আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ৯:২২
মধ্যরাত থেকে সিলেটের একটি সশস্ত্র মহড়ার ভিডিও ভাসছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। গতকাল সকালের মধ্যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। এ নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে সিলেটে। এখন ভোটে সরগরম সিলেট। সিটিতে নির্বাচন চলছে। ভোটের মাঠে এই ভিডিওটি রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সিসিটিভিতে ধারণ করা হয় ভিডিওটি। এতে মহড়া দেয়া লোকগুলোর মুখবয়বও পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি ৫৭ সেকেন্ডের। সেখানে দেখা গেছে; সশস্ত্র অবস্থায় ৫টি মোটরসাইকেলে করে ১৪-১৫ জন লোক একটি বাসার সামনে গিয়ে মহড়া দিচ্ছে। একটি মোটরসাইকেলে বসা ৩ যুবকের মধ্যখানে বসা যুবক অস্ত্র তাক করে আছে দরোজা বন্ধ থাকা একটি বাসার দিকে।ভিডিওটি নগরের আলোচিত ৭নং ওয়ার্ডের।
এ ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খান। তিনি মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী। সিসিটিভি’র ওই ফুটেজে দেখা গেছে; মহড়ার সময় কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খান একটি মোটরসাইকেলে বসা রয়েছেন। নগরীর নুরানী দীঘিরপাড়ের নুরানী ১৩/১৩ বাসার সামনে পর্যন্ত গিয়ে ওই বাসা টার্গেট করে মহড়া দিয়ে তারা চলে এসেছেন।
এ নিয়ে গতকাল শুক্রবার অনুসন্ধান করেছে মানবজমিন। মহড়া, ভিডি এবং পেছনের ঘটনা উঠে এসেছে অনুসন্ধানে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মহড়াটি হয়েছে গত ৬ই জুন সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে। অনেকেই মহড়া সম্পর্কে জানতেন না। তবে সিসিটিভি’র ফুটেজে মহড়া এবং অস্ত্র তাক করে রাখার দৃশ্য ধরা পড়ে। ৭নং ওয়ার্ডে এবার কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন ৩ জন। এরা হচ্ছেন- আফতাব হোসেন খান, সাঈদ মো. আব্দুল্লাহ ও মো. জাহিদ খান সায়েক।
এবারের নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ধরা হচ্ছে আফতাব ও সাঈদ আব্দুল্লাহকে। ফলে এই দুই প্রার্থীর সমর্থকরা প্রচারণা শুরুর দিন থেকে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন। ৫ই জুন রাতে নগরের জালালাবাদ আবাসিক এলাকায় ঘটে একটি ঘটনা। আফতাবের কর্মী ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের অর্থ সম্পাদক শাহ নূর আলমকে প্রচারণার সময় নির্মম নির্যাতন করা হয়। এতে শাহনূরের পা ভেঙে যায়। শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম রয়েছে। ওই ঘটনায় গুরুতর আহত শাহনূর এখনো সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
আফতাব হোসেন খান ঘটনার দিন রাতেই অভিযোগ করেন, প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক শিবির নেতা ও বর্তমান জামায়াত নেতা প্রার্থী সাঈদ আব্দুল্লাহ’র সমর্থকরা ওই সময় জালালাবাদ এলাকায় সশস্ত্র মহড়া দেয়। তারা পিঠে ব্যাগ নিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। একপর্যায়ে শাহনূরকে পিটিয়ে আহত করে। এ ঘটনার পর স্থানীয়রা রাস্তা ব্যারিকেড দিলে তিনি ও এয়ারপোর্ট থানার ওসি গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারেরও আশ্বাস দেন। এদিকে সাঈদ মো. আব্দুল্লাহ জানিয়েছেন, ওই রাতের ঘটনা কে বা কারা ঘটিয়েছে তিনি জানেন না। কারণ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ ঘরানার দু’প্রার্থী প্রচারণার প্রথমদিন থেকে মুখোমুখি রয়েছেন।
ওই ঘটনার জের ধরে ৬ই জুন সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে তার বাসার গেটের সামনে কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খানের নেতৃৃত্বে সশস্ত্র মহড়া দেয়া হয়। এ সময় আমরা বাসার ভেতরে আতঙ্কে ছিলাম। আফতাবের নেতৃত্বে থাকা সশস্ত্র যুবকরা তার বাসার দিকে অস্ত্র তাক করে রাখে। পরবর্তীতে তার বাসার সিসিটিভি’র ফুটেজ তল্লাশি করে মহড়ার দৃশ্য দেখা গেছে।
এ ঘটনার পর থেকে তিনি প্রচারণা ছেড়ে ঘরবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। শাহনূরের ওপর হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে তার সহকর্মীরা ওয়ার্ডের ভেতরে মহড়া দিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। সাঈদ আব্দুল্লাহ জানান, এ ঘটনার পর প্রথমে আমি এয়ারপোর্ট থানার ওসি তদন্তকে মোবাইল ফোনে ঘটনাটি জানালেও তিনি কর্ণপাত করেননি। পরে নির্বাচন কমিশনের কাছেও মৌখিক অভিযোগ দিলে কোনো লাভ হয়নি। এ ব্যাপারে গতকাল তিনি নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তার অভিযোগ নির্বাচনী কর্মকর্তারা গ্রহণ করেছেন।
তিনি জানান, তার ওয়ার্ডে ২১ হাজার ভোটার; সবাই এখন আতঙ্কিত। সশস্ত্র মহড়ার কারণে মানুষ ঘরবন্দি অবস্থায় সময় কাটাচ্ছেন। তবে কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন খান সশস্ত্র মহড়া দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, ৬ই জুন তিনি ওই এলাকায় যাননি। যে ফুটেজ দেখা যাচ্ছে, সেটি জোড়া লাগানো। আমার জনপ্রিয়তায় ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ভিডিও ফুটেজটি তৈরি করে ভাইরাল করেছে। এটা ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয় বলে জানান এবং এ নিয়ে ওয়ার্ডের জনগণকে বিভ্রান্ত না হতেও আহ্বান জানান তিনি।
ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ভাইরাল করা এ ভিডিও তিনি পর্যবেক্ষণ করছেন। এ ব্যাপারে আইনি উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি। এয়ারপোর্ট থানার ওসি মো. মঈন উদ্দিন গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন, শাহনূরের ওপর হামলা ও মহড়ার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। দুটি ঘটনার তদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |