আজ রবিবার | ২৮শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১২ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১২ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১:০৬
ডেস্কঃ- লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ডক্টর কর্নেল অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনা ভোটে নির্বাচিত নিশি রাতের সরকারের পক্ষে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করার সক্ষমতা নাই। শেখ হাসিনা অবৈধ পন্থায় জোর জবরদস্তি করে ১৪ বৎসর দেশ শাসন করছেন। আজ আমরা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে, যুব সমাজের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। তাকে বলবো দয়া করে এখন ক্ষান্ত হন, প্রতিশোধের রাজনীতি চিরদিনের জন্য পরিহার করে সকল প্রকার ক্ষমতার লোভ লালসা পরিহার করে, মন্যুষত্বের খাতিরে এবং সর্বোপরি অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য যতদ্রুত সম্ভব সৎ, শিক্ষিত, দেশপ্রেমিক, নিষ্ঠাবান এবং দেশের মানুষের আস্থাভাজন ব্যক্তিদের দ্বারা গঠিত একটি জাতীয় সরকারের কাছে স্বসম্মানে ক্ষমতা হস্তান্তর করে প্রস্তান করুন। এটাই হবে রাজনৈতিক পরিপক্কতা এবং বুদ্ধিমানের কাজ। মনে রাখতে হবে, দেওয়ালে মাথা ঠুকলে দেওয়াল ফাটে না, ফাটে মাথা।
বৃহস্পতিবার বেলা এগারোটায় রাজধানীর পূর্ব পান্থপথ এলডিপির দলীয় কার্যালয়ে বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থির পরিস্থিতিতে করণীয় শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
কর্নেল অলি বলেন, বর্তমান নিশিরাতের বিনা ভোটে, প্রশাসন দ্বারা নির্বাচিত অবৈধ সরকারের- সীমাহীন অদক্ষতা, লাগামহীন দুর্নীতি, জবাবদিহিহীনতা, সুশাসনের অভাব, মানবাধিকার লংঘন, সর্বত্র দলীয়করণ, বিচারহীনতা, এক দলীয় শাসন, খুন, গুমসহ সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতন, নিপীড়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংসকরণ এবং নিত্য পণ্যের দ্রব্য মূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতি এবং সর্বোপরি বেকার সমস্যার কারণে সরকার ক্রমশ একঘরে হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলায় বিএনপি’র ৭-৮ জন নেতাকে রাজনৈতিক কারণে হত্যা করেছে। কয়েকশত নতুন মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। হাজার হাজার বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের হয়রানী করার জন্য আসামী করা হয়েছে। পুলিশের নির্যাতনের কারণে অনেকে নিজ গৃহে ঘুমাতে পারে না। কিছু কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারী অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ এবং তাদের নিজের স্বার্থ রক্ষার জন্য, অবৈধ সরকারকে নগ্নভাবে অবৈধ কর্মকান্ডে সাহায্য করে যাচ্ছে। সরাসরি জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছে। যে বা যারা অতীতে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছিল, তাদের কিন্তু শেষ পরিণতি সুখকর হয়নি। সরকার তাদের বিভিন্ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে মুখোমুখি দাড় করিয়ে দিয়েছে। আপাতঃ দৃষ্টিতে মনে হয় খুব দ্রুত অর্থনৈতিক ধ্বংস এবং সংঘাতের দিকে জাতি এগিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় সরকারকে শুভ বুদ্ধির পরিচয় দিতে হবে। তাদের পক্ষে বর্তমান অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার সম্ভাবনা নাই এবং অন্যদিকে রক্তপাত এড়ানো সম্ভব হবে কিনা জানিনা।
কর্নেল অলি আরও বলেন, গত ১২ বৎসর যাবৎ গ্রামীণ অর্থনীতি সচল রাখার জন্য নিশি রাতের সরকার উল্লেখযোগ্য তেমন কোন প্রকল্প হাতে নেয় নাই। বর্তমানে মেগা প্রকল্পের সংখ্যা ২০টি। যা ১৮ কোটি মানুষ এবং দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের জন্য দারী বলা যায়। বর্তমানে সরকারের ঋণ ১৪০ বিলিয়ন ডলার। যা আগামী ৫ মাস পর থেকে পরিশোধ আরম্ভ হবে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রকল্পে উৎপাদন ব্যাতীত বিরাট অংকের সুদের টাকা পরিশোধ করতে হবে। যেমন- কয়েক মাস পর থেকে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য সুদ বাবদ ৫৬৫ মিলিয়ন ডলার হিসেবে পরিশোধ করতে হবে। সরকার সমর্থিত কুইক রেন্টাল প্ল্যান্টের জন্য উৎপাদন ব্যাতীত প্রতিমাসে কয়েকশত মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হয়। শুধুমাত্র মেঘা প্রকল্পের জন্য ব্যয় হবে ৭০ বিলিয়ন ডলার। ডলারের অভাবে নিয়মিত আমদানী রপ্তানী ব্যাহত হচ্ছে। অথচ ভারত থেকে নাচ গান করার জন্য ডলার খরচ করে নুরা ফতেকে আনা হয়েছে।
রাশিয়া, চীন এবং জাপান থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের বিপরীতে ৪৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের অহেতুক সময় বৃদ্ধি, অদক্ষতা এবং দুর্নীতির কারণে ক্রমাগতভাবে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শুধুমাত্র আমদানীর জন্য প্রতি মাসে গড়ে ৭ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হচ্ছে। এছাড়াও ২০২৩ এবং ২০২৪ সাল হতে ঋণের কিস্তি নিয়মিত পরিশোধ করতে হবে। অথচ রিজার্ভে এই টাকার কোন সংস্থান নাই। সরকারী অফিসসমূহে ঘুষ ব্যাতীত কোন কাজ সম্পাদন সম্ভব নয়। চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী। সর্বোপরি মনুষত্ব বিলোপ পেয়েছে। অর্ধমীদের কাজ থেকে ভাল কিছু আশা করাটা বোকামী।
দুর্নীতি এবং টাকা পাচারের কারণে সমাজের অবকাঠামো ভেঙ্গে পড়েছে। স্বচ্চতা ও জবাবদিহিতা না থাকার কারণে বর্তমান সংকট সৃষ্টি হয়েছে এবং রিজার্ভ দ্রুত কমে যাচ্ছে। দেশ বিদেশের কেউ এই সরকারের উপর আস্থা রাখতে পারেছে না। সুতরাং কোন অবস্থাতেই বর্তমান সরকারের পক্ষে এই সংকট থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য ডক্টর নেয়ামূল বশির, ডক্টর আওরঙ্গজেব বেলাল, এ্যাড. এসএম মোর্শেদ, এ্যাড. খায়রুল কবির পাঠান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Dhaka, Bangladesh শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:43 AM |
Zuhr | 12:06 PM |
Asr | 3:09 PM |
Magrib | 5:30 PM |
Isha | 6:50 PM |