালয়ের বর্তমান এডহক কমিটির সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম ইকবাল মাস্টারের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোহাম্মদ হাবিব হাসান জানান, ‘বিষয়টি আমি এখনো অবগত নই। ঘটনার সত্যতা থাকলে এমন কর্মকাণ্ডের জন্য অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। আপনারা সত্য হলে ঘটনাটি তুলে ধরেন। তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। অন্যায়কারীকে কোন ছাড় দেয়া হবে না বলে তিনি হুশিয়ারি দেন।
Dhaka, Bangladesh রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:16 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:57 AM |
Asr | 2:57 PM |
Magrib | 5:17 PM |
Isha | 6:38 PM |