আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | দুপুর ২:১৪
মনির হোসেন জীবন – হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাস্টমস’র (ভল্ট) গুদাম থেকে বিপুল পরিমান সোনা চুরির হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ওই ভল্ড থেকে কতটুকু সোনা চুরি হয়েছে তা এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি ঢাকা কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তারা। তবে, অনুমান করা হচ্ছে, গুদাম থেকে চুরি হওয়া সোনার পরিমাণ প্রায় ৫৫ কেজি হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচেছ।
জানা যায়, ভল্ড থেকে চুরি হওয়া সোনার মধ্যে সোনার বার ও সোনার বিভিন্ন অলংকার আছে । যার বর্তমান আনুমানিক বাজার প্রায় ৪৭ কোটি টাকা। এ সোনা চুরির ঘটনার এখন পর্যন্ত কোন হদিস খুঁজে পায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আজ রোববার দুপুরে বিমানবন্দরের সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। তবে, এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু বলছে না কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এ সোনা চুরির ঘটনার পর বেশ নড়ে চড়ে বসেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ ও অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সোনা চুরির ঘটনায় তদন্তে নেমেছেন এবং তারা বিপুল পরিমান সোনা উদ্বারের জন্য কাজ করে যাচেছ।
সূত্র আরো জানিয়েছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভেতরে ‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড’ অর্থাৎ হারিয়ে যাওয়া ও খুঁজে পাওয়া পণ্য রাখার স্থানের পাশেই রয়েছে কাস্টমসের গুদাম। বিমানবন্দরে কাস্টমসহ বিভিন্ন এজেন্সির জব্দ করা মূল্যবান সামগ্রী জমা থাকে এই গুদামে। সেখানকার ৫৫ কেজি সোনারই সন্ধান মিলছে না।
বিমানবন্দরের একাধিক সূত্র গুলো আরো বলছে, সোনার অলংকার ও সোনার বার মিলিয়ে প্রায় ৫৫ কেজি সোনা কাস্টমসের গুদামের একটি আলমারিতে বাক্সের মধ্যে সংরক্ষিত ছিল। সেই বাক্সটিই চুরি হয়ে গেছে। আর কাস্টমসের গুদামের আলমারি ভেঙে চুরি করা হয়েছে বাক্সটি। কীভাবে এই সোনা চুরি হয়েছে, তা জানতেই এখন বিমানবন্দরে বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে।
এদিকে, শাহজালাল বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, সোনা চুরির বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ার পর থেকেই ঢাকা কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দরে কাস্টমসের গুদামে রক্ষিত সব সোনার অলংকার ও সোনার বারের হিসাব করছে।
কাস্টমস হাউসের একাধিক কর্মকর্তা জানান, বেশ কিছুদিন ধরে জব্দকৃত মালামাল গুদাম থেকে চুরি হচ্ছে— এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা কাস্টমস হাউস কাজ করছিল। শুক্রবার ও শনিবার কাস্টমস হাউজের আলাদা দু’টি টিম গুদামের মালামালের তালিকা প্রস্তুত করা এবং গুদাম পরিষ্কারের কাজ শুরু করে। শনিবার একটি টিম বাইরে থেকে তালা অক্ষত থাকলেও ভেতরের লকার ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। এরপর সন্দেহ সত্যি বলে প্রমাণিত হয়। গুদামের মালামালের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। দ্রুতই চুরি হওয়া প্রকৃত মালামাল সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য বের করা সম্ভব হবে।
তারা আরও বলেন, আমাদের ধারণা চোর নিজেদের ভেতরেই রয়েছে। তাদের শনাক্তে কাজ করছে একটি যৌথ টিম। এর পাশাপাশি থানা–পুলিশ, বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নসহ (এপিবিএন) অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন তদন্ত শুরু করেছে।
আজ রোববার ঢাকা কাস্টমস হাউসের কমিশনার নুরুল হুদা আজাদ সাংবাদিকদের জানান, কাস্টমস হাউসের গুদাম থেকে সোনা চুরি হওয়ার বিষয়টি মোটামুটিভাবে আমরা নিশ্চিত। একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের কাজ করছে বলে আমরা অনুমান করছি।
তিনি জানান, কাস্টমস হাউস ও সিআইডিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকটি টিম দোষীদের শনাক্ত করতে ইতিমধ্যে কাজ করছে। যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের বিরুদ্ধে মামলাসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন বাসসকে জানান, এটি কোনো সাধারণ ভোল্ট না। সাধারণ কোনো ব্যক্তি বা চোরের চুরি করা সম্ভব নয়। এ ছাড়া ওই জায়গাটি সম্পূর্ণ সংরক্ষিত এলাকা। এ ছাড়া পুরো এলাকাটি সিসি ক্যামেরার ধারা সবসময় নজরদারিতে থাকে।
এপিবিএন পুলিশের একজন উধর্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, শাহজালালে সোনা চুরির বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না, এটি জানতে হলে কাস্টমস এর সাথে যোগাযোগ করুন। তারা এব্যাপারে ভাল বলতে এবং ব্যাখ্যা দিতে পারবেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আজিজুল হক মিঞা জানান, ‘কাস্টমস হাউসের ভোল্ট থেকে স্বর্ণ চুরির ঘটনায় এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে, সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমি চুরির ঘটনাটি শুনেছি। অভিযোগ পাওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, এ ব্যাপারে ঢাকা কাস্টমস হাউসের উপ-পরিচালক ফাহমিদা মেহজাবিন, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সেগুপ্তা মেহজাবিন, রাজস্ব কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে কোন রেসপন্ড পাওয়া যায়নি।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |