আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ৯:২০
ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নামে ইস্যুকৃত বিশেষ প্রাধিকারভুক্ত লাল পাসপোর্ট বাতিল এবং সংরক্ষিত ব্যক্তিগত তথ্য (ডাটা) জব্দ করা হয়েছে।
এছাড়া বাতিল পাসপোর্ট ব্যবহার করে তারা যাতে বাংলাদেশ ত্যাগ বা তৃতীয় কোনো দেশ ভ্রমণ করতে না পারেন সে বিষয়ে কঠোর নজরদারির নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকার পতনের পর শেখ হাসিনার মন্ত্রী-এমপি ছাড়াও ১৪ দলীয় জোট নেতাদের পাসপোর্টও বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের আশীর্বাদপুষ্ট সাবেক সচিব, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত বিভিন্ন সংস্থা প্রধান ও পদত্যাগকারী ভিসিদের পাসপোর্ট নবায়নে এখন ব্যাপকভাবে কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে।
এদের মধ্যে যারা লাল পাসপোর্ট জমা দিয়ে সাধারণ পাসপোর্টের আবেদন করেছেন তাদের ক্ষেত্রে অন্তত দুটি গোয়েন্দা সংস্থার ছাড়পত্র প্রয়োজন হবে বলে শর্ত আরোপ করা হয়েছ।
সূত্র জানায়, তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের পাসপোর্ট বাতিলের পর কম্পিউটার সিস্টেমে সংরক্ষিত তাদের ব্যক্তিগত তথ্যও (ডাটা) জব্দ করা হয়েছে। ফলে এদের মধ্যে কেউ পাসপোর্ট প্রতিস্থাপন বা নবায়নের চেষ্টা করলে আবেদন স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রত্যাখ্যান হচ্ছে। এতে দালাল চক্রের মাধ্যমে বা অন্য কোনোভাবে পেছন দরজা দিয়ে কেউ পাসপোর্ট নেওয়ার চেষ্টা করলে লাভ হবে না।
পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ভারতে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট রয়েছে। তার পাসপোর্ট নম্বর ডি০০০১০০১০। দেশে ই-পাসপোর্ট সেবা চালুর পরপরই তিনি তার পুরোনো এমআরপি (মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট) বদল করেন। ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি ৬৪ পাতার একটি ই-পাসপোর্ট নেন তিনি। তবে কূটনৈতিক পাসপোর্ট ৫ বছর মেয়াদি হলেও নিয়ম ভেঙে হাসিনাকে ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট দেওয়া হয়।
পাসপোর্ট অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, শেখ হাসিনার হাতে বৈধ পাসপোর্ট না থাকায় ভারতের বাইরে অন্য কোনো দেশে যাওয়া তার পক্ষে কঠিন। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশ থেকে আগে তার অনুকূলে বৈধ ট্রাভেল পাশ ইস্যু করতে হবে। অন্যথায় তিনি ভ্রমণের অযোগ্য হিসাবে বিবেচিত হবেন। এছাড়া পাসপোর্ট বাতিল হওয়ায় হাসিনার পক্ষে তৃতীয় কোনো দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়া কঠিন।
পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ওই কর্মকর্তা জানান, মন্ত্রী-এমপিরা আত্মগোপনে থাকলেও তারা নিজেদের ও পরিবারের সদস্যদের পাসপোর্ট নবায়নের চেষ্টা করছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টির বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা পাসপোর্ট নিয়ে জটিলতায় পড়েছেন। বিশেষ করে তারা লাল পাসপোর্ট সমর্পণ করে সাধারণ পাসপোর্ট নেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু সফল হননি।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্বৈত নাগরিকত্ব বা অন্য কোনোভাবে কেউ বিদেশি পাসপোর্ট নিয়ে থাকলে তার পক্ষে দেশ ত্যাগ এবং বিদেশ ভ্রমণ সহজ। কারণ ইমিগ্রেশনে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার কাছে দেশীয় পাসপোর্টের তথ্য থাকলেও বিদেশি পাসপোর্টের তথ্য থাকে না। ফলে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্য ছাড়া বিদেশি পাসপোর্টধারীদের আটকানো কঠিন।
এছাড়া সিঙ্গাপুর, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, হংকং ও ফ্রান্সসহ বেশ কয়েকটি দেশের পাসপোর্টধারীরা বিশ্বের যে কোনো দেশে অবাধ যাতায়াতের সুযোগ পেয়ে থাকেন। আগে থেকে তাদের ভিসা নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
প্রাধিকার তালিকা অনুযায়ী সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও কূটনৈতিক ছাড়াও অন্তত ১৯টি ক্যাটাগরিতে লাল পাসপোর্ট দেওয়া হয়। এর মধ্যে মন্ত্রী পদমর্যাদায় নিযুক্ত ব্যক্তি, সিটি করপোরেশনের মেয়র, সচিব, সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল, আইজিপি ও তাদের স্বামী বা স্ত্রী বিশেষ সুবিধার লাল পাসপোর্ট পেয়ে থাকেন। সংশ্লিষ্টদের কেউ ইচ্ছে করলে লাল পাসপোর্টের বদলে সাধারণ পাসপোর্টও নিতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে তাকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের লিখিতভাবে পূর্ব-অনুমোদন নিতে হয়।
পাসপোর্ট অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশে কূটনৈতিক মর্যাদার লাল পাসপোর্ট কতজনকে দেওয়া হয়েছে তার সঠিক হিসাব পাসপোর্ট অধিদপ্তর বা অন্য কোনো একক সংস্থার কাছে নেই।
কারণ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও পররাষ্ট্রসহ একাধিক মন্ত্রণালয় থেকে কূটনৈতিক পাসপোর্ট ইস্যুর নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে বুকলেট প্রিন্টিংয়ের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় পাসপোর্ট অধিদপ্তর। তবে দেশে লাল পাসপোর্টধারীর সংখ্যা দেড় হাজারের কাছাকাছি হতে পারে।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |