আজ মঙ্গলবার | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | ভোর ৫:৫৪
চক্রের সদস্য সংখ্যা ডজনখানেক। প্রত্যেকের আলাদা কাজ ছিল। তারা সবাই যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশে মানবপাচারে জড়িত। এজন্য তারা বিভিন্ন দালালদের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে যেতে আগ্রহীদের সঙ্গে চুক্তি করতো। দেশভেদে টাকার পরিমাণ কমবেশি হতো। এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকায় চুক্তি হয়। আগ্রহীদের কোনো দেশে ভ্রমণ করার অভিজ্ঞতা না থাকলেও সমস্যা হতো না। কারণ চুক্তির পর বিভিন্ন দেশের জাল সিল তৈরি করে পাসপোর্টে লাগিয়ে দেয়া হয়। পাশাপাশি পাসপোর্টে বিভিন্ন দেশের ইমিগ্রেশনের ইন ও আউট সিলও থাকে। পরে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেতে আবেদন করা হয় মার্কিন দূতাবাসে।
দূতাবাস যাচাই বাছাই করে প্রতারণার বিষয়টি ধরতে পারে। আবেদন রিজেক্ট করে দেয়। যদিও এর আগেই চক্রের সদস্যরা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় বড় অঙ্কের টাকা। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশে পাঠানোর নাম করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রের সদস্যরা।
ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের গুলশান থানার এক মামলায় জালিয়াতি চক্রের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ (উত্তর)। সিলেট, শরীয়তপুর ও ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- ফেরদৌস আহমেদ (৩৯), জাহিদুল ইসলাম (৩২), মোহাম্মদ ফরিদ আলী (৫০) ও মো. আক্তার হোসেন (৪২)। এদের মধ্যে ফেরদৌস নবম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে দর্জির কাজ করতো। এ ছাড়া জাহিদুল বিবিএ, ফরিদ ৮ম শ্রেণি ও আক্তার এলএলবি পাস করে বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িত ছিল। তদন্ত সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, ফেরদৌস আহম্মেদ গত বছরের ৬ই ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার জন্য ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসে পাসপোর্ট জমা দেন। তার পাসপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, পাসপোর্টে নেপাল, মালদ্বীপ, ইন্দোনেশিয়া এবং ব্রুনাইয়ে ভ্রমণের যে ভিসার সিলগুলো দেয়া হয়েছে সেগুলো জাল। ফেরদৌস একটি এজেন্সির মাধ্যমে তার পাসপোর্টে ভিসার প্রসেসিং করেছিলেন। একইভাবে জাহিদুল ইসলাম গত বছরের ২৯শে নভেম্বর একই দেশের ভিসার জন্য আবেদন করে পাসপোর্ট জমা দেন।
তার পাসপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায় পাসপোর্টে থাকা থাইল্যান্ড ও চীনের যে ভিসার সিল দেয়া আছে সেগুলো জাল। একইভাবে ৫ই ডিসেম্বর মোহাম্মদ ফরিদ আলীর জমা দেয়া পাসপোর্টে দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, সিঙ্গাপুর, মালেয়শিয়া, ভিয়েতনামের ভিসার জাল সিল রয়েছে। তিনিও একটি এজেন্সি থেকে তার ভিসা প্রসেসিং করেন। তদন্ত কর্মকর্তাদের মতে, তারা ৩ জনই প্রতারণা করে ভিসা পেয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অভিবাসনের পাঁয়তারা করছিল। জালিয়াতির বিষয়টি বুঝতে পেরে মার্কিন দূতাবাস মামলা করে। সাইবারের কর্মকর্তারা বলেন, আসামিরা অবৈধভাবে মার্কিন ভিসা নেয়ার জন্য ট্রাভেলস এজেন্সির মাধ্যমে যে পাঁয়তারা করছিল সেটি তারা স্বীকার করেছে। ডিবি সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ- পুলিশ কমিশনার জুনায়েদ আলম সরকার মানবজমিনকে বলেন, ফেরদৌস, জাহিদুল ও ফরিদ আলী আক্তার ট্র্যাভেলসের আক্তার হোসেন ও আরেক ব্যক্তির সঙ্গে পরস্পর যোগসাজশ করে বিভিন্ন দেশের জাল ভিসা ও সিল নিজেরাই তৈরি করে পাসপোর্টে ব্যবহার করেছে। চক্রটি গত ৫ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাওয়ার জন্য জালিয়াতি করে আসছিল। তাদের প্রতারণার শিকার হয়েছে অনেকেই। দূতাবাস ভিসার জন্য আবেদন করা বিভিন্ন ব্যক্তিদের পাসপোর্ট যাচাই বাছাই করে তাদের প্রতারণার বিষয়টি ধরতে পারে। আমরা এই চক্রের আরও অনেক সদস্যকে গ্রেপ্তারের অভিযান চালাচ্ছি। তারা গা ঢাকা দিয়ে আছে। তিনি বলেন, পাসপোর্টে জাল ভিসা বা জাল সিল ব্যবহার করা এক ধরনের অপরাধ। এ ছাড়া শুধুমাত্র বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করলেই যুক্তরাষ্ট্রের ভিসাপ্রাপ্তি নিশ্চিত হয় না। ভিসার জন্য সকল সঠিক তথ্য উপস্থাপন করতে হয়।সূত্র:মানবজমিন
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |