রক্তক্ষয়ী মহান মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনগুলোতে যুদ্ধের গতি-প্রকৃতিকে সম্পূর্ণ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য একটি স্বতন্ত্র বিমান বাহিনী গঠনের প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে অনুভূত হয়। আর এ লক্ষ্যে ১৯৭১ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার প্রদত্ত একটি অটার বিমান, একটি ড্যাকোটা বিমান ও একটি অ্যালুয়েট হেলিকপ্টার এবং বাঙালি বৈমানিক, কারিগরি পেশার বিমানসেনা ও বেসামরিক বৈমানিকসহ ৫৭ জন সদস্য নিয়ে ভারতের নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে ‘কিলো ফ্লাইট’ নামে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী যাত্রা শুরু করে। মহান মুক্তিযুদ্ধে ৫০টিরও অধিক বিমান অভিযান সাফল্যের সাথে পরিচালনার মাধ্যমে ‘কিলো ফ্লাইট’ আমাদের বিজয়কে ত্বরান্বিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল।
৫১ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে বিমান বাহিনী কর্তৃক ঢাকার আকাশে Mig-29 ও F-7 Series যুদ্ধ বিমান, C-130 পরিবহন বিমান এবং Mi-Series ও Bell-212 হেলিকপ্টারের সমন্বয়ে একটি মনোমুগ্ধকর ফ্লাইপাস্ট-এর আয়োজন করা হয়। কিলো ফ্লাইটের সদস্যগণের সাহসিকতাপূর্ণ অবদানকে সম্মান প্রদর্শনের অংশ হিসেবে বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান, বিবিপি, বিইউপি, এনএসডব্লিউসি, এফএডব্লিউসি, পিএসসি কিলো ফ্লাইটের অধিনায়ক ও সাবেক বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল সুলতান মাহমুদ, বীর উত্তম, এসিএসসি, (অবঃ)-এর বাসভবনে গিয়ে তাঁর সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করতঃ বিমান বাহিনীর সকল সদস্যের পক্ষ থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। এছাড়াও বিমান বাহিনীর ঘাঁটি, ইউনিট ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত ব্যানএয়ার কন্টিনজেন্টসমূহে প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়।
দিবসের কর্মসূচির অংশ হিসেবে এদিন সন্ধ্যায় একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং আতশবাজির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান, বিবিপি, বিইউপি, এনএসডব্লিউসি, এফএডব্লিউসি, পিএসসি। এসময় মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রতিষ্ঠার উপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘কিলো ফ্লাইট’ প্রদর্শনের মাধ্যমে মহান মক্তিযুদ্ধে বিমান বাহিনী সদস্যগণের অবদান, আত্মত্যাগ, স্বাধীনতার চেতনা এবং দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে কিলো ফ্লাইটের বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রাক্তন বিমান বাহিনী প্রধানগণ, কেবিনেট সেক্রেটারী, নৌবাহিনী প্রধান, বিমান সদরের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারগণ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ, উর্ধ্বতন সামরিক-অসামরিক কর্মকর্তাগণ এবং ঢাকাস্থ বিমান বাহিনীর পরিবারের সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।